রাবি: 'মধ্যম আয়ের দেশ গড়তে প্রাণিজ আমিষের অবদান' প্রতিপাদ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫ম লাইভস্টক অ্যাওয়ার্ড, সেমিনার এবং প্রাণিসম্পদমেলা-২০২২ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সায়েন্সেস অনুষদ ও বাংলাদেশ লাইভস্টক সোসাইটির (বিএলএস) যৌথ উদ্যোগে এই সেমিনার ও মেলার আয়োজন করা হয়।
শনিবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবাশ বাংলাদেশ মাঠে মেলার উদ্বোধন করেন রাবি উপাচার্য প্রফেসর ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার। উদ্বোধন শেষে উপাচার্য মেলার স্টলগুলো পরিদর্শন করেন।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপ-উপাচার্যদ্বয় প্রফেসর ড. মো. সুলতান-উল-ইসলাম ও প্রফেসর ড. মো. হুমায়ুন কবীর, ভেটেরিনারি ও এনিমেল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. জালাল উদ্দিন সরদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সেমিনারে উপাচার্য প্রফেসর ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকট ও খাদ্য সংকটের আভাস দেওয়া হচ্ছে। তবে কৃষক ও কৃষির অবদানের কারণে আমরা কখনও দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন হবো না। মাঠ পর্যায়ের কৃষি সমস্যাগুলো কৃষকেরা সবচেয়ে ভালো জানেন। মাঠ পর্যায়ের সঙ্গে যৌথতা না থাকলে আমাদের গবেষণার জ্ঞানকে কাজে লাগাতে পারবো না। তাই ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে কৃষকদের যোগাযোগ বৃদ্ধি করা জরুরি। না হলে আমাদের উৎপাদন টেকসই হবে না। আমাদের টিকে থাকতে হবে, টিকে থাকতে থাকতে সমস্যাগুলোর সমাধান করতে হবে৷
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, প্রাণিসম্পদ বিভাগের উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কৃষক, গবেষকদের অবদানের জন্যই এই সেক্টরে সফলতা এসেছে। তবে বাণিজ্যের কারণে খাদ্য দ্রুত উৎপাদন করে সরবরাহ করা হচ্ছে। দ্রুত উৎপাদনের কারণে খাদ্যের মধ্যে ক্ষতিকর কোনো উপাদান যুক্ত হয়ে মানুষ যেন দীর্ঘমেয়াদী ঝুঁকির সম্মুখীন না হয় সেদিকে খেয়াল করতে হবে। মানুষকে পর্যাপ্ত তথ্য দিয়ে আশ্বস্ত করতে হবে যে তারা নিরাপদ খাদ্য পাচ্ছে। খাদ্য সম্পর্কিত প্রকৃত তথ্য মানুষের সামনে তুলে ধরতে হবে।
উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, আমাদের শরীর, মন ভালো না থাকলে কাজ করতে পারবো না, দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারবো না। তাই শরীর ঠিক রাখার জন্য আমিষের চাহিদা পূরণ ও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সরকারি পদক্ষেপের সঙ্গে বেসরকারি উদ্যোক্তা, কৃষকরা যেভাবে এগিয়ে এসেছেন তাতে দেশের লক্ষ্য পূরণ সম্ভব হবে বলে প্রত্যাশা রাখি।
সেমিনারে কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের (কেডিএফ) নির্বাহী পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) কৃষিবিদ ড. নাথু রাম সরকার 'মধ্যম আয়ের দেশ গড়তে প্রাণীজ আমিষের অবদান' শিরোনামে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
রাবির ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন ও বিএলএস এর সভাপতি প্রফেসর ড. মো. জালাল উদ্দিন সরদারের সভাপতিত্বে সেমিনার ও অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন এসিআই লিমিটেডের চিফ টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার ড. এম এ সালেক প্রমুখ।
স্বাগত বক্তব্য দেন বিএলএস এর সহ-সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক ড. হেমায়েতুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে ৪টি ক্যাটাগরিতে ১৪ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- মোস্ট ভ্যালুয়েবল পারসন অব দ্য ইয়ার ক্যাটাগরিতে লাইভস্টক শিল্প (প্রতিষ্ঠান) কাজী ফার্মস লিমিটেড, লাইভস্টক শিল্প (ব্যক্তি), আমিনুল ইসলাম, লাইভস্টক গবেষণায় প্রফেসর ড. সুবাস চন্দ্র দাস, লাইভস্টক শিক্ষায় প্রফেসর ড. এম রাশেদ হাসনাত, প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের ডা. গোলাম মোস্তফা।
হাইয়েস্ট সার্ভিস প্রোভাইডার ক্যাটাগরিতে লাইভস্টক শিল্পে ইয়ন বায়ো সায়েন্স লিমিটেড, প্রাণিসম্পদের মাঠ পর্যায় হতে-উদ্যোক্তা আদর্শ প্রাণিসেবা লিমিটেড, মাঠ পর্যায়ে স্বেচ্ছাসেবী অঞ্জনা রানী।
জীববৈচিত্র্য ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে সাইফুল ইসলাম, প্রোমিজিং ক্যাটাগরিতে ফার্মার অব দ্য ইয়ার লাইভস্টকে সুরাইয়া ফারাহানা রেশমা, পোল্ট্রি শিল্পে ওয়াহেদুজ্জামান সিকুল, সৌখিন পাখি শিল্পে মফিজুর রহমান।
এছাড়া ক্যাটালিস্ট মিডিয়া পারসন হিসেবে ইলেকট্রনিকস মিডিয়ায় চ্যানেল টুয়েন্টি ফোরের কৃষিবিদ ফয়জুল সিদ্দিকী এবং প্রিন্ট মিডিয়ায় পোল্ট্রি খামার বিচিত্রার কামাল আহম্মদ। অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের হাতে স্মারক তুলে দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০২২
আরএ