ঢাকা, শনিবার, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ১১ মে ২০২৪, ০২ জিলকদ ১৪৪৫

শিক্ষা

প্রস্তুতি নিয়েও পরীক্ষায় বসা হচ্ছে না সুমাইয়ার!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১১ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০২৩
প্রস্তুতি নিয়েও পরীক্ষায় বসা হচ্ছে না সুমাইয়ার!

পঞ্চগড়: সবধরনের প্রস্তুতি নিলেও মাদরাসা কর্তৃপক্ষের ভুলে পরীক্ষায় বসা হচ্ছে না দাখিল পরীক্ষার্থী সুমাইয়ার।

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার শিলাইকুঠি বালাবাড়ি দাখিল মাদরাসার ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার।

মাস তিনেক আগে দাখিল পরীক্ষার জন্য ফরম পূরণ করেন। ফরম পূরণের জন্য মাদরাসা কর্তৃপক্ষ তার কাছ থেকে ২৫০০ টাকা আদায় করে।  

শনিবার (২৯ এপ্রিল) মাদরাসায় প্রবেশপত্র দেওয়ার কথা। সেই প্রবেশপত্র আনতে যান সুমাইয়া। প্রবেশপত্রের জন্য অন্যদের মতো মাদরাসা কর্তৃপক্ষকে ৫০০ টাকাও দেন তিনি। কিন্তু প্রবেশপত্র নিতে গিয়ে দেখেন, তার নামে কোনো প্রবেশপত্রই আসেনি! পরে জানতে পারেন, তার ফরম পূরণই করেনি মাদরাসা কর্তৃপক্ষ।  

তার বদলে ভুল করে দুই বছর আগে বিয়ে হয়ে লেখাপড়া থেকে ছিটকে পড়া সুরাইয়া নামের এক ছাত্রীর ফরম পূরণ করে দিয়েছেন তারা। শুরুতে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না এই পরিক্ষার্থী। পরে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর, তার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে। মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন এই পরীক্ষার্থী। ভেঙে পড়েন তার পরিবারের সদস্যরাও।  

বিষয়টি জানাজানি হলে পুরো এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। স্থানীয়রা মাদরাসা কর্তৃপক্ষের এমন দায়িত্বহীন কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানান।

সুমাইয়ার বড় বোন মোর্শেদা আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, মাদরাসায় গিয়ে প্রবেশপত্র আনতে গিয়ে যখন আমার বোন জানতে পারে যে, তার ফরম পূরণ হয়নি, তারপর থেকে সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। এখন সে যদি কোনো অঘটন ঘটিয়ে ফেলে, এর দায় কে নেবে? যে টাকা দিয়েছে, তার ফরম পূরণ না করে তারা যে লেখাপড়া বাদ দিয়েছে, তার ফরম পূরণ করে দিয়েছে। কয়েক মাস আগে ফরম পূরণ হয়েছে। তখনও তারা নিজেদের ভুল ধরতে পারেনি। আর প্রবেশপত্র আসার পরেও তারা টাকা নেওয়ার জন্য তা খুলে দেখেনি। এখন আমার বোন যদি পরীক্ষা দিতে না পারে, এর দায় কে নেবে? দশ বছর লেখাপড়া করে দাখিল পরীক্ষার যে স্বপ্ন দেখেছিল সে, তা বুঝি আর পূরণ হলো না!

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মাদরাসার সুপার বদরুল আলম সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সুমাইয়ার পরিবর্তে ভুলক্রমে সুরাইয়া নামে এক ছাত্রীর ফরম পূরণ হয়ে গেছে। আমরা আজকেই বিষয়টি জানতে পেরেছি। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। দেখি কী করা যায়।  

তবে এই ভুলের দায়ভার কার? এমন প্রশ্নের জবাব দিতে পারেননি এই প্রতিষ্ঠান প্রধান।

তেঁতুলিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শওকত আলী বাংলানিউজকে বলেন, এটি প্রতিষ্ঠান প্রধানের গাফিলতি। প্রবেশপত্র এসেছে অন্তত দুই সপ্তাহ আগে। তারা খুলেছে আজ (২৯ এপ্রিল)। এই শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে না পারলে, এর দায় দায়িত্ব প্রতিষ্ঠান প্রধানের। আমি সুপারকে নির্দেশ দিয়েছি, যেভাবেই হোক ওই শিক্ষার্থী যেন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে, সেই ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।

জানা যায়, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সুমাইয়া তেঁতুলিয়া উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের সরকারপাড়া এলাকার গোলাম মোস্তফার মেয়ে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০২৩
এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad