ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

‘ডিম পাড়ে হাঁসে, খায় বাগডাশে’ কুমিল্লা বোর্ডের বাংলা প্রশ্ন নিয়ে মিম, হাস্যরস

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০২৩
‘ডিম পাড়ে হাঁসে, খায় বাগডাশে’ কুমিল্লা বোর্ডের বাংলা প্রশ্ন নিয়ে মিম, হাস্যরস প্রতীকী ছবি, ইনসেটে সেই প্রশ্ন

কুমিল্লা: চলমান এইচএসসিতে কুমিল্লা বোর্ডের বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষায় আসা একটি প্রশ্নের উদ্দীপক নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।  

প্রশ্নটি নিয়ে অনেকে মিম বানিয়েছেন, এ নিয়ে ব্যাপক হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে।

কেউ কেউ আবার প্রশ্নটি নিয়ে যারা রসিকতা করছেন তাদের ধুয়ে দিচ্ছেন। কেউ কেউ আবার এমন প্রশ্নের জন্য কুমিল্লা বোর্ডকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

তবে কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. আসাদুজ্জামান বলেছেন, এটি কোনো ঘটনা নয়। লালসালু উপন্যাসের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক করেই প্রশ্ন প্রণীত হয়েছে।  

বাংলা প্রথম পত্রের নয় নম্বর প্রশ্নের ওই উদ্দীপকে ফেরদৌস হোসেন ভূঁইয়ার লেখা গানের অংশবিশেষ জুড়ে দেওয়া হয়। উদ্দীপকে উল্লেখ ছিল,‘ডিম পাড়ে হাঁসে, খায় বাগডাশে/ বুঝছোনি ভাই বুঝছোনি, আসল কথা বুঝছোনি?/ এক গেরামের গরিব চাষি কালা মিয়া নাম/ সবার পেটে ভাত জুটাইতে ক্ষেত্রে ঝরায় ঘাম/ ও তার ছাওয়াল কান্দে ক্ষুধার জ্বালায়/ মহাজনরা হাসে। / ডিম পাড়ে হাঁসে, খায় বাগডাশে। ’

উদ্দীপক অনুসারে ‘গ’ ও ‘ঘ’ প্রশ্ন করা হয়। ‘গ’ প্রশ্নে ছিল -‘উদ্দীপকের ‘হাঁস’ ও ‘বাগডাশে’র সঙ্গে  ‘লালসালু’ উপন্যাসের কোন কোন চরিত্রের মিল পাওয়া যায় এবং কীভাবে তা সাদৃশ্যপূর্ণ? 

‘ঘ’ প্রশ্নে উল্লেখ করা হয়, জমিদার, মুৎসুদ্দি শ্রেণির বিলোপ হলেও আধুনিক পীর প্রথা সেই স্থান দখল করে আছে। - বক্তব্যটি উদ্দীপক ও ‘লালসালু’ উপন্যাস অবলম্বনে বিচার করো।

মূলত এ উদ্দীপক ও উদ্দীপক থেকে দুটি প্রশ্ন করা নিয়ে ফেসবুকে মিম ও রিলস তৈরি করা হয়েছে। মিম ও রিলসে জুড়ে দেওয়া হয়েছে প্রতিবাদী গণসংগীত 'ডিম পাড়ে হাঁসে খায় বাগডাশে’ গানটিসহ আরো নানান ছবি।  

এছাগা ইতিবাচক ও নেতিবাচক মন্তব্য চালাচালি চলছে বিভিন্ন পেজ ও অ্যাকাউন্টে।

বেলাবোস নামে একটি পেজে লেখা হয়েছে, ‘‘ডিম পাড়ে হাঁসে, খায় বাগডাশে’ কীভাবে খায়? কুমিল্লা বোর্ডের কাছে প্রশ্ন!’

জান্নাত আক্তার নামে একজন লিখেছেন, ‘‘ডিম পাড়ে হাঁসে, খায় বাগডাশে’। যে বাগডাশটায় ডিমটা খেলো সেটার কি খবর? না, মানে খুঁজে পাওয়া কি গেছে সেই বাগডাশটাকে? যেহেতু আমাদের পরীক্ষা শেষ। কুমিল্লা বোর্ডের কাছে জানতে চাইছিলাম!’

নাজমিন জাহান সামিয়া নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী এ নিয়ে নিজের বিস্তারিত মতামত দিয়েছেন।  বিষয়টি নিয়ে ট্রল, মিম তৈরি থেকে বিরত থাকতে বলেছেন তিনি।

সামিয়া লিখেছেন,‘‘ডিম পাড়ে হাঁসে,খায় বাগডাশে। ’উক্তিটি আমাদের সমাজের বর্তমান সময়েরও বাস্তব চিত্র তুলে ধরে। আর লালসালু উপন্যাসের পুরো কাহিনির মূলভাবই ব্যক্ত করে। গ্রামের মানুষের শ্রমের ফসল, কষ্টে উপার্জিত অর্থ  ধুর্তবাজ মজিদরা তাদের ধর্মান্ধতার সুযোগ নিয়ে চোখে ধুলা দিয়ে নিজের গোলা ভরায়। সৃজনশীল মানেই হচ্ছে  নিজের চিন্তা চেতনা থেকে কিছু সৃষ্টির চেষ্টা। কুমিল্লা বোর্ডে আসা এই সাধারণ প্রশ্ন বোঝার ক্ষমতা একজন এইচএসসি পরীক্ষার্থী অবশ্যই রাখে। তাই এমন প্রশ্ন নিয়ে ট্রল করে, কুমিল্লা বোর্ড থেকে পাস করে আসছি মানে আমরা একদম বুদ্ধিজীবী এমন ফালতু পোস্ট করে নিজেকে গাধা প্রমাণ করা থেকে বিরত থাকুন। ’

স্পর্শ বনিক নামে একজন এমন প্রশ্নের জন্য কুমিল্লা বোর্ডকে ধন্যবাদ দিয়েছেন।

তিনি লিখেন, ‘‘ডিম পাড়ে হাঁসে, খায় বাগডাশে’ বহুল প্রচারিত একটি প্রবাদ। এর অর্থ, শুভঙ্করের ফাঁদে সরল মানুষের কষ্টার্জিত সম্পদ গরল মানুষের ভোগের জন্য ব্যবহৃত হয়। দেখেছেন কত কঠিন একটা ভাবনা থেকে কুমিল্লা বোর্ডে প্রশ্ন করা হয়? কুমিল্লা বোর্ডের প্রশ্ন নিয়ে কাল থেকে বিতর্ক হচ্ছে। কিন্তু কেউ এর ভাবটাই বুঝে উঠতে পারেনি। বাস্তবতা নির্ভর এই প্রবাদটি দিয়েই প্রশ্ন করা হয়েছে। আর যা আমাদের হাস‍্যরসের সৃষ্টি করেছে। কুমিল্লা বোর্ডের পরীক্ষার্থী হিসেবে আমি গর্বিত। এত ভালো একটা বিষয়বস্তুকে সৃজনশীল প্রশ্নের উদ্দীপক করার জন‍্য সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন‍্যবাদ। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০২৩
এসএএইচ


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।