ঢাকা, শনিবার, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

উৎপাদন বাড়াতে ব্লকওয়াইজ পরিকল্পনা নিয়েছি: কৃষিমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০২২
উৎপাদন বাড়াতে ব্লকওয়াইজ পরিকল্পনা নিয়েছি: কৃষিমন্ত্রী কথা বলছেন কৃষিমন্ত্রী ডা. আবাদুর রাজ্জাক। 

ঢাকা: ফসলের উৎপাদন বাড়াতে কৃষি মন্ত্রণালয় এ বছর থেকে ব্লকওয়াইজ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ডা. আবাদুর রাজ্জাক।   

তিনি বলেন, দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে তিনটি করে ব্লক থাকবে।

প্রতি ব্লকে একজন করে ব্লক সুপারভাইজর বা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা থাকবেন। তাদেরকে জানতে হবে কোন ব্লকে কত ফসল আছে। পাশাপাশি আমাদের চাহিদার ভিত্তিতে সামনের বছর কোন ফসল বাড়ানোর প্রয়োজন বা বাড়াতে চাই সেটা তারা জানাবেন।

মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এ তথ্য জানিয়েছেন।

নিত্য পণ্যের মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় কী উদ্যোগ নিয়েছে জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী বলেন, এটি নিয়ে আমরা দীর্ঘদিন আলোচনা করেছি।  চাল আর গমের বিষয়ে আমি বলতে চাই, একনেক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীকেও আমি বলেছি, আমরা চাল আমদানি ওপেন করে দিয়েছি। কিন্তু সেভাবে চাল আসছে না। খুবই কম পরিমাণে চাল আসছে। তারপরও আমাদের নিজস্ব উৎপাদন দিয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ দাবি করে এটা আসলে সঠিক। আশ্বিন-কার্তিক মাসে বাংলাদেশে মঙ্গা হয়।  কিন্তু এবার দেশে খাদ্য সংকট হাহাকার নেই। একটু দাম বেশি। যারা নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ তাদের একটু কষ্ট হচ্ছে। ৯ শতাংশ মূল্যস্ফীতি এটা বিরাট প্রভাব আয়ের ওপর পড়েছে।

তিনি বলেন, নিত্যপণ্যের দাম বেশি সেখানে সরকার ভর্তুকি হিসাবে সোশ্যাল সেফটিনেটের আওতায় ১৫ লাখ পরিবারকে ১৫ টাকা কেজি দরে চাল দেওয়া হচ্ছে। টিসিবির মাধ্যমে আরও ৫০ লাখ পরিবারকে দেওয়া হচ্ছে। ওএমএস, বিজিএফ দেওয়া হচ্ছে। সার্বিকভাবে গরিবদের সরকারে পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হয়েছে। উৎপাদন করে বাজারজাত করার কাজ আমাদের। আর বিক্রির ব্যাপারটা মূলত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের। তারা আমদানি করে বাজারে ব্যালেন্স রাখে। আমাদের কাজটা সম্মেলিত দায়। আমরা সবমিলে সে কাজটি করছি।  আমি দায়িত্ব এড়াতে পারছি না। কৃষিমন্ত্রী হিসেবে উৎপাদন বাড়ানোর দায়িত্ব আমাদের। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন প্রতি ইঞ্চি জমিতে উৎপাদন বাড়াতে হবে।  

তিনি বলেন, পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি উর্বর ভূমি হলো আমাদের। আমাদের ভূমির ৬০ শতাংশ জমিতে আমরা আবাদ করি। একে খুব বেশি উৎপাদন বাড়ানো যাবে তা কিন্তু নয়। এজন্য প্রযুক্তি দিয়ে নতুন উন্নত জাতের ফসল আনতে হবে এবং উৎপাদন বাড়াতে হবে।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, আজকে একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি, বাংলাদেশে এই প্রথম ব্লকওয়াইজ চাষ পদ্ধতি চালু করেছি। একটি ইউনিয়নে তিনটি ব্লক থাকবে এবং তিনজন ব্লক সুপারভাইজার থাকবে যেটাকে আমরা এখন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা বলে থাকি। তারা প্রতিটি ব্লকে কতো হেক্টর জমি আছে, সেখানে ধান চাষ কতটুকু হয়, গম, সরিষাসহ অন্য ফসল কী আছে এবং শাকসবজি কী আছে সেটার একটা চিত্র তারা আমাদেরকে দেবে। দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে তিনটি করে ব্লক আছে। এই ব্লকওয়াইজ আমরা পরিকল্পনা করছি।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে ২৮, ২৯ ব্রি এই জাতটার ব্যাপক উৎপাদন হয়। কিন্তু এই দুইটা জাতের উৎপাদনশীলতা কমে গেছে, এর প্রতিস্থাপনে আমাদের বিজ্ঞানীরা আরও ভালো জাত উদ্ভাবন করেছে। সে জাতগুলো ৮৯, ৯২ এবং বঙ্গবন্ধুজাত ১০০। এই তিনটি জাত যদি আমরা প্রতিস্থাপন করতে পারি তাহলে আমাদের কোনো খাদ্য ঘাটতি থাকবে না।

মন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রতিবছর ২০ থেকে ২৫ লাখ নতুন মুখ আসতেছে সেটাকে টেকসই করার জন্য নতুন জাত দিতে হবে। প্রতি শতাংশে এক মণ করে প্রতিবিঘাতে ৩৩ মণ ধান হয় এ জাতে। কিন্তু দেশের কৃষকরা জাত পরিবর্তন করতে চায় না। এজন্য ব্লক সুপকরভাইজেরদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বীজ কোথা থেকে আসবে, কে বীজ উৎপকদন করবে সবকিছু নিয়ে একটি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সেলক্ষ্যে দেশের ৮ বিভাগে ১৩টি অঞ্চলে কর্মশালা করেছি। সেখানে উপসহকারী কর্মকর্তা, সার, বীজের ডিলার, কৃষি উদ্যোগক্তা, ডিসি, এসপি কমিশনার, জনপ্রতিনিধিরা এখানে অংশ নেন।  

তিনি বলেন, আমরা ব্লকওয়াইজ পরিকল্পনা নিয়েছি। পরিকল্পনা শুধু যা আছে তা না। সামনের দিন তারা কী করবেন। কত সরিসার তেল করবে, কত পেঁয়াজ করবে, উৎপাদন কত বাড়বে সেসব পরিসংখ্যান নিয়ে আসতে হবে আগামী ১৩ অক্টোবর কৃষি সম্মেলনে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০২২
জিসিজি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।