বরিশাল: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান ২১ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন উপাচার্য। অভিযুক্তরা নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মী।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সভায় হামলা ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পুলিশে ধরিয়ে দেওয়া অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ সংক্রান্ত একটি চিঠি উপাচার্যের দপ্তর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে পাঠানো হয়েছে।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চিঠি পেয়েছি। উপাচার্য মহোদয়ের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করতে হবে। আগামী রোববার তার সঙ্গে আলোচনা করে কি প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নেওয়া যায় সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে তদন্ত কমিটি করে চিহ্নিত করে মামলার দিকে যাওয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে জুলাই বিপ্লবীদের ওপর নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা হামলা করে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা স্বল্প সময়ের মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে। শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে তিন কার্যদিবসের মধ্যে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন উপাচার্য।
এদিকে প্রক্টর ও রেজিস্টার দপ্তর সূত্রে জানা গেছে,গত ২৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের সমন্বয়কদের সভায় হামলা এবং ১ আগস্ট আন্দোলনে নেতৃত্ব দানকারীদের পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় প্রাথমিকভাবে বর্তমান ও সাবেক ২১ শিক্ষার্থীকে চিহ্নিত করেছে আন্দোলনকারীরা।
অভিযুক্তরা হলেন - আইন বিভাগের অমিত হাসান রক্তিম, মাহামুদুল হাসান তমাল, গণিত বিভাগের মোবাশ্বের রিদম, আবিদ হাসান, মার্কেটিং বিভাগের টিকলি শরীফ, হিসাববিজ্ঞান বিভাগের আবুল খায়ের আরাফাত, শরিফুল ইসলাম, বাংলা বিভাগের রাকিবুল হাসান, সাব্বির হোসেন, ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের আল সামাদ শান্ত, খালিদ হাসান রুমি, অর্থনীতি বিভাগের সরোয়ার আহমেদ সাইফ, লোকপ্রশাসন বিভাগের প্রসেনজিৎ কুমার, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের মো. শওকত হোসেন, ব্যবস্থাপনা বিভাগের ইরাজ রব্বানী।
এছাড়া এসব ঘটনার হুকুমদাতা হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ সাবেক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়েছে। তারা হলেন - ব্যবস্থাপনা বিভাগের ফিরোজুল ইসলাম নয়ন, ইমরান হোসেন নাইম, আইন বিভাগের নাইম উদ্দিন মিষ্টু, শাখাওয়াত হোসেন অনু, হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সৈয়দ রুম্মান ইসলাম ও অর্থনীতি বিভাগের রাজিব মণ্ডল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির ২ জন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ছাত্রদের তিনটি পক্ষ অভিযুক্তদের তালিকা জমা দিয়েছে। এগুলো বিচার বিশ্লেষণ চলমান রয়েছে। বর্তমান উপাচার্য ড. শুচিতা শরমিন আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণে বদ্ধপরিকর।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০২৪
এমএস/এসএএইচ