ঢাকা: বিশ্ববাজারে দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাওয়ায় দেশের বাজারেও দ্রব্যমূল্য অব্যাহতভাবে বেড়েই চলেছে। এর ফলে সবচেয়ে বেশি কষ্টে জীবন যাপন করছে পোশাক শ্রমিকসহ নিম্ন আয়ের মানুষ।
এমন পরিস্থিতিতে পোশাক শ্রমিকদের প্রচলিত বাজারের চেয়ে তুলনামূলক কম দামে জিনিসপত্র সরবরাহের লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন পোশাক কারখানায় ন্যায্যমূল্যের দোকান স্থাপনের উদ্যোগ নিতে পরামর্শমূলক সহায়তা দিচ্ছে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইমপ্রুভড নিউট্রিশন (গেইন)। এই উদ্যোগের আওতায় প্রায় ৮০ হাজার মানুষ সুবিধা পাবেন। এর মধ্যে প্রায় ২০ হাজার নারী পোশাক কর্মী ও ৬০ হাজার পরিবারের সদস্য রয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘গার্মেন্ট শ্রমিকদের সাশ্রয়ী মূল্যে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণে প্রবেশগম্যতা ও নিরাপদ খাবার গ্রহণ’ শীর্ষক এক আলোচনা অনুষ্ঠানে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।
পোশাক শ্রমিকদের জন্য ন্যায্যমূল্যের দোকান চালুর ক্ষেত্রে কারিগরি সহায়তা ও এই কার্যক্রমকে গতিশীল করতে করণীয় এবং এ সংক্রান্ত সুপারিশগুলো তুলে ধরতে অংশীদার সংস্থা ও স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে সভার আয়োজন করে গেইন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. এহসান-ই-এলাহী। সূচনা বক্তব্য রাখেন গেইন বাংলাদেশ-এর পোর্টপোলিও লিড মনিরুজ্জামান বিপুল। এ সংক্রান্ত উপস্থাপনা তুলে ধরেন গেইন বাংলাদেশ-এর ওয়ার্কফোর্স নিউট্রিশনের প্রকল্প ব্যবস্থাপক জি এম রেজা সুমন।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ওসান ফাউন্ডেশনের জেনারেল ডেলিগেট এলিয়ান রেনার্স। গেইন বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. রুদাবা খন্দকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল নিউট্রিশন কাউন্সিলের (বিএনএনসি) মহাপরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির, বিজিএমইএ-এর প্রেসিডেন্ট ফারুক হাসান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এই প্রকল্পের মূল্য লক্ষ্য হলো পোশাক শিল্পের কর্মরত শ্রমিকদের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে পুষ্টিকর খাবারের প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত করা এবং খাদ্যের বিপণন ব্যবস্থাপনাকে শক্তিশালী করা। এর পাশাপাশি কারখানার শ্রমিকদের জন্য পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে কাজ করা, যাতে তারা পোশাক শিল্পে আরও উৎপাদনশীল ভূমিকা রাখতে পারে।
মো. এহসান-ই-এলাহী বলেন, পোশাক কারখানার কর্মীদের কাজের গতি বাড়াতে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের কোনো বিকল্প নেই। তুলনামূলক কম মূল্যে এই সব দোকান স্থাপনের উদ্যোগ বাস্তবসম্মত। এটিকে কীভাবে আরও দেশের অন্যান্য কারখানায় বাস্তবায়ন করা যায়, সেটা নিয়ে আমাদের আরও কাজ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে বক্তারা খাদ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, সরবারহ ও বিপণনের সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোকে ন্যায্যমূল্যে দোকান স্থাপনের পাশাপাশি শ্রমিকদের নিরাপদ খাবার গ্রহণে উৎসাহিত করতে বিভিন্ন পোশাক কারখানায় স্থাপিত দোকানগুলোতে মানসম্মত ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার রাখার পরামর্শ দেন।
উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে গেইনের সহায়তায় দেশের গাজীপুর ও আশুলিয়ায় অবস্থিত দুটি কারখানায় এই পর্যন্ত বেশ কয়েকটি দোকান স্থাপন করা হয়েছে। এর আওতায় এইসব কারখানার ১৫ হাজার পোশাক কর্মী ও তাদের পরিবার সুলভ মূল্যে চাল, ডাল, আটা, ডিম, ডাল, দুধসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও গৃহস্থালির কাজে ব্যবহৃত উপকরণ কিনতে পারবেন। এতে শ্রমিকরা বিশেষ ছাড়ে পণ্য ক্রয় করার সুযোগ পাবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২২
এমজেএফ