জাবি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) একটি আবাসিক হলে যুবককে আটকে রেখে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি ও প্রায় অর্ধলাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার যে অভিযোগ, ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই তা ভিন্ন দিকে মোড় নিয়েছে। উল্টো ভুক্তভোগী যুবকের বিরুদ্ধেই মাদক গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ওয়ালিউল্লাহ নামের এক যুবক অভিযোগ করেন, তাকে অপহরণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের একটি কক্ষে নির্যাতন করে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। একইসঙ্গে তার কাছে থাকা প্রায় ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। তিনি ছবি দেখে এক অপহরণকারী শিক্ষার্থীকে চিহ্নিত করেন।
কিন্তু বলা হচ্ছে, ওয়ালিউল্লাহ মাদকাসক্ত। তিনি হলে স্বাভাবিকভাবেই প্রবেশ করে মাদক গ্রহণ করেছেন।
তবে ভুক্তভোগী যুবক স্বাভাবিকভাবেই হলে প্রবেশ করেছেন কিনা তা হলের ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা (সিসিটিভি) নষ্ট থাকায় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে হলের একাধিক ছাত্রনেতা জানান, ওয়ালিউল্লাহ মাদকাসক্ত। তার মাদক গ্রহণের একাধিক ভিডিও ফুটেজ এই প্রতিনিধির হাতে এসেছে। তবে ভিডিওগুলো কবেকার তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ওয়ালিউল্লাহর এক হাতে সিগারেট ও বোতলের লাল ছিপি। অন্যহাতে একটি লাইটার ধরে আছেন। এছাড়া পাশে থাকা এক ব্যক্তি একটি পেপারে লাইটার দিয়ে আগুন ধরাতে সাহায্য করছেন। তবে সাহায্যকারী ব্যক্তিকে ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়নি। ভিডিও ধারণ করার কক্ষটি অভিযোগের তীর যার দিকে সেই অসিত পালের বলে ফুটেজ থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
মাদক গ্রহণের বিষয়ে ওয়ালিউল্লাহকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমার জ্ঞান ছিলো না। আমি জানি না আমাকে কিছু খাওয়ানো হয়েছিল কিনা। আমি তাদের চিনি না। এগুলো সাজানো নাটক।
তিনি আরও বলেন, আমি আজকে একটি লিখিত অভিযোগপত্র প্রভোস্ট বরাবর দিয়ে আসছি। থানায় গিয়েছিলাম কিন্তু আমার বোন জামাই আমাকে নিয়ে এসেছেন। মামলা করবো কিনা পরে সিদ্ধান্ত নিবো।
তবে এ বিষয়ে আরও জানতে অসিত পালের ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, কে বা কারা ছাত্রলীগের নামে এরকম একটি অভিযোগ দিচ্ছে। এ বিষয়ে আমাদের সবার আরও সতর্ক হতে হবে। আমি বলছি না যে ছাত্রলীগের সবাই সুশীল, কিন্তু আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে আরও গভীরতর তদন্ত করব। যেহেতু একটা অভিযোগ আসছে।
সালাম বরকত হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক সুকল্যাণ কুমার কুন্ডু বলেন, ভুক্তভোগী অভিযোগের কোনো অকাট্য প্রমাণ গতকাল দিতে পারেননি। ভিডিও থেকে এটা স্পষ্ট যে তিনি মাদক সেবনের জন্য এখানে আসেন। হয়তো মাদক গ্রহণের পর তাদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে, যার পরিপ্রেক্ষিতে অপহরণের অভিযোগ তুলেছেন। তার ব্লাড ও ইউরিন রাখা হয়েছে। এগুলো টেস্ট করে পরে জানানো হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০২৩
নিউজ ডেস্ক