ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ক্ষতির মুখে দেশীয় পেঁয়াজ চাষিরা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০২২
ক্ষতির মুখে দেশীয় পেঁয়াজ চাষিরা

পেঁয়াজের ভান্ডার হিসাবে খ্যাত পাবনায় আর্থিক ক্ষতির মুখে পরেছে চাষিরা। আমদানিকৃত বিদেশী পেঁয়াজের কারনে চাষকৃত দেশি পেঁয়াজের বাজারে ধস নেমেছে।

তাই মৌসুম শেষে নিজেদের ঘরে রাখা সংরক্ষিত হালি পেঁয়াজের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেনা আর এই কারনে দেশি পেঁয়াজ চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে উপজেলার প্রন্তিক পেঁয়াজ চাষিরা।


জেলার পেঁয়াজ আবাদের অন্যতম উপজেলা সুজানগর। এই অঞ্চলের মাটি আর আবহাওয়া জনিত কারনে পেঁয়াজের আবাদ বেশ ভালো হয়ে খাকে। এই অঞ্চলে সবচাইতে বেশি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়ে থাকে সুজানগর পৌরসভার হাটে। বর্তমানে বিভিন্ন হাটে পাইকার পেঁয়াজের দাম যাচ্ছে  ১২ থেকে সারে ১২শো টাকা মন দরে। কেজীতে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা দরের এই দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করে বিরাট আর্থিক ক্ষতিতে পরেছেন এই জেলার প্রান্তিক পেঁয়াজ চাষিরা। বর্তমান বাজারে ১কেজী পেঁয়াজের দানার দাম থেকে হাজার টাকায় কিনতে হচ্ছে চাষিদের। আর সেই দানা নিয়ে পেঁয়াজ চাষ করতে লেবার, কৃটনাষক, সার দিয়ে বিঘা প্রতি ফলনে ২৪ থেকে ২৫ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে তাদের। কিন্তু সেই কষ্টের পেঁয়াজ এখন কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের। পেঁয়াজের সংকটের সময় বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি না করে মৌসুমের সময় এলসি খুলে দিয়ে কৃষকদের খতি করছে সরকার। এখনো দেশি পেঁয়াজ বাজারে প্রচুর পরিমানে রয়েছে। যা দিয়ে দেশের পেঁয়াজের সংকট মোকাবলো করা সম্ভব।

 

 

 

 

 

কৃষকরা বলেন, দেশে সকল কিছুর মূল্য বৃদ্ধি পেলেও পেঁয়াজের দাম প্রতিদিনিই কমছে। সরকারে সঠিক সিদ্ধান্ত না থাকায় এই ক্ষতিতে পরতে হচ্ছে তাদের। সপ্তাহে দুই দিন করে স্থানীয় সুজানগরের একটি হাট থেকেই ২০ থেকে ২৫ ট্রাক দেশি পেঁয়াজের আমদানি হচ্ছে। আর এই জেলাতে এখনও প্রচুর পরিমান পেঁয়াজ কৃষকের ঘরে সংরক্ষিত রয়েছে। দেশের সকল স্থানীয় বাজারে চাহিদা রয়েছে এই অঞ্চেলের দেশি পেঁয়াজের। আর এক থেকে দের মাসের মধ্যে নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজ বাজারে উঠতে শুরু করবে তাই দেশের পেঁয়াজ চাষিদের বাঁচাতে বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি এলসি বন্ধের দাবি জানান স্থানীয় কৃষকরা।


গত বছরের পেঁয়াজের মৌসুমে শুধু সুজানগর উপজেলায় ১৯ হাজার ৩শত ৫০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়। এর মধ্যে হাজার শত ৫০ হেক্টর জমিতে মূলকাটা পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে। উপজেলাতে মোট পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে লক্ষ ৩৬ হাজার মেট্রিকটন। যা স্থানীয়দের চাহিদা মিটিয়ে সরবরাহ হয় সারা দেশে। এই মৌসুমের প্রথম থেকেই চাষিরা আর্থিক ক্ষতিতে রয়েছে। ঘরে সংরক্ষিত শুকনো হালি পেঁয়াজ নতুন পেঁয়াজের দামে বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের। উপজেলার কৃষি বিভাগের দেয়া তথ্য মতে এখনো উপজেলার প্রান্তিক কৃষকদের কাছে প্রায় ২০ হাজার মেট্রিক টন সমপরিমান পেঁয়াজ মজুদ রয়েছে। আর এলসি চালু থাকার বিষয়ে   সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের সাথে কখা বলেছেন তারা।


পাবনা সুজানগর উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ রাফিউল ইসলাম বলেন, দেশের কৃষি সমৃদ্ধ অঞ্চলের মধ্যে পাবনা জেলার নাম অন্যতম। এই জেলার মাটি আবহাওয়া জনিত কারনে কৃষি ফসলের ফলন বেশ ভালো হয়ে থাকে। এই জেলার এক পাশে রয়েছে বিশাল বিল অঞ্চল আরেক পাশে পদ্মা নদী। এই অঞ্চলের বিশেষ করে এই একটি উপজেলাতে ব্যাপক পরিমান পেঁয়াজ আবাদ হয়ে থাকে। দেশের মানুষের দেশি পেঁয়াজের অনেকাংশেই এই জেলা উপজেলার পেঁয়াজ চাহিদা পূরণ করে আসেছ। তবে পেঁয়াজের বাজার উঠা নামা করছে মৌসুমের প্রথম দিক থেকেই। পেঁয়াজের ফলন ভালো হওয়ার জন্য আমরা নতুন নতুন জাতের বিজ সরবরাহ করছি পরামর্শ প্রদান করছি কৃষকদের। আগে যেখানে ২০ থেকে ২৫ মন পেঁয়াজ পেতো বিঘাপ্রতি। সেখানে একই জমিতে বর্তমানে কৃষক প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ মন পেঁয়াজ পাচ্ছে। তাই দাম খুব একটা কমেনি। লাভের বিষয়টি আসলে বলা মুসকিল। তবে পেঁয়াজের বিজের দাম কৃষি সামগ্রির দাম বৃদ্ধি হওয়ার কারনে হয়তো লাভটা কম হচ্ছে। আর কৃষকের যে অভিযোগ সরকারের এলসি খোলা নিয়ে সেটি বানজ্যি মন্ত্রণালয়ের বিষয়। তবু আমরা কৃষকদের জন্য আমাদের উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। কৃষকদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য। আশা করছি এই সমস্যার সমাধান হবে কৃষক তার পেঁয়াজের সঠিক মূল্য পাবে।
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।