ঢাকা: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সরকারের পট পরিবর্তনের পর জোর করে পদত্যাগ করানো অধ্যক্ষকে ফিরিয়ে আনতে এবার বিক্ষোভ করেছেন ঢাকা সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা। তারা অবৈধভাবে চেয়ারে বসা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. নেয়ামুল হক ও উপাধ্যক্ষ মোখলেছুর রহমানের পদত্যাগেরও দাবি করেছেন।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) বেলা ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা পাঁচ দফা দাবি আদায়ে সিটি কলেজের সামনের রাস্তায় বিক্ষোভ শুরু করেন।
এতে সায়েন্সল্যাব এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে সেনাবাহিনীর চেষ্টায় প্রায় এক ঘণ্টা পর গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক হয়। পরে শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধিদল ‘অবৈধ’ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের পদত্যাগসহ পাঁচ দফা দাবিতে কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, গত ৭ আগস্ট অধ্যক্ষ বেদর উদ্দিনকে জোর করে পদত্যাগপত্রে সই নিয়ে ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক মো. নেয়ামুল হক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে চেয়ারে বসেন। ওই দিনই তিনি কলেজের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক মোখলেছুর রহমানকে কলেজের উপাধ্যক্ষ নিয়োগ দেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের পদ দখল করতে কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক মো. নেয়ামুল হক বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের নিয়ে এসে জোর করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদে বসেন। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নেয়ামুল হক গত ১১ আগস্ট অফিস আদেশে অধ্যক্ষ এবং ছয় শিক্ষককে কলেজে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। এই ছয় শিক্ষক হলেন—বাংলা বিভাগের মো. দেলোয়ার হোসেন, মনোবিজ্ঞান বিভাগের ফরিদা পারভীন, ভূগোল বিভাগের চৈতালী হালদার, হিসাববিজ্ঞান বিভাগের আহসান হাবিব ও কায়কোবাদ সরকার এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের আল ফয়সাল আকতার।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কলেজের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের ‘জনপ্রিয়’ শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর আলম সুমনকে মিথ্যা অভিযোগে তিন মাসের জন্য বরখাস্ত করার অভিযোগও তুলেছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আড়াই-তিন মাসের মধ্যে ১৬ জন শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের এসব কর্মকাণ্ড নিয়ে ক্ষোভ থেকে এই আন্দোলন বলে জানান তারা।
শিক্ষার্থীরা অবৈধভাবে চেয়ারে বসা অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষকে আজকের (সোমবার) মধ্যে চেয়ার ছাড়া; আজকের মধ্যেই বৈধ অধ্যক্ষকে পুনর্বহাল করা; বরখাস্তকৃত শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম সুমনকে আজকের মধ্যে সসম্মানে প্রতিষ্ঠানে ফেরত আনা; কলেজ সংস্কারের নামে শিক্ষকদের প্রতিহিংসামূলক নোংরা রাজনীতি বন্ধ করা এবং অভিভাবক হয়রানি বন্ধ করার দাবি জানান।
এ ছাড়াও ফলাফলের অজুহাতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জোর করে টাকা আদায় বন্ধ এবং অতিরিক্ত ক্লাসের নামে ব্যবসায়িক কোচিং সেন্টারের মতো ক্লাস বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০২৪
এমআইএইচ/এমজেএফ