নাগরিকদের জীবন নির্বিঘ্ন, ঝামেলাহীন ও স্বস্তিময় রাখার দায়িত্ব সরকার ও নগর-কর্তৃপক্ষের। কিন্তু আবাসিক এলাকায় শয়ে শয়ে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসহ নানা রকম প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে তার ব্যত্যয় চলছিল দীর্ঘদিন ধরে।
আশার কথা এ অবস্থার অবসান হতে চলেছে। সরকার আবাসিক এলাকাকে তার আপন চারিত্র্য ও বৈশিষ্ট্যে ফিরিয়ে নিতে উদ্যোগী হয়েছে। সোমবার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত: মহানগরীর আবাসিক এলাকায় গড়ে ওঠা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ছয় মাসের মধ্যে সরিয়ে নিতে হবে। এই সময়ের মধ্যে সরে না গেলে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির লাইন কেটে দেওয়া হবে। বাতিল করা হবে ট্রেড লাইসেন্স।
এই সিদ্ধান্তটি বর্তমান সরকারের বহু ভালো কাজের একটি। নাগরিক দুর্ভোগের অবসানে এটি এক যুগান্তকারী উদ্যোগ। কেননা কয়েক দশক ধরে চলে আসা বিপত্তির অবসান ঘটবে তাতে। এতে করে রাজধানীর কোটি বাসিন্দা উপকৃত হবেন। শান্তি ও স্বস্তিময় জীবন ফিরে পাবেন। তবে কাজটা করা বড় কঠিন।
সর্বোচ্চ আন্তরিকতা, নিরপেক্ষতা ও সততা দিয়েই কাজটি করতে হবে। চাই নিরলস উদ্যমও। এগোতে হবে ডিজিট্যাল যুগে ডিজিট্যাল গতিতে। নইলে ছয়মাসের মধ্যে এই ‘হারকিউলিয়ান টাস্ক’ বা মহাযজ্ঞ সম্পাদন সম্ভব নয়। এটা তখনই সম্ভব যখন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোসহ নগর কর্তৃপক্ষ ও সেবাদানকারী সংস্থাগুলো একযোগে কাজে নেমে পড়বে। সবার সমন্বিত ও ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগ জরুরি একাজে।
এখন দেখার বিষয় সরকার কতোটা দক্ষতা ও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজটা করে। এটা যেন ‘বহ্বারম্ভে লঘুক্রিয়া’ বা ‘যত গর্জে ততো বর্ষে না’ জাতীয় ব্যাপার না হয়। কোটি নগরবাসীকে দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দিতে এর চেয়ে মহতী আর শুভবাদী কাজ আর কী হতে পারে! যে সরকার পদ্মাসেতু করবার মতো মহাযজ্ঞে নামতে পারে, সমুদ্রবিজয়ের পরাকাষ্ঠা দেখাতে পারে সে সরকার চাইলে এই কাজটিও সফলতার সঙ্গেই করতে পারবে। এখন দরকার দ্রুত কাজে নেমে পড়া। দ্বিধা ও আলস্য ঝেড়ে বিপুল উদ্যমে।
বাংলাদেশ সময়: ১২০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০১৬
জেএম