ঢাকা: তিন দফা দাবি পূরণের বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়ায় আন্দোলন থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের পক্ষে ছাত্র সংগঠক একেএম রাকিব ও তৌসিফ মাহমুদ সোহাগ।
তিন দফা দাবির বিষয়ে মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে শিক্ষা এবং পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তারা এ কথা জানান।
বৈঠকে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ শিক্ষার্থী-শিক্ষক প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিব বলেন, আমরা দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরের জন্য সপ্তাহ ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসছি। সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দিয়েছি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় আজ আমাদের নিয়ে জরুরি মিটিং করেছে। মিটিংয়ে আমাদের দাবি-দাওয়া ও বিশ্ববিদ্যালয়ে সমস্যার কথাগুলো বলেছি। উপদেষ্টা এবং প্রতিমন্ত্রী ওখানে ছিলেন, তাদের ইতিবাচক সাড়া মিলেছে।
তিনি বলেন, আমাদের তিন দফা দাবি ছিল। দুর্নীতিগ্রস্ত পিডিকে (প্রকল্প পরিচালক) বরখাস্ত করতে হবে, সেটা তারা মেনে নিয়েছেন এবং আজকের মধ্যে পিডিকে বরখাস্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইউজিসি বরাবর চিঠি দেবেন। নতুন পিডি হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত আর্মি অফিসারকে নিয়োগ করা হবে। উনার সুপারভিশনে প্রথম ফেইজের কাজ পরিচালিত করবেন। প্রথম ফেইজের কাজ চলমান থাকবে এবং দ্বিতীয় ফেইজের কাজের জন্য ডিপিপপি প্রণয়ন করা হবে। ডিপিপিতে স্পষ্ট উল্লেখ থাকবে, দ্বিতীয় ফেইজের কাজ সেনাবাহিনীকে হস্তান্তর করবে।
ভূমি অধিগ্রহণের বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তৎপর ছিল। কিন্তু ডিসি অফিস থেকে কোনো সাড়া পাইনি। এখন দ্রুততম সময়ের মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণ শেষ হবে।
দাবি পূরণ হওয়ায় তিন দিনের আল্টিমেটাম থাকছে কি না- প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, তিন দিনের আল্টিমেটাম থাকছে না। আমি মনে করি আমাদের দাবি পূরণ হয়েছে। সুতরাং আমরা আমাদের আল্টিমেটাম থেকে সরে আসছি।
ছাত্রদের আবাসন নিয়ে তিনি বলেন, আমাদের কোনো হল নেই। ইউজিসি বলেছে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাড়ি ভাড়া নিয়ে অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করবে এবং আমাদের যে বাজেট হয় তা আগামীতে বর্ধিত করা হবে।
কেরানীগঞ্জের প্রকল্প নিয়ে তিনি বলেন, প্রথম ফেইজের কাজ শেষ হয়নি। প্রথম ফেইজে লেক খনন, রাস্তা, বৈদ্যুতিক কাজ, বালু ভরাট- এসব কাজ এত দিনেও হয়নি। প্রথম ফেইজের ১৫টি কাজের মধ্যে সাতটিরই এখনও কোনো দরপত্র আহ্বান করা হয়নি। এই সাতটির কাজ আর্মিকে দিতে বলেছি। তারা মেনে নিয়েছেন।
সেনাবাহিনীকে কাজ দেওয়ার দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের প্রথম ফেইজের কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালে, শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২০ সালে। প্রকল্প বর্ধিত করতে করতে, দুর্নীতি; ২০০ একর জমিতে ৩৫৩ একর রাস্তার বাজেট হচ্ছে। লেক খনন, বালু ভরাট, জমি অধিগ্রহণে অনেক দুর্নীতি হয়েছে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ অক্টোবরে শুরু হয়, জগন্নাথের কাজ শুরু হয় নভেম্বরে। তারা সেনা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গভাবে কাজ করিয়ে নিয়েছে। আমরা চাচ্ছি স্বচ্ছ এবং জিনিসটা সুন্দর হোক, এজন্য আমরা অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা চাচ্ছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০২৪
এমআইএইচ/এমজে