ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ মে ২০২৪, ০৫ জিলকদ ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

যুক্তরাজ্যের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি চায় এফবিসিসিআই

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০২২
যুক্তরাজ্যের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি চায় এফবিসিসিআই

ঢাকা: যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি চায় দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠন এফবিসিসিআই। এ বিষয়ে কনফেডারেশন অব ব্রিটিশ ইন্ডাস্ট্রি (সিবিআই)কে সহায়তা করার আহ্বান জানিয়েছেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।

ঢাকায় সফররত সিবিআই সভাপতি ও বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য লর্ড করণ বিলিমোরিয়া, সিবিই, ডিএল, এফসিএ’র সৌজন্যে মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে এফবিসিসিআই আয়োজিত নেটওয়ার্কিং ডিনারে এ আহ্বান জানান এফবিসিসিআই সভাপতি।

এছাড়া বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশে পদাপর্ণের পরেও যুক্তরাজ্যের বর্তমান বাণিজ্য সহযোগিতাগুলো অব্যাহত রাখার ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে লর্ড করণ বিলিমোরিয়ার প্রতি আহ্বান জানান জসিম উদ্দিন।

দুদেশের বাণিজ্য-বিনিয়োগ বাড়ানো ও দক্ষতা উন্নয়নে এফবিসিসিআই ও সিবিআই’র মধ্যে সমঝোতা চুক্তি সইয়ের প্রস্তাবও দেন তিনি।

বর্তমানে বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্যের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ৫.৪৬ বিলিয়ন ডলার। ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশটিতে রপ্তানি হয়েছিল ৪.৮৩ বিলিয়ন ডলারের পণ্য, বিপরীতে আমদানি ছিল ০.৬৩ বিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যের বিনিয়োগ আহ্বান করে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, বাণিজ্য প্রবৃদ্ধি ও অবকাঠামো উন্নয়নের কারণে দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। খাদ্য প্রক্রিয়াজাত, তথ্যপ্রযুক্তি, প্লাস্টিক, পেট্রোকেমিক্যাল, জাহাজ নির্মাণ, পর্যটন, অবকাঠামো, পেট্রোলিয়াম, জ্বালানিখাতে দুদেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের প্রশংসা করেন। বর্তমান সরকারের ১৫ বছরের শাসনামলে অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথা তুলে ধরেন তিনি। এ সময় স্বল্পোন্নত আয়ের দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়াসহ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পরবর্তী ধাপগুলোতেও যুক্তরাজ্যকে পাশে পাওয়ার আশা প্রকাশ করেন শিল্পমন্ত্রী।

সিবিআই সভাপতি ও বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য লর্ড করণ বিলিমোরিয়া, সিবিই ডিএল এফসিএ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সেনা সদস্য হিসেবে তার বাবার অংশগ্রহণের স্মৃতিচারণ করেন। তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ বিশাল সংখ্যক বাংলাদেশি তরুণ জনশক্তিকে কীভাবে আরও কার্যকরভাবে কাজে লাগানো যায় সে বিষয়ে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যকে একত্রে কাজ করার পরামর্শ দেন তিনি।

তিনি জানান, যুক্তরাজ্যে আরও বেশি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাই ভবিষ্যতে যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ে আরও বেশি বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে দেখা যাবে। দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ বাড়াতে দুদেশের মধ্যে আস্থার উন্নয়ন করতে হবে বলে মন্তব্য করেন লর্ড করণ বিলিমোরিয়া।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, দুদেশের বেসরকারিখাতের মধ্যে বাংলাদেশি কৃষিপণ্য রপ্তানির সম্ভাব্যতা যাচাই বিষয়ে গবেষণা হতে পারে।

এছাড়া যুক্তরাজ্যের আউটসোর্সিং বাজারে বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারদের অংশগ্রহণ বাড়ানো, বাংলাদেশি চিকিৎসক, নার্স, কেয়ারগিভারসসহ অন্যান্য জনশক্তি রপ্তানি, যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ানোর ব্যাপারে দুদেশের বেসরকারিখাতকে কাজ করার পরামর্শ দেন মাসুদ বিন মোমেন।

ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন বলেন, বাংলাদেশে বিভিন্ন খাতে ব্রিটিশ বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ব্যবসা করে আসছে। ব্যবসার সম্প্রসারণও হচ্ছে। তবে আরও নতুন ব্রিটিশ কোম্পানি যেন বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হয়ে ওঠে সেজন্য বাংলাদেশকে উদ্যোগ নিতে হবে। ব্যবসায়িক পরিবেশ আরও উন্নয়নের তাগিদ দেন ব্রিটিশ হাইকমিশনার।

অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য দেন এফবিসিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি মো. মাহবুবুর রহমান, কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ, একে আব্দুল মাতলুব আহমাদ, এফবিসিসিআই’র সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী, সালাউদ্দিন আলমগীর, মো. হাবীব উল্ল্যাহ ডন ও পরিচালকরা।

বাংলাদেশ সময়: ২২১১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০২২
এমকে/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।