ঢাকা, শনিবার, ২ ফাল্গুন ১৪৩১, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৫ শাবান ১৪৪৬

শিক্ষা

ফুলে ফুলে শোভিত খুবি ক্যাম্পাস, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রাণে বসন্তের উচ্ছ্বাস

মাহবুবুর রহমান মুন্না, ব্যুরো এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৫
ফুলে ফুলে শোভিত খুবি ক্যাম্পাস, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রাণে বসন্তের উচ্ছ্বাস খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফুলের সমারোহ

খুলনা: মৌমাছি, রঙিন প্রজাপতি, আর ভ্রমরের গুঞ্জন। পাখির কলরব।

ফাল্গুনি বাতাসে দোল খেয়ে যেন বাহারি ফুলগুলো আমন্ত্রণ জানাচ্ছে প্রাকৃতিক নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে। বসন্তের আগমনি বার্তায় এমনই এক ভিন্ন রূপ ধারণ করেছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি) ক্যাম্পাস।

প্রস্ফুটিত এসব ফুলে এখন সুশোভিত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। ফুলে ফুলে সজ্জিত ক্যাম্পাস যেন শিল্পীর তুলিতে আঁকা নয়ন জুড়ানো অপরূপ কোনো ছবি।

এসব ফুলের সৌন্দর্য দেখতে দলে দলে দর্শনার্থী আসছেন। তারা ফুলের বাগানে ঘুরছেন। ছবি তুলতেই যেন তারা বেশি ব্যস্ত। তবে সেলফি তুলতে ভুলছেন না কেউ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, এবার সবচেয়ে বেশি ফুল ফুটেছে খুবির প্রশাসনিক ভবনের সামনে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে, উপাচার্যের বাসভবনের ভেতরে ও বাইরে। বসন্ত ও ভালোবাসা দিবস একই দিনে উদ্‌যাপন হওয়ায় শিক্ষার্থীর উৎসবমুখর পদচারণায় ক্যাম্পাসে তৈরি হয়েছে অন্যরকম আনন্দময় আবহ। বিশ্ববিদ্যালয় ফুলবাগানে শিক্ষার্থীরা ছাড়াও দূরদূরান্ত থেকে তরুণ- তরুণীরা এসেছেন ছবি তুলতে। বেশিরভাগই আসছেন বন্ধু-বান্ধব নিয়ে।

উপােোর্যের বাসভবন ঘিরে নানা রঙের ফুল

রং-বেরঙের গাঁদা, সূর্যমুখী, ডালিয়া, জিনিয়া, গোলাপ, সালভিয়া, দোপাটি, ক্যালেন্ডোলা, ডায়ানথাস, ফ্লোগর্স, ইন্টালিয়াম, স্ন্যাকড্রাগন, পেনজি, কারিয়াফছি, ভারবিনা, পিটুনিয়া, স্টার গোল্ড, মৌচন্ডা, পানচাটিয়া, অ্যালমন্ডা, গ্লাডিয়া, তালপাম্প, চন্দ্রমল্লিকা, ইনকা গাদা, চায়নিজ গাঁদা, জাম্বুস গাঁদা, মোরগ ঝুঁটি, কসমস, জুঁই, চামেলি ছাড়াও আছে টগর, বেলি এবং সাইকাস, ক্রিসমাস, জবা, রঙ্গনসহ নানা জাতের ফুলে ক্যাম্পাসজুড়ে ফাল্গুনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভালোবাসা। একদিকে লাল গোলাপ অন্যদিকে হলুদ ফুল ও বাসন্তী রঙের পোশাক পরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন আগন্তুকরা। রাজ্যের সব ফুল যেন এখানেই জড়ো হয়েছে, যা দেখে মুগ্ধ সবাই। ক্যাম্পাসের যেদিকে তাকানো হবে সেদিকেই ফুলের সমারোহ।

খুবি ক্যাম্পাসে বাহারি ফুলের মাঝে ছবি তুলতে ভোলেন না আগন্তুকরা

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী লক্ষ্মী ঘোষ বলেন, বসন্তের এই দিনে আমাদের খুব ভালো লাগে। সবুজের ভেতরে লাল হলুদ নানা রঙের যে ফুলগুলো ফোটে ক্যাম্পাস সজ্জিত করে রেখেছে তা দেখে আরও বেশি ভালো লাগে। ক্লাসের ফাঁকে আড্ডার মাঝে আমরা ক্যাম্পাসের এই মনোরম পরিবেশ উপভোগ করি, মুগ্ধ হই। ক্যাম্পাসের এই পরিবেশের কারণে প্রকৃতির সাথে বন্ধুত্বটা আমাদের আরো মজবুত হয়।

একই ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী ফাহিমা আক্তার মিম বলেন, ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য নিয়ে বলতে গেলে অনেক কিছু বলা যায়। এই ক্যাম্পাস ইট-পাথরের দালান না; শুধু আমাদের কাছে এটি একটি মানসিক শান্তির জায়গা। আমরা হুটহাট করে মন খারাপ বা ডিপ্রেশনে থাকলে ক্যাম্পাসে চলে আসি। যখন দেখি সারি সারি ফুল ফুটে আছে তখন ডিপ্রেশন বা মন খারাপ নিমেষেই দূর হয়ে যায়।

ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসা ব্যাংক কর্মকর্তা নিসাত সুলতানা বিপাশা বলেন, ফুলের সঙ্গে ফাল্গুনের রয়েছে এক নিবিড় সম্পর্ক। ফাল্গুন তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভালোবাসা দিবস। ফাগুনের আগুনে, মন রাঙিয়ে বাঙালি তার দীপ্ত চেতনায় উজ্জীবিত হচ্ছে। খুলনায় খুবি ক্যাম্পাসের মতো আর কোথাও এক সাথে এত ফুলের দেখা মেলে না। যে কারণে প্রতি বছর এই দিনে এখানে ঘুরতে আসি।

ক্যাম্পাসে চারিদিকে ফুল ও ফুলের পাপড়ি ছড়িয়ে থাকতে দেখে উচ্ছ্বসিত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ডিসিপ্লিনার অধ্যাপক মো. সামিউল হক বলেন, ক্যাম্পাসে ঢুকলেই ফুলের প্রাচুর্য দেখে মন ভালো হয়ে যেতে বাধ্য হবে যে কারো। বাহারি সব ফুল আর তার থেকে ছড়ানো মাদকতার সৌরভ সব মিলিয়ে অন্যরকম পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। বসন্ত বাতাসে সবুজ ক্যাম্পাসে দ্যুতি ছড়াচ্ছে রং-বেরঙের বাহারি ফুল। ফুলের মন মাতানো সৌরভ আর স্নিগ্ধতায় মুগ্ধ সবাই।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৫
এমআরএম/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।