ঢাকা: চলতি বছরের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং বাণিজ্য ক্ষেত্রে বাধাগুলো দূর করার জন্য উজবেকিস্তানের একটি জয়েন্ট ওয়াকিং গ্রুপ গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে চলমান সমস্যাগুলো সমাধান করা হবে।
শুক্রবার ঢাকায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত বাংলাদেশ ও উজবেকিস্তানের মধ্যে ‘থার্ড ইন্টারগভার্মেন্টাল কমিশন মিটিং অন ট্রেড অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন বিটুইন বাংলাদেশ অ্যান্ড উজবেকিস্তান’ বিষয়ক সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে উজবেকিস্তান বরাবরই বাংলাদেশের পক্ষে কথা বলেছে, আগামীতেও এ সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। ডাবল টেক্সেশন পদ্ধতি উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা। এ বিষয়ে উজবেকিস্তান সরকার পদক্ষে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। আশা করা যায়, এ সমস্যারও সমাধান হবে। উজবেকিস্তান থেকে সার আমদানি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, উজবেকিস্তান বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে।
তিনি বলেন, উজবেকিস্তান বাংলাদেশের বন্ধু রাষ্ট্র। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে তাসখন্দ সফর করেছিলেন। উভয় দেশের মানুষের মধ্যে সংস্কৃতি ও ধর্মীয় বিষয়ে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। উজবেকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির অনেক সুযোগ রয়েছে। এ সুযোগকে আমরা কাজে লাগানোর জন্য ঢাকায় উজবেকিস্তানের একটি দূতাবাস স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছি, আশা করা যায় খুব কম সময়ের মধ্যে ইতিবাচক সারা পাওয়া যাবে। যোগাযোগ সহজ করতে উভয়দেশের মধ্যে আকাশ পথ চালুর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে,আশা করা যায় এ বিষয়ে আমরা ভালো কিছু করতে পারবো। তখন মাত্র সাড়ে চারঘণ্টায় ঢাকা থেকে উজবেকিস্তান যাওয়া যাবে। এখন অনেক ঘুড়ে প্রায় ১২ ঘণ্টা জার্নি করে সেখানে যেতে হয়।
মিটিং এ সাতটি বিষয়ের ওপর আলোচনা করা হয়, এগুলো হলো-উভয় দেশে মধ্যে বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক বিষয়, টেক্সটাইল এবং কটন সেক্টর, ফুড অ্যান্ড ফ্রুইটস সেক্টর, ফার্মাসিটিকেল সেক্টর, মিউচ্যুয়াল ট্রেড বেরিযার রিমুভ, মিউচুয়াল অ্যাট্রাকশন অব ফরেন ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট এবং ট্রান্সপোর্ট সেক্টরে সহযোগিতা বৃদ্ধি।
মিটিং শেষে একটি জয়েন্ট স্টেটমেন্ট ঘোষণা করা হয়। এতে বলা হয়, আলোচ্য বিষয়গুলোর ওপর উভয় পক্ষের মধ্যে আন্তরিক পরিবেশে আলোচনা করা হয়েছে। উভয় দেশের বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে পদক্ষেপ নিতে উভয় দেশ একমত হয়েছে।
মিটিং শেষে উভয় দেশের মধ্যে এ তৃতীয় সভায় কার্যবিবরণী স্বাক্ষর করা হয়।
মিটিং এ আগত উজবেকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী জামশেদ কাদজায়েভের নেতৃত্বে ২২জনের প্রতিনিধি দলে ছিলেন ট্রান্সপোর্ট মিনিস্টার ইখম মাকামোভ, ফাস্ট ডেপুটি মিনিস্টার অব ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ফরেন ট্রেড লাজিজ কদরাতোভ, ডেপুটি মিনিস্টার অব অ্যাগ্রিকালচার আলিসার সুকোরোভ, ডেপুটি মিনিস্টার অব ট্রান্সপোর্ট জাসুরবেক ছোরিব এবং বাংলাদেশ পক্ষে ১৫ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি। প্রতিনিধি দলে অন্যদের মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা) এর নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সাঈদুল ইসলাম, উজেকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জাহাঙ্গীর আলম ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালযের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩১ ঘণ্টা, ৩০ জুলাই, ২০২২
জিসিজি/এসআইএস