ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

জাবি ক্যাম্পাসে শীতের পিঠা

জাবি করেসপডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৩
জাবি ক্যাম্পাসে শীতের পিঠা

জাবি: শীতকাল এলেই বাঙালির মনে ভেসে ওঠে পিঠার কথা। পিঠা ছাড়া বাংলার শীত যেনো পরিপূর্ণ হয় না।

তাইতো কবি আহসান হাবীব তার কবিতায় লিখেছেন, ‘শীতের পিঠা, শীতের পিঠা/ঝাল নোনতা বেজায় মিঠা/পাটি সাপটা, চিতই ভাপা/ মালাই ঠাসা কিংবা ফাঁপা/ খেজুর রসে হাবুডুবু/ মাখছে খালা ভাজছে বুবু’।  

তবে বাড়ি থেকে দূরে থাকার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়াদের শীতের পিঠার স্বাদ নেওয়ার সুযোগ হয়তো তেমন থাকে না। কিন্তু জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ক্যাম্পাসে হাতের কাছে মেলে নানান স্বাদের শীতের পিঠা। এখানে বন্ধু-বান্ধবরাই যেন পরিবার। তাদের সাথেই শীতের পিঠার আমেজ ভাগাভাগি করে নেন শিক্ষার্থীরা।  

শীতের তীব্রতা কমে এলেও ক্যাম্পাসে শীতের পিঠার আমেজ কমেনি। বিকেল পেরিয়ে সন্ধ্যা গড়াতেই এখানে পিঠা তৈরির দোকানগুলোতে ভিড় জমান শিক্ষার্থীরা। মেতে ওঠেন গল্প-আড্ডা আর গানে। শীতের পিঠার স্বাদ নিতে ঢাকা থেকে দর্শনার্থীরাও আসেন ক্যাম্পাসে। ছোট ছোট পিঠার দোকানগুলোতে পাওয়া যায় মাটির চুলায় বানানো ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, ডিম চিতই, মাংসের পিঠা, পুলি পিঠা, পাটিসাপটা, তেলের পিঠা, জামাই পিঠা, সঙ্গে বেশ কয়েক ধরনের মজাদার ঝালের পিঠাও আছে।

সংস্কৃতির রাজধানী খ্যাত জাবিতে একসময় ‘পিঠা চত্বর’ থাকলেও এখন আর নেই। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ডজনখানেক পিঠার অস্থায়ী দোকান গড়ে উঠেছে। পরিবহন চত্বর, মুরাদ চত্বর, ছবি চত্বর, অমর একুশের পাশে, টারজান পয়েন্ট, বটতলা, আলরেুনি হল, প্রীতিলতা ও শেখ হাসিনা হলের সামনে বসে পিঠার দোকানগুলো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সামনে পিঠা বিক্রি করেন আমেনা বেগম (৩৫)। তার কাজে সাহায্য করেন বোন ও ছেলে। তিনি জানান, তিনি আগে বাসাবাড়িতে কাজ করতেন। এখন প্রতিদিন পিঠা বিক্রি করে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় করেন। এই আয় দিয়েই চলে সংসার।  

সরেজমিনে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রায় ১০-১৫টি ভ্রাম্যমাণ পিঠার দোকান দেখা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, জাবি ক্যাম্পাসে প্রতি দোকানে প্রতিদিন প্রায় কয়েক হাজার টাকার পিঠা বিক্রি হয়। আর এসব দোকানগুলোর ওপর জীবিকা নির্বাহ করছেন প্রায় ১৫-১৮ পরিবারের শতাধিক মানুষ।  

দোকানিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তেলে ভাজা, ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, মাংস পিঠা প্রতিটি ১০ টাকা। আর পাটিসাপটা, নঁকশি পিঠা ২০ টাকা করে বিক্রি করেন তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী আয়েশা সিদ্দীকা বলেন, শীতকালে জাহাঙ্গীরনগরের পরিযায়ী পাখির মতোই অন্যতম আকর্ষণ পিঠাপুলি। হলের সামনের চত্বর থেকে শুরু করে আশপাশে কোথাও ঘুরতে বের হলেই পিঠা পাওয়া যায়। বন্ধুদের সাথে আমরা মজাদার ভাপা, চিতই, পাটিসাপটার আনন্দ ভাগাভাগি করে নিই। এখানকার পিঠার স্বাদ ঘরে বানানো পিঠার থেকে কোনো অংশে কম নয়।

পিঠার দোকানে ক্রেতাদের মধ্যে যেমন শিক্ষার্থীরা আছেন, তেমনি আছেন স্মৃতির টানে ছুটে আসা সাবেক শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। পিঠার মৌ মৌ গন্ধ যেন ভরে রেখেছে চারপাশ।  

বাংলাদেশ সময়: ২০১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০২৩
নিউজ ডেস্ক

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।