ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

ফাঁস হওয়া অডিও নিয়ে ইবি ভিসির বক্তব্য চান শিক্ষকরা

ইবি করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৩
ফাঁস হওয়া অডিও নিয়ে ইবি ভিসির বক্তব্য চান শিক্ষকরা ইবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম

ইবি: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যামে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেক আব্দুস সালামের শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত অডিও ফাঁসের ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষকদের সংগঠন শাপলা ফোরাম।  

একই অভিযোগে ক্ষুব্ধ ও হতাশা ব্যক্ত করে উপাচার্যের অবস্থান জানানোর দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি।

এ বিষয়ে ভিসির বক্তব্য চান শিক্ষকরা।  

শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্বে থাকা উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমানের কাছে দুটি পৃথক লিখিত অভিযোগ জমা দেন শিক্ষক নেতারা।  

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন,  উপাচার্যের দায়িত্ব থাকায় শিক্ষক সমিতি ও শাপলা ফোরাম আমার কাছে অভিযোগপত্র দুটি জমা দিয়েছেন। আমি উপাচার্য মহোদয়ের ব্যক্তিগত সহকারীর মাধ্যমে তার কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি।

শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক তপন কুমার জোদ্দার স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগে শিক্ষক নেতারা বলেন, ‘আজ ১৮ ফেব্রুয়ারি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত অডিও-তে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্যের কথোপকথন শিক্ষক সমিতির দৃষ্টিগোচর হয়েছে। অডিওতে উপাচার্য মহোদয়ের মন্তব্যে শিক্ষক সমিতি হতবাক ও বিস্মিত। এ ধরনের মন্তব্যের মাধ্যম্যে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজের তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে মর্মে শিক্ষক সমিতি মনে করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক হিসেবে তার এ ধরনের বক্তব্যে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ক্ষুব্ধ ও হতাশা ব্যক্ত করছে। প্রচারিত অডিও-এর বক্তব্যের বিষয়ে অনতিবিলম্বে উপাচার্য মহোদয়ের অবস্থান জানানোর জন্য অনুরোধ করছি। ’

শাপলা ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. মামুনুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান স্বাক্ষরিত অভিযোগপত্রে শিক্ষক নেতারা বলেন, ‘অভিওতে তার (উপাচার্যের) যে কথা এসেছে সেখানে তিনি তার সময়ের পূর্বে ইবির সকল শিক্ষক টাকার বিনিময়ে নিয়োগ পেয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।  

তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র, কর্মকর্তা, কর্মচারী, এমনকি নির্মাণকাজের সাথে জড়িত ঠিকাদাররা পর্যন্ত টাকা লেনদেনের সঙ্গে জড়িত।  

উল্লেখ্য, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া আরেকটি অডিওতে ভাইস-চ্যান্সেলর আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের নিয়োগ বোর্ডের প্রশ্ন আগেই ফাঁস করেছেন বলে প্রতীয়মান হয়। ’

‘প্রগতিশীল শিক্ষক সংগঠন শাপলা ফোরাম যখন মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে সর্বক্ষেত্রে অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রগতিশীলতার চর্চাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, তখন প্রধানমন্ত্রীর নিয়োগকৃত ভাইস-চ্যান্সেলরের এ মন্তব্য এবং কর্মকাণ্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তথা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। ইবির শিক্ষক, ছাত্র, কর্মকর্তা, কর্মচারী নিয়ে ঢালাওভাবে এ ধরনের মন্তব্য করা কোনোভাবেই কাম্য নয় এবং শাপলা ফোরাম এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে। ’

এর আগে বৃহস্পতিবার রাত থেকে সকাল পর্যন্ত ফারহা জেবিন নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে তিনটি অডিও পোস্ট করা হয়। এসব অডিওতে নিয়োগ নিয়ে ও নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন নিয়ে উপাচার্যকে বিভিন্ন কথা বলতে শোনা যায়। তবে অডিওটিতে অন্য প্রান্তের কোনো কথা শোনা যায়নি।  

অডিওতে একটি বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড বাতিল হওয়ার কারণ ও আগামীতে বোর্ড অনুষ্ঠিত হওয়া সম্পর্কে বিভিন্ন কথা বলা হয়েছে। এছাড়াও নিয়োগ প্রার্থীকে বিভিন্ন প্রশ্ন বলে দেওয়া হয়। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের নিয়োগ বোর্ড স্থগিতের ঘটনা নিয়ে এ আলোচনা করা হয়। অডিওতে ওই বিভাগের অলি নামের (সংক্ষিপ্ত নাম) এক শিক্ষক প্রার্থীর নাম ধরে সম্বোধন করতে শোনা যায়।

এ ঘটনায় শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে উপাচার্যের নির্দেশে ইবি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৩
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।