ঢাকা: দেশে ডিমের চাহিদার থেকে অতিরিক্ত উৎপাদন থাকার পরও ডিম আমদানি করতে চায় এমন আমদানিকারকদের অনুমতি না দেওয়াসহ সাত দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন।
মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির সাগর রুনি মিলনায়তনে ‘ডিম আমদানি বন্ধ করুন, দেশের প্রান্তিক খামারিদের রক্ষা করুন’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
ডিম আমদানি বন্ধের বিষয়ে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, ‘দেশে ডিম ও মাংসের কোনো সংকট নেই। দেশে সাড়ে চার কোটি ডিমের চাহিদা রয়েছে। যেখানে উৎপাদন হচ্ছে পাঁচ কোটি। বাজারে চাহিদা কম থাকায় খামারিরা ডিম ও মুরগি বিক্রি করতে পারছেন না। সেখানে কিছু অসাধু আমদানিকারক ডিম আমদানি করার পাঁয়তারা করছেন। তারা ডিম আমদানির নামে কালো টাকা সাদা করার পাঁয়তারা করছেন। এছাড়া তারা সিন্ডিকেট করে প্রান্তিক খামারিদের ধ্বংসের পাঁয়তারা করছেন। ’
তিনি বলেন, প্রান্তিক খামারিদের একটি ডিম উৎপাদনে ফিড কিনতে খরচ হয় ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ। খামারিরা উৎপাদন করতে না পারায় ফিড কোম্পানির ওপর নির্ভর করতে হয়। সেখানে ফিড উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো সিন্ডিকেট করে বছরে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা লোপাট করছে। বাজারের মূল্য যাই থাকুক না কেনো তারা অতিরিক্ত দাম দিয়ে কাঁচামাল ক্রয় দেখিয়ে ও গুদামজাত করে প্রতিনিয়ত ফিডের দাম বাড়াচ্ছেন।
কোম্পানিগুলো পোল্ট্রি শিল্পের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বাজারে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে অভিযোগ করে সুমন হাওলাদার বলেন, ‘এখান থেকে উত্তরণের ব্যবস্থা করা না গেলে অল্প সময়ের মধ্যেই প্রান্তিক খামার বন্ধ হয়ে যাবে। তখন একদিকে যেমন লাখ লাখ মানুষ বেকার হবে অন্য দিকে প্রোটিন উৎপাদনে সংকট দেখা দেবে। কর্পোরেট বা ইন্ডাস্ট্রি আকারে গড়ে ওঠা পোল্ট্রি শিল্পের মালিকদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে। সে ক্ষেত্রে তারা চড়া মূল্যে ডিম ও মাংস বিক্রি করতে থাকবে ফলে সাধারণ মানুষের পক্ষে প্রোটিন খাওয়া সম্ভব হবে না। পুষ্টিহীনতায় পড়বে দরিদ্র জনগোষ্ঠী।
অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, আমাদের দাবিগুলো বাস্তবায়ন করা গেলে প্রান্তিক পোল্ট্রি খামারিরা টিকে থাকবেন। পাশাপাশি সস্তায় ডিম ও মাংস সাপ্লাই দিতে পারবেন। পাশাপাশি লাখ লাখ মানুষ কর্ম করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবে।
সাত দফা দাবিগুলো হলো: অসাধু সিন্ডিকেট থেকে পোল্ট্রি সেক্টরকে রক্ষা করতে হবে। ডিম আমদানির পাঁয়তারা যারা করবেন তাদের অনুমতি দেওয়া যাবে না। খাদ্যের ওপর সরকারি ভর্তুকিসহ অন্যান্য সুযোগ বাড়িয়ে মূল্য কমাতে হবে। পোল্ট্রি নীতিমালা প্রণয়নসহ পোল্ট্রি বোর্ড গঠনের মাধ্যমে উৎপাদন খরচের সঙ্গে সমন্বয় করে ন্যায্য মূল্য নির্ধারণ করতে হবে। সব খামারিদের নিবন্ধনের আওতায় আনতে হবে, নিবন্ধন ফি কমিয়ে আনতে হবে। সহজ শর্তে ব্যাংক লোনের ব্যবস্থা করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত খামার মালিকদের প্রণোদনার ব্যবস্থা করা যাতে তারা ঘুরে দাঁড়াতে পারেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি সুমন হাওলাদার, সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খন্দকার, সাংগঠনিক সম্পাদক বদরুল আলম মজুমদার ও সৈয়দ মোহাম্মদ আলী।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০২২
ইএসএস/আরআইএস