ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহ জেলায় ৪ হাজার ৭১৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩৫ শতাংশ এবং মাধ্যমিক পর্যায়ে ৯৯৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৫৩ শতাংশ শিক্ষার্থীরা নতুন বই পেয়েছে। ফলে বছরের প্রথম দিনে নতুন বই পায়নি সব শিক্ষার্থীরা।
এদিকে বছরের শুরুতেই নতুন বই হাতে পেয়ে একদল শিক্ষার্থী আনন্দ-উচ্ছাসে মেতে উঠলেও বেদনার ছাপ ছিল খালি হাতে বাড়ি ফেরাদের মধ্যে।
রোববার (১ জানুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে দুপুর পর্যন্ত এই চিত্র দেখা গেছে ময়মনসিংহের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মাঝে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্য অনুযায়ী, প্রাক-প্রাথমিকে শতভাগ বই পেলেও প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ৩৪ দশমিক ৭২ শতাংশ বই প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পৌঁছে দেওেয়া হয়েছে।
এদিকে সকালে নগরীর নওমহল মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বই উৎসব এবং বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে মাধ্যমিক পর্যায়ে বই উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বিভাগীয় কমিশনার শফিকুর রেজা বিশ্বাস। এরপর শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া হয়।
বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী ফারদিন ফারাহ ঊষা বলেন, নতুন বছরে নতুন বই পেয়ে নতুন যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছি। নতুনভাবে পড়াশোনা করার অনুপ্রেরণা পেয়েছি। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনেক ধন্যবাদ।
সুবাইতা জাহান রোজা নামে নওমহল মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক ছাত্রী বলেন, আমি দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে তৃতীয় শ্রেণিতে উঠেছি। আমার বই মূলত ছয়টা, তবে আমি তিনটা পেয়েছি। আর বইয়ের পৃষ্ঠাগুলো ঘোলা ঘোলা। তবুও নতুন বই পেয়ে আনন্দ লাগছে।
তবে, বই না পেয়ে মন খারাপ করেছেন কেউ কেউ। শিক্ষার্থী আবিদ হাসান বলেন, আমি এবার চতুর্থ শ্রেণিতে উঠেছি। আমাদের অনেকে আজ নতুন বই পেয়েছে, কিন্তু আমি পাইনি। তাই আমার মনটা একটু খারাপ। স্যাররা বলেছেন, পরে আমাকে বই দেবেন।
চৈতি রাণী নামে এক অভিভাবক বলেন, সবাই বই না পেলে আসলে বিষয়টা খারাপ লাগে। এতে বাচ্চাদেরও মন খারাপ হয়। তারা অনেক উৎসাহ নিয়ে স্কুলে এসেছিল। কিন্তু তারা বই না পেয়ে মন খারাপ হয়েছে।
অপরদিকে নগরীর প্রিমিয়ার আইডিয়াল হাই স্কুল, মুকুল নিকেতন উচ্চ বিদ্যালয়, ময়মনসিংহ উচ্চ বিদ্যালয় এবং কৃষ্টপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিয়েছেন ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটু।
এ সময় মেয়র বলেন, বছরের প্রথম দিনে আমরা বই উৎসব উদযাপন করতে পারছি এটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণেই সম্ভব হয়েছে। প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে সুশিক্ষিত করার লক্ষ্যে এটা প্রধানমন্ত্রীর অনন্য উদ্যোগ।
এ বিষয়ে সরকারি আনন্দমোহন কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ নারায়ণ চন্দ্র ভৌমিক বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শতভাগ বই না পাওয়া এবং বইয়ের গুণগত মান খারাপ হয়ে থাকলে শিক্ষার্থীরা প্রথমেই একটা বড় ধাক্কা খাবে। বইয়ের প্রতি শিক্ষার্থীদের মনোনিবেশ ঘটাতে সময় লাগবে। তবে আমার পরামর্শ হচ্ছে পরবর্তী ধাপে যে বইগুলো আসবে সেটির গুণগত মান যেন ঠিক থাকে। সরকারের শতভাগ বই পৌঁছানোর জন্য চেষ্টা ছিল। হয়তো কোন কারণে সম্ভব হয়ে ওঠেনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১, ২০২৩
এমএমজেড