ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের সামনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে। মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক দিলীপ রায়ের অভিযোগ, সংঘর্ষে জোটের সাতজন আহত হয়েছেন।
গুরুতর আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ছাত্র ইউনিয়নের ঢাবি শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসু।
একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, পাহাড়ে চার নেতার মৃত্যুর প্রতিবাদে কর্মসূচি পালন করছিল ছয়টি বাম সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট। মিছিল করে তারা রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নেয়।
এক পর্যায়ে জোটের কয়েকজন নেতাকর্মী ভাস্কর্যের সামনে রাখা ‘মেট্রো অ্যাট টিএসসি: থ্যাঙ্ক ইউ শেখ হাসিনা’ লেখা ব্যানারে ভাঙচুর করেন। এতে টিএসসিতে থাকা ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার সাধারণ তানভীর হাসান সৈকতসহ বিভিন্ন হলের নেতাকর্মীরা বাম নেতাদের ওপর হামলা করেন। পরে নেতাদের শাহবাগ পর্যন্ত ধাওয়া করেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।
প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্রলীগের বিজয় একাত্তর হলের সাংগঠনিক সম্পাদক রাব্বি আহম্মেদ বলেন, বাম সংগঠনগুলো মশাল মিছিল করছিল। মিছিলটি রাজু ভাস্কর্যের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় তারা ‘মেট্রো অ্যাট টিএসসি: থ্যাঙ্ক ইউ শেখ হাসিনা’ লেখা ছাত্রলীগের ব্যানারে ভাঙচুর করে। পরে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের মারধর করেন।
বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক দিলীপ রায় বলেন, পাহাড়ে আমাদের চারজন কমরেড মারা গেছেন। তারা বিভিন্ন সময় বাম সংগঠনের নেতৃত্বে ছিলেন। তাদের মৃত্যুর প্রতিবাদে আমরা মিছিল বের করলে ছাত্রলীগ বাধা দেয়। মিছিল শেষে আমাদের নেতাকর্মীরা রাজু ভাস্কর্যে ‘মেট্রো অ্যাট টিএসসি: থ্যাঙ্ক ইউ শেখ হাসিনা’ ব্যানারের নিচে অবস্থান নেন। এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করেন।
ব্যানার ভাঙার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছাত্রলীগের নেতারাই ব্যানার ভেঙেছেন।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বাংলানিউজকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আবেগ-অনুভূতির জায়গা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। টিএসসিতে মেট্রোরেল স্টেশন উদ্বোধন উপলক্ষে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে শিক্ষার্থীরা ‘মেট্রো অ্যাট টিএসসি: থ্যাঙ্ক ইউ শেখ হাসিনা’ ব্যানার লাগিয়েছেন। সেই ব্যানারে বাম সংগঠনগুলোর হামলা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক। ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, তাদের হামলায় বিশ্ববিদ্যালয় উত্তাল হয়ে উঠেছে। ক্ষমা না চাইলে শিক্ষার্থীরা বাম সংগঠনগুলোকে বয়কট করবেন। ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করবেন। পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার সামর্থ্য আমাদের নেই।
ঘটনার পর তাৎক্ষণিক রাজু ভাস্কর্যের থেকে শাহবাগ পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করে ছাত্রলীগ। এতে ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার জগন্নাথ হল, বিজয় একাত্তর হল, কবি জসীম উদ্দীন হল, অমর একুশে হল, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ হলসহ কয়েকটি হল অংশগ্রহণ করে। মিছিল পরবর্তী সমাবেশে তারা বাম সংগঠনগুলোকে ঢাবি ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে। একইসঙ্গে ১৩ ডিসেম্বর দুপুর ১২টায় প্রক্টর বরাবর হামলার বিচার চেয়ে স্মারক জমা দেবেন ছাত্রলীগের এ নেতাকর্মীরা।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০২৩
আরএইচ/এইচএ