ঢাকা: মানসম্পন্ন উচ্চশিক্ষা এবং এর কৌশলগত পরিকল্পনা (২০১৮-২০৩০) বাস্তবায়ন করতে হলে জাতীয় বাজেটে এ খাতের বরাদ্দ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর।
দেশের উচ্চশিক্ষার সংকট সমাধানে ২০৩০ সালের মধ্যে উচ্চশিক্ষাখাতে বরাদ্দ মোট বাজেটের ছয় শতাংশ বাড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বাজেট প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন’ শীর্ষক কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
ইউজিসির অর্থ ও হিসাব বিভাগ শনিবার (১৮ নভেম্বর) দিনব্যাপী এ কর্মশালা আয়োজন করে। ইউজিসির অর্থ ও হিসাব বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহেরের সভাপতিত্বে কর্মশালায় কমিশনের অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. রেজাউল করিম হাওলাদার স্বাগত বক্তব্য দেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর আলমগীর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। সেই অনুপাতে উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে বাজেট বরাদ্দ বাড়ানো হয়নি।
তিনি আরও বলেন, ইউজিসি প্রণীত ‘অভিন্ন আর্থিক নীতিমালা’সব বিশ্ববিদ্যালয়ে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আর্থিকখাতে শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে ইউজিসি ইতোমধ্যে এ নীতিমালা সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে। এটি আর্থিক খাতে ‘আমব্রেলা নীতিমালা' হিসেবে কাজ করবে। এর মাধ্যমে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিয়ম বন্ধ হবে এবং অডিট আপত্তির খড়্গ থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে বলে তিনি মনে করেন।
সভাপতির বক্তব্যে প্রফেসর আবু তাহের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থ ব্যয়ে সরকারি বিধি-বিধান যথাযথভাবে অনুসরণ ও প্রতিপালনের জন্য হিসাব পরিচালকসহ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, সরকারি বিধি-বিধার না মানলে অডিট আপত্তি বাড়তে থাকবে।
তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ অনুসরণ এবং যথাযথ যোগ্যতা ব্যতীত নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদোন্নয়র না দেওয়ার পরামর্শ দেন।
এছাড়া অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবিধা (অডিট আপত্তিযোগ্য) দেখিয়ে নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের অবৈধ সুবিধা না দেওয়ার আহ্বান জানান।
এই অতিরিক্ত সুবিধার অডিট আপত্তি হলে বিশ্ববিদ্যালয় এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে এর দায়ভার বহন করতে হবে বলে তিনি জানান।
প্রফেসর আবু তাহের তার বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সরকারি অর্থের সদ্ব্যবহার এবং আর্থিক খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে সব লেনদেন ইএফটির মাধ্যমে করার পরামর্শ দেন। এছাড়া ইউজিসি প্রতিবছর আর্থিক বিষয়ে যেসব পরিপত্র জারি করে সেগুলো যথাযথ বাস্তবায়ন পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
এছাড়া সরকারি রাজস্ব বাজেটের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এনডাউমেন্ট ফান্ড গঠনের পরামর্শ দেন।
ইউজিসির অর্থ ও হিসাব বিভাগের উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহামানের উপস্থাপনায় কর্মশালায় দেশের ৫৪টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব বিভাগের প্রধান এবং বাজেট শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত মোট ১০৫ জন কর্মকর্তার অংশ নেন। দিনব্যাপী এ কর্মশালায় নতুন ফরম্যাট অনুযায়ী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বাজেট প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সেশন পরিচালনা করেন অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. রেজাউল করিম হাওলাদার, উপপরিচালক (বাজেট) মো. এমদাদুল হক ও মো. হাফিজুর রহমান।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০২৩
এমআইএইচ/এএটি