ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

শিক্ষাখাতে কথা রাখেননি অর্থমন্ত্রী

মাজেদুল নয়ন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৭ ঘণ্টা, জুন ৭, ২০১২
শিক্ষাখাতে কথা রাখেননি অর্থমন্ত্রী

ঢাকা : প্রস্তাবিত ২০১২-১৩ অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষাখাতের চিত্র হতাশাজনক। শিক্ষাখাতে এ বছর বরাদ্দ বেড়েছে।

তবে নতুন কোনো প্রকল্পের কথা বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত যেমন বলেননি, তেমনি পুরোনো প্রকল্পগুলোর বর্তমান অবস্থাও তুলে ধরেননি।

অর্থমন্ত্রী গত বাজেটে যেসব কথা দিয়েছিলেন, সেগুলোও প্রতিফলিত হয়নি এ বাজেটে।

বিশেষ করে শিক্ষকদের মান্থলি পেমেন্ট ওর্ডার (এমপিও), বেসরকারি রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণসহ আরো বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে আগ্রহ ছিল শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের।

অনুন্নয়ন ও উন্নয়ন ব্যয় মিলিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্যে মোট বরাদ্দ ২১ হাজার ৪০৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্যে বরাদ্দ ৯ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্যে বরাদ্দ ১১ হাজার ৫৮৩ কোটি টাকা।

গত ২০১১-১২ অর্থবছরে শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা খাতে উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন মিলিয়ে মোট ১৯ হাজার ৮৩৭ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব ছিল। এ বছর প্রস্তাবিত বরাদ্দ গত বছরের চেয়ে ১ হাজার ৫৭১ কোটি টাকা বেশি।

বরাদ্দ বাড়লেও কোনো নতুন প্রকল্পের কথা উল্লেখ করা হয়নি প্রস্তাবিত বাজেটে। ২০১১-১২ অর্থবছরে যেসব প্রকল্পের উল্লেখ করা হয়েছিল, সেগুলোর বর্তমান অবস্থাও উল্লেখ করেননি অর্থমন্ত্রী।

গত ২০১১-১২ অর্থবছরে আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেছিলেন, ‘বেশ কয়েক বছর বন্ধ থাকার পর ২০০৯-১০ অর্থবছরে একটি স্বচ্ছ নীতিমালার ভিত্তিতে ১ হাজার ৬২৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। নির্দিষ্ট কিছু মানদণ্ডে উন্নীত আরো প্রায় ১ হাজার স্কুল ও মাদ্রাসাকে আগামী অর্থবছরে এমপিওভুক্ত করা হবে। ’

কিন্তু অর্থমন্ত্রী এ অর্থবছরে সে কথা রাখেননি। এমপিওভুক্তির কোনো কথাই উল্লেখ করেননি অর্থমন্ত্রী।

প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্য দূরীকরণ ও গুণগত উৎকর্ষ সাধনের জন্যে দেশব্যাপী সৃজনশীল প্রতিভা অন্বেষন নীতিমালা’ ২০১২ চূড়ান্ত করা হয়েছে, উল্লেখ করে আগামী বছর থেকে এ উদ্যোগেরও সফল বাস্তবায়ন শুরু করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী।

এ ব্যাপারে অর্থমন্ত্রী গতবারের বাজেটে বলেছিলেন, আমরা আগামী বছরে দেশব্যাপী সৃজনশীল প্রতিভা অন্বেষণের একটি বিশেষ কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছি। এ কার্যক্রমের আওতায় ভাষা ও সাহিত্য, গণিত, বিজ্ঞান ও কম্পিউটার বিষয়ে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায় থেকে প্রতিভা অন্বেষণ করা হবে।

২০১২-১৩ অর্থবছরের বাজেটে অর্থমন্ত্রী ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় একটি ট্রাস্ট ফান্ড’ গঠনের যে উদ্যোগের কথা বলেছেন, ২০১১-১২ অর্থবছরেও এই ফাউন্ডেশন গঠনের কথা বলেছিলেন তিনি।

বাজেটে উচ্চ শিক্ষা সর্ম্পকে বরিশাল, গোপালগঞ্জ ও রাঙামাটিতে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের যে কাজ শুরু করার কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী, তাও গত ২০১১-১২ অর্থবছরের বাজেটের পুনরাবৃত্তি। এছাড়াও রংপুর ও পাবনায় স্থাপিত দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কথাও গত বছরের।

২০১১-১২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী ৩ হাজার বেসরকারি স্কুলের একাডেমিক ভবন নির্মাণ, মাদ্রাসা শিক্ষার আধুনিকায়নের জন্য ৩০টি মডেল মাদ্রাসা গড়ে তোলা ও ৩১টি মাদ্রাসায় অনার্স কোর্স চালু করার উদ্যোগ, ১ হাজার মাদ্রাসায় ভবন নির্মাণের কথা বললেও ২০১২-১৩ অর্থবছরে এ উদ্যোগগুলোর বর্তমান অবস্থা উল্লেখ করেননি।

শিক্ষা খাতে গত অর্থবছরে উল্লেখিত আরো যেসব বিষয়ের কথা অর্থমন্ত্রী উল্লেখ করেননি, তার মধ্যে রয়েছে, শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার   বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষার প্রসার। এছাড়াও প্রতি উপজেলায় পর্যায়ক্রমে একটি করে টেকনিক্যাল স্কুল স্থাপন, বিদ্যালয়বিহীন এলাকায় ১ হাজার ৫০০ প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন, সিডরসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় শিক্ষা কার্যক্রম ও হাওর/বাঁওড় এলাকা এবং দুর্গম ও পিছিয়ে পড়া অঞ্চলের শিশুদের শিক্ষা কার্যক্রমের বর্তমান অবস্থা উল্লেখ করেননি।

বাংলাদেশ সময় : ২০৪১ ঘণ্টা, জুন ০৭, ২০১২
এমএন/ সম্পাদনা : অশোকেশ রায়, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।