রাজশাহী: জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া, আন্দোলন দমনে সংশ্লিষ্টতা এবং কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট)-এর এক শিক্ষক ও দুই কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৮তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বরখাস্ত শিক্ষক হলেন রাজশাহী মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ও রুয়েট রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সিদ্ধার্থ শংকর সাহা। এছাড়া বরখাস্তকৃত অন্য দুই কর্মকর্তা হলেন- রুয়েট পুরকৌশল বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী ও রুয়েট ছাত্রলীগ শাখার সাবেক সভাপতি নাঈমুর রহমান নিবিড় এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ডাটা প্রসেসর ও কর্মচারী সমিতির সাবেক সভাপতি মহিদুল ইসলাম।
রাতে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-কল্যাণ দপ্তররের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. রবিউল ইসলাম সরকার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে অনুষ্ঠিত ছাত্র আন্দোলনে সরকারি নিপীড়নের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া, নির্যাতন-সহিংসতায় সম্পৃক্ততা, আওয়ামী সরকারের দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখার অভিযোগও আছে এদের বিরুদ্ধে। তবে ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকার অভিযোগে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট। তাদের ছয় মাসের জন্য বরখাস্ত করা হয়েছে।
এ সময়ের মধ্যে তারা আপিল না করলে বা পরবর্তী কোনো সিদ্ধান্ত না এলে ছয় মাস পর তাদের স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হবে।
এছাড়া অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকার কারণের চারজনের বিরুদ্ধে মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। এরা হলেন- ডেপুটি কন্ট্রোলার অব এক্সামিনেশান শাহনেওয়াজ সরকার সেডু, সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মীর তৌহিদুর রহমান, সেকশান অফিসার ডিআরই শাখা রাইসুল ইসলাম রোজ ও শিক্ষা শাখার সাব- অ্যাসিশটেন্ট প্রোগ্রামার এ কে এম আনোয়ারুল ইসলাম। এরা সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত।
এ বিষয়ে রুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সিন্ডিকেট সভায় যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল তাদের বিরুদ্ধে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। বেশ কয়েকজনকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বরখাস্তকৃত নাঈম রহমান নিবিড় ও মো. মহিদুল ইসলাম গত ৪ আগস্ট ধারালো অস্ত্রসহ রুয়েটের প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীদের হত্যার উদ্দেশে ধাওয়া ও বোমা হামলায় সংশ্লিষ্টতা মিলেছে। পাশাপাশি বরখাস্তকৃত শিক্ষক সিদ্ধার্থ শংকরকে জুলাইবিরোধী অবস্থান, আন্দোলনে আহত ও নিহতদের অবমাননার অভিযোগে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত করা হয়েছিল। তাকে বরখাস্তের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেন এবং পরে প্রশাসনের কাছে আবেদনপত্র দেন।
বাংলাদেশ সময়: ০০৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ০৭, ২০২৫
এসএস/আরবি