শাবিপ্রবি, (সিলেট): সবুজ-শ্যামলিমায় ঘেরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর আমাদের এ বাংলা। প্রতি দু মাস পরপর ঋতু বদল হয়।
এই প্রকৃতিকে অপরূপ সাজে সাজিয়ে তোলে নানান রকম ফুল। গ্রীষ্মে ফোটা তেমনই একটি অন্যতম ফুল জারুল। সবুজ পাতা, বেগুনি রঙের শোভিত নজরকাড়া এমন ফুলের দৃশ্যের দেখা মিলবে শাহজালালল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) ক্যাম্পাসে। বর্তমানে ক্যাম্পাসের পাঁচ শতাধিক গাছের জারুল ফুলের আভা শোভা পাচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক ধরে কিলোমিটার রোড এগোলেই রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে থাকা গাছগুলোর থরে থরে প্রকৃতির নিয়মে সাজানো আছে জারুল ফুল। এমন লোভনীয় ফুলের দিকে তাকালে ক্ষণিকের জন্য হলেও প্রকৃতিপ্রেমীদের মনের শত দুঃখ-কষ্ট থাকলেও তা নিমিষেই ভুলতে বাধ্য।
প্রতিবছর গ্রীষ্মের এ সময়ে গাছে গাছে ফোঁটা জারুল ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা। অনেকে মাথার খোঁপায় জারুল গুঁজে নিজেদের সজ্জিত করেন, কেউ কেউ স্মার্টফোনে ছবি তুলে সৌন্দর্য ধারণ করে রাখেন। কেউ ছবি তুলে পোস্ট করেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কিলোমিটার রোডের দুই পাশের লেক ঘেঁষে থাকা সারি সারি জারুল, ভিসি বাংলো, অতিথি ভবন, ডরমিটরি, ছাত্রী হল রোড়, অ্যাকাডেমিক ভবনের পাশে, ইউনিভার্সিটি সেন্টারের সামনে, কেন্দ্রীয় মিলনায়তনের রাস্তাজুড়ে, বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবের সামনে, শাহপরাণ সংলগ্ন রোড় ও পার্শ্ববর্তী টিলায়, কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ সংলগ্ন রোডসহ পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে ছোট-বড় ও মাঝারি আকারের জারুল গাছগুলোতে ফুটেছে জারুল ফুল। যা ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েকগুণ।
জারুল সৌন্দর্য ছড়ানোর পাশাপাশি ওষুধিগাছ হিসেবে পরিচিত। এর বীজ, ছাল এবং পাতা ডায়াবেটিস রোগ, জ্বর, অনিদ্রা, কাশি ও অজীর্ণতায় ওষুধিগাছ হিসেবে কাজ করে। একদিকে সৌন্দর্য অন্যদিকে ওষুধি গুণ এমন ফুলের বাহারি পসরায় শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে ফিরেছে সজীব প্রাণের ছোঁয়া।
মুগ্ধতা ছড়ানো জারুলের সৌন্দর্য নিয়ে রাকিব আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমানে ক্যাম্পাসের জারুল গাছগুলোতে ফোঁটা ফুলগুলো ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যে কয়েকগুণ বৃদ্ধি করে দিয়েছে। জারুল কমবেশি সকলেরই পছন্দ। তাই ক্যাম্পাসে এমন দৃষ্টিনন্দন ফুল-ফলের গাছগুলো আরও বেশি লাগানো দরকার বলে মনে করেন এ শিক্ষার্থী।
জাকিয়া সুলতানা নামের আরেক শিক্ষার্থী বাংলানিউজকে বলেন, সবুজ-সমারোহে ভরপুর ক্যাম্পাসগুলোর মধ্যে শাবিপ্রবি অন্যতম। এখানের নৈসর্গিক সৌন্দর্য যে কাউকেই মুগ্ধ করে তুলবে। তাই কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যকে আরও বাড়িয়ে তুলতে ফুল-ফল, বর্জন ও ওষুধিগাছ লাগানো প্রয়োজন।
শাবিপ্রবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সাজেদুল করিম বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের ক্যাম্পাস সবুজায়নে ভরপুর অনন্য একটি মনোরম জায়গা। সবুজায়নের পাশাপাশি আমাদের ক্যাম্পাস সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে, যা ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য আরও বাড়িয়েছে। এ ছাড়া ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বর্ধনে বর্তমান প্রশাসন লেক খনন, ব্রিজ নির্মাণ, ওষুধ বৃক্ষরোপণ, ফলমূলের গাছ রোপণসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। সেগুলো বাস্তবায়িত হলে ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য আরও কয়েকগুণ বেড়ে যাবে।
এএটি