ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

বিদেশমুখিতায় সিলেটে কমেছে এসএসসি পরীক্ষার্থী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০২৩
বিদেশমুখিতায় সিলেটে কমেছে এসএসসি পরীক্ষার্থী প্রতীকী ছবি

সিলেট: ২০২১ সালে এসএসসিতে পরীক্ষার্থী ছিল ১ লাখ ২১ হাজার ১৬১ জন। পরের বছর (২০২২ সালে) ৪ হাজার ৬৪৩ জন পরীক্ষার্থী কমে গিয়ে অংশগ্রহণকারী ছিল ১ লাখ ১৬ হাজার ৪৮৮ জন।

আর গত বছরের তুলনায় এবছর আরও ৬ হাজার ৮৮ শিক্ষার্থী কমেছে সিলেট বোর্ডে। ফলে বোর্ডের অধীনে রোববার (৩০ এপ্রিল) এসএসসিতে বসছে এক লাখ ১০ হাজার ৪০২ জন শিক্ষার্থী।      

সিলেট বোর্ডে প্রতি বছর ধারাবাহিক পরীক্ষার্থী কমে যাওয়ায় এ অঞ্চলের বিদেশ গমনের প্রবণতাকে দায়ী করেছেন বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক অরুণ চন্দ্র পাল।  

তিনি বলেন, সিলেট বোর্ডে বিশেষ করে ছেলেদের বিদেশমুখিতার প্রবণতা বেশি। যে কারণে প্রতিবছর ছেলে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমছে। তাই ছেলেদের চেয়ে মেয়ে শিক্ষার্থী বেশি থাকে। তাছাড়া বোর্ডে বিজ্ঞান ও ব্যবসা শিক্ষায় পরীক্ষার্থী সংখ্যা খুবই কম। অথচ অন্যান্য বোর্ডে ঠিক এর উল্টো। ফলে এর প্রভাব পড়ে বোর্ডের ফলাফলে। এ অঞ্চলে বিদেশ গমনের প্রবণতা ও বিজ্ঞান শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের পড়তে আগ্রহী করে তুলতে তাগিদ দেন তিনি।  

তার মতে, আধুনিক যুগে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে সিলেট অঞ্চলে বিজ্ঞান ও ব্যবসা শিক্ষায় শিক্ষার্থী বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।

পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক অরুণ চন্দ্র পালের দেওয়া তথ্যমতে, এবার মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষায় বসছে ১ লাখ ১০ হাজার ৪০২ জন পরীক্ষার্থী। অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছেলে ৪৫ হাজার ৫৯৮ এবং মেয়ে ৬৪ হাজার ৮০৪ জন। তবে গত বছরের তুলনায় এবার পরীক্ষার্থী কমেছে ৬ হাজার ৮৮ জন। আগের বছর পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ১ লাখ ১৬ হাজার ৪৯০ জন শিক্ষার্থী।

বোর্ডের অধীনে এবার ৯৩১টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ১৪৯টি কেন্দ্রে পরীক্ষা দেবে। এরমধ্যে সিলেট জেলায় ৫৯টি, সুনামগঞ্জে ৩৩টি, মৌলভীবাজারে ২৬টি এবং হবিগঞ্জে ৩১টি।

বোর্ডের মধ্যে সিলেট জেলায় ৫৯টি কেন্দ্রে পরীক্ষায় বসবে ৩৫৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৪১ হাজার ৪২৯ জন পরীক্ষার্থী। এরমধ্যে ছেলে ১৭ হাজার ২৮৭ এবং মেয়ে ২৪ হাজার ১৪২ জন। হবিগঞ্জে ৩১টি কেন্দ্রে পরীক্ষা দেবে ১৬৬ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ২০ হাজার ৫৪২ পরীক্ষার্থী। এরমধ্যে ছেলে ৮ হাজার ৩৮১ এবং মেয়ে ১২ হাজার ১৬১ জন। মৌলভীবাজার জেলায় ২৬ কেন্দ্রে হবে পরীক্ষা। এই জেলায় ১৮৭ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ২৪ হাজার ৭৪৫ জন শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। এরমধ্যে ছেলে ৯ হাজার ৯৪১ এবং মেয়ে ১৪ হাজার ৯০৪ জন। সুনামগঞ্জে ২২০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ২৩ হাজার ৬৮৬ জন শিক্ষার্থী ৩৩টি কেন্দ্রে পরীক্ষায় বসবে। এরমধ্যে ছেলে ১০ হাজার ৮৯ এবং মেয়ে ১৩ হাজার ৫৯৭ জন।    

এবার বিজ্ঞান বিভাগে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২৩ হাজার ২৪০ জন। এরমধ্যে ছেলে ১০ হাজার ২১২ এবং মেয়ে ১৩ হাজার ২৮ জন। মানবিক বিভাগে সর্বাধিক ৮০ হাজার ১৫ পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। এরমধ্যে ছেলে ৩১ হাজার ৬৯৮ এবং মেয়ে ৪৮ হাজার ৩১৭ জন। আর ব্যবসা শিক্ষায় ৭ হাজার ৩২৫ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। এরমধ্যে ছেলে ৩ হাজার ৬৮৮ এবং মেয়ে ৩ হাজার ৪৫৯ জন।

বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক অরুণ চন্দ্র পাল আরও বলেন, পরীক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট সময় সাড়ে ৯টার আগে পরীক্ষার হলে নিজ নিজ আসনে উপস্থিত থাকতে হবে। পরীক্ষায় মোবাইলফোনসহ কোনো ধরনের ডিভাইস ব্যবহার করা যাবে না। শুধুমাত্র কেন্দ্র সচিব স্মার্টফোন নয়, ফিচার ফোন সঙ্গে রাখতে পারবেন। ওই ব্যক্তি ছাড়া অন্য কেউ মোবাইল ব্যবহার করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়া প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দফতর থেকে অনুমতি নিলে বাড়তি সুবিধা পাবেন তথা ২০ মিনিট সময় বাড়িয়ে দেওয়া হবে। পাশাপাশি সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষার কাজ তদারকের জন্য ভিজিল্যান্স টিম ও স্পেশাল ভিজিল্যান্স টিম গঠন করা হয়েছে। এছাড়া খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম।

 রুটিন অনুযায়ী রোববার (৩০ এপ্রিল) বাংলা (আবশ্যিক) ১ম পত্র দিয়ে পরীক্ষা শুরু হবে। পরবর্তী পরীক্ষাগুলো হলো- ২ মে মঙ্গলবার বাংলা (আবশ্যিক) ২য় পত্র, ৩ মে বুধবার ইংরেজি (আবশ্যিক) ১ম পত্র, ৭ মে রোববার ইংরেজি (আবশ্যিক) ২য় পত্র, ৯ মে মঙ্গলবার গণিত (আবশ্যিক), ১০ মে বুধবার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, ১১ মে বৃহস্পতিবার ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা-হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা-বৌদ্ধ ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা-খ্রিস্টধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, ১৪ মে রোববার পদার্থবিজ্ঞান (তত্ত্বীয়)-বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা-ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং, ১৫ মে সোমবার গার্হস্থ্য বিজ্ঞান (তত্ত্বীয়)-কৃষিশিক্ষা (তত্ত্বীয়),১৬ মে মঙ্গলবার রসায়ন (তত্ত্বীয়)-পৌরনীতি ও নাগরিকতা, ব্যবসায় উদ্যোগ, ১৭ মে বুধবার ভূগোল ও পরিবেশ, ১৮ মে বৃহস্পতিবার জীববিজ্ঞান (তত্ত্বীয়)-অর্থনীতি-বিজ্ঞান-উচ্চতর গণিত(তত্ত্বীয়), ২২ মে সোমবার হিসাব বিজ্ঞান এবং ২৩ মে মঙ্গলবার বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়। এছাড়া ২৪ মে বুধবার থেকে ৩০ মে মঙ্গলবার পর্যন্ত সব বিষয়ের ব্যবহারিক পরীক্ষা স্ব স্ব কেন্দ্রে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে অনুষ্ঠিত হবে।

পরীক্ষা সম্পন্নের পর অনলাইনে নম্বর এন্ট্রি করতে হবে এবং ফাইনাল সাবমিট করে ৬ জুন মঙ্গলবারের মধ্যে হাতে হাতে ফাইনাল প্রিন্ট কপি, ব্যবহারিক উত্তরপত্র, স্বারকলিপি ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাগজপত্রাদি রোল নম্বরের ক্রমানুসারে সাজিয়ে পরীক্ষা শাখায় (মাধ্যমিক) জমা দিতে হবে। ব্যবহারিক পরীক্ষায় কেবল ব্যবহারিক উত্তরপত্র ব্যবহার করতে হবে। কোনোক্রমে তত্ত্বীয় পরীক্ষার মূল উত্তরপত্র ব্যবহার করা যাবে না।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০২৩
এনইউ/এসএ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।