ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

নতুন শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীদের কৌতূহলী করে তুলবে: শিক্ষামন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০২৩
নতুন শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীদের কৌতূহলী করে তুলবে: শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, ফাইল ফটো

ঢাকা: নতুন শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীদের অনুসন্ধিৎসু ও কৌতূহলী করে তুলবে, যা সমৃদ্ধির বাংলাদেশ গড়তে অবদান রাখবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

নতুন কারিকুলাম নিয়ে বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) রাজধানীর একটি হোটেলে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা জানান।

 

অনুষ্ঠানে শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ, সংসদ সদস্য ও সিনিয়র সাংবাদিকরা বক্তব্য দেন।  

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ২০১৭ সাল থেকে দীর্ঘসময় ধরে নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে কাজ করা হয়েছে। এ সময়ে ছয়টি গবেষণা হয়েছে। ১০২টি দেশের শিক্ষাক্রম পর্যালোচনা করা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পৃক্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এ কারিকুলাম পরিমার্জনে বেশকিছু সংযোজন-বিয়োজন করে অনুমোদন দিয়েছেন। নতুন শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীদের অনুসন্ধিৎসু ও কৌতূহলী করে তুলবে, যা সমৃদ্ধির বাংলাদেশ গড়তে অবদান রাখবে।

দীপু মনি বলেন, কওমি মাদরাসায় এখনো আমরা প্রবেশ করতে পারিনি। তবে আমরা আশা করি, নতুন শিক্ষাক্রম ও বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা নিয়ে আমরা সেখানে প্রবেশ করতে পারব। ধীরে ধীরে কওমি মাদরাসাকে মূলধারার শিক্ষায় নিয়ে আসার চেষ্টা করা হবে।

নতুন শিক্ষাক্রমে অভিভাবকদের বাড়তি খরচের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনেক কাজ শিক্ষার্থীরা করছে। এতে অভিভাবকদের যে বিভিন্ন কিছু কিনে দিতে হচ্ছে, সেটা আমরাও জেনেছি। এখন শিক্ষকরা যেসব কাজ দিচ্ছে, তা অনেক সময় না বুঝেও অতিরিক্ত দিয়ে দিতে পারে। প্রশিক্ষণে তাদের এ বিষয়ে আরো সুস্পষ্ট ধারণা দিলে সেভাবে কাজ করাতে পারবে তারা। আশা করি, তখন অভিভাবকের খরচের চাপটা কমবে।

অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, নতুন যে কারিকুলাম শুরু করতে যাচ্ছি, সেটি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীও অবগত রয়েছেন। আমরা নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এগিয়ে যাব, এটাই আমাদের লক্ষ্য। নতুন কারিকুলামের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের একটি রূপান্তরের মধ্য দিয়ে নিয়ে যেতে হবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয় বা বিশ্ববিদ্যালয় আগে ছিল জ্ঞান অর্জনের জায়গা, এখন তা বদলে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জনের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।

সিনিয়র সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, শিক্ষকরা এ পেশায় থাকতে চায় না। তারা প্রশাসন, পুলিশসহ অন্যান্য ক্যাডারে যেতে চান। একজন শিক্ষক কেন অন্য ক্যাডারে চলে যায় সে বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে। শিক্ষার ঘরটা এখন পোক্ত। শিক্ষক-শিক্ষা নড়বড়ে, এটা থেকে আমাদের বের হওয়া জরুরি ছিল। শিক্ষার সেই রূপান্তর প্রক্রিয়ার শুরুটা দেখছি আমরা। এ ধারা অব্যাহত রাখতে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন হলো রাজনৈতিক নেতৃত্ব। রাজনৈতিক নেতৃত্ব ছাড়া কোনো রূপান্তর হবে না, হয়ও না। কেউ যদি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক, অমুক-তমুক, তৃতীয় শক্তি। আমি বলব- তাদের দিয়ে কোনো রূপান্তর সম্ভব নয়।

শিক্ষার রূপান্তরে দুটি জিনিস গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, একটা হলো- সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ, দ্বিতীয়টি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। এ দুটি যেন মূলভিত্তি হিসেবে থাকে। সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ ঠিক থাকলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধরে পথ হাঁটবে তরুণ প্রজন্ম।

সভায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মশিউর রহমান ব্লেন্ডেড অ্যাডুকেশন ও শিক্ষকদের স্বতন্ত্র বেতন কাঠামোর পক্ষে বক্তব্য দেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল হালিম বলেন, নতুন কারিকুলামের যেসব সুবিধা রয়েছে, তা সবাইকে জানাতে-বোঝাতে হবে। কাজটা করার প্রধান দায়িত্ব আমাদের শিক্ষকদের।

অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, এনসিটিবির চেয়ারম্যান মো. ফরহাদুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০২৩
এমআইএইচ/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।