খুলনা: ঈদুল আজহায় সবচেয়ে বেশি চাহিদা হলো কোরবানির পশু। ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে খুলনা বিভাগের বিভিন্ন স্থানে খামারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে ৮ লাখ গবাদিপশু প্রস্তুত রয়েছে।
খুলনা বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, আসন্ন ঈদুল আজহায় খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় ৮ লাখ ৭৯ হাজার পশু কোরবানির সম্ভাবনা রয়েছে।
জানা গেছে, ভালো দামের আশায় খামারিরা কোরবানির বাজার ধরার জন্য পশু লালন-পালন করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেউ শখের বশে, কেউ বেকারত্বের অভিশাপ ঘোচাতে, কেউ সংসারে স্বচ্ছলতা আনতে এসব খামার গড়ে তুলছেন। খুলনা জেলার মধ্যে তেরখাদা, ফুলতলা, রূপসা, দিঘলিয়া ও ডুমুরিয়া উপজেলায় খামারের সংখ্যা বেশি। এসব এলাকার গ্রামে গ্রামে ঘুরে ও হাট থেকে পশু কেনা শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। ইতোমধ্যে জেলার বিভিন্ন হাটগুলোতে গরু ওঠতে শুরু হয়েছে। আসন্ন ঈদকে কেন্দ্র করে কোরবানির জন্য এখন থেকেই গরু কিনে মজুদ শুরু করেছেন তারা। কোরবানিতে গরু বাজারজাত করে ভালো আয় করতে পারেন তাই এখনই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
ডুমুরিয়ার গুটুদিয়া ইউনিয়নের পিঁপড়ামারি এলাকার বিসমিল্লাহ এগ্রোর ম্যানেজার মো. ইয়াছিন বলেন, আমাদের ফার্মে ৪০টি গরু রয়েছে। এসব গরুর পরিচর্যা করে ক্রেতার মনের মত করে তুলতে, সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। অনেকে ইতোমধ্যে ফার্মে এসে গরু কিনে এখানে রেখে যাচ্ছেন। কোরবানির সময় নিয়ে যাবেন। ভারতীয় পশু দেশে না ঢুকতে দিলে, ভালো দাম পাওয়ার আশা করছেন তিনি।
খামারিরা কোরবানির পশু বিক্রির জন্য, ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী প্রস্তুত করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। গরুকে মোটাতাজা করার জন্য কোন ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ বা ওষুধ খাওয়ানো হচ্ছে না বলে দাবি করেন খামারিরা। মাঠের সবুজ ঘাস কেটে খড়ের সঙ্গে মিশিয়ে, গরুকে খাওয়াচ্ছেন। আর পশুকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে খামারে রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা।
খুলনা বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরিচালক ডা. সুখেন্দু শেখর গায়েন বাংলানিউজকে বলেন, খামারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে খুলনা বিভাগে এবার ৮ লাখ ৭৯ হাজার ২৫১টি গবাদিপশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যার মধ্যে খুলনা জেলায় ৩৩ হাজার ৬০০টি, বাগেরহাট জেলায় ৩৫ হাজার ৮৪৮টি, সাতক্ষীরা জেলায় ৫২ হাজার ৬২৯টি, যশোর জেলায় ৫৩ হাজার ৬৯৬টি, ঝিলাইদহ জেলায় ১ লাখ ৬৯ হাজার ২৪১ টি, মাগুরা জেলায় ৩১ হাজার ৯৯৭টি, নড়াইল জেলায় ২৮ হাজার ৬৬৩টি, কুষ্টিয়ায় জেলায় ১ লাখ ৬০ হাজার ৫৭১ টি, চুয়াডাঙ্গা জেলায় ১ লাখ ২৫ হাজার ২১৮টি, মেহেরপুর জেলায় ১ লাখ ৮৭ হাজার ৭৮৬ টি গবাদি পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।
চাহিদার তুলনায় পশুর ঘাটতি আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত বছরের চেয়ে এবার গবাদি পশু একটু কম আছে। প্রাথমিক তথ্য মতে খুলনা জেলায় এবার ২৩ হাজার ৮৬৭টি পশু ঘাটতি আছে। সাতক্ষীরাতে ৪৩৪ টি পশু ঘাটতি আছে। তবে খুলনা বিভাগে কোরবানির পশুর যে চাহিদা রয়েছে তাতে প্রস্তুতকৃত পশু দিয়ে হয়ে যাবে।
চাহিদার তুলনায় স্থানীয় খামারগুলোতে গরু বেশি থাকায় এবার অন্য কোথাও থেকে খুলনা বিভাগে পশু আনতে হবে না বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৪ ঘণ্টা, জুন ০২, ২০২২
এমআরএম/এএটি