ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

রুয়েটে অচলাবস্থা কাটছে রোববার: বৃহস্পতিবার আন্দোলন প্রত্যাহার হচ্ছে

শরীফ সুমন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০১২
রুয়েটে অচলাবস্থা কাটছে রোববার: বৃহস্পতিবার আন্দোলন প্রত্যাহার হচ্ছে

রাজশাহী: রুয়েটের অচলাবস্থা নিয়ে রাজশাহী সিটি মেয়রের সঙ্গে মঙ্গলবার রাতে নগর ভবনে দু’পক্ষের রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পর আন্দোলনের বরফ গলেছে। ফলে টানা দশ দিনের অচলাবস্থা শেষে আগামী রোববার থেকেই সচল হতে যাচ্ছে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট)।



রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামানের মধ্যস্থতায় আন্দোলন তুলে নিতে যাচ্ছে রুয়েটের আন্দোলনরত শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ। বৃহস্পতিবার রাতে নগর ভবনে অনুষ্ঠিত ত্রিপক্ষীয় বৈঠক শেষে এ সমাধান আসে।

ওই বৈঠক সূত্রে জানা যায়, অচলাবস্থা নিরসনে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন বুধবার রাতে উপাচার্য সিরাজুল করিম চৌধুরী ও আন্দোলনকারীদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। গভীর রাত পর্যন্ত চলা ওই বৈঠকে উভয়পক্ষের বিভিন্ন অভিযোগ ও দাবি ওঠে।

পরে তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা করা হয়। সভায় উপাচার্যের ফলাফল জালিয়াতির অভিযোগের বিষয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, রুয়েট উপাচার্য রোববার থেকে স্বাভাবিকভাবে তার কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন, এতে কেউ বাধা দেবে না এবং আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধেও কোনো শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না।

বৈঠকে উপাচার্যের পক্ষের ১৪ জন শিক্ষক এবং আন্দোলকারীদের পক্ষের প্রায় ১০ থেকে ১৫ জন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। আগামী রোববার রুয়েট ভিসি ক্যাম্পাসে ফিরবেন। ওই দিন ক্লাস-পরীক্ষাসহ সব প্রশাসনিক কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হবে।

বৈঠক শেষে রাতে মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন এর সত্যতা নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে বলেন, “আমরা একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের জায়গায় পৌঁছেছি। শিক্ষক-কর্মকর্তাদের যেভাবে চলতে বলেছি তারা যেন সেভাবে চলেন তার উদাত্ত আহ্বান থাকবে। উপাচার্যও যেন সবার প্রতি একই আচরণ করেন তার জন্যও বলা হয়েছে। আর অন্য যে বিষয়গুলো আছে সেগুলোর জন্য প্রয়োজনে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। আশা করছি এ নিয়ে আর কোনো জটিলতা তৈরি হবে না। ”

রুয়েট উপাচার্য ড. সিরাজুল করিম চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, “বৈঠকে আন্দোলন থামানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সারদায় প্রধানমন্ত্রী আসার কারণে মেয়র সেখানে যাবেন। সারদা থেকে ফেরার পর তিনি নিজে রুয়েটে গিয়ে কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন। ”

আন্দোলনকারীদের পক্ষে বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. আশরাফুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, “আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে অথবা দুপুরে আন্দোলনকারীদের অভ্যন্তরীণ বৈঠক শেষে আন্দোলন স্থগিত করার ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হবে। ’

প্রসঙ্গত, রুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এক শিক্ষার্থীর ফলাফল দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত করার অভিযোগে ১৫ নভেম্বর থেকে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নামে ঐক্য পরিষদ। ভর্তি পরীক্ষার কারণে আন্দোলন স্থগিত রাখার পর ২৬ নভেম্বর থেকে ফের ধর্মঘটে নামে ঐক্য পরিষদ। তাদের চলমান আন্দোলনে রুয়েটে অচলবাস্থা নেমে আসে।

গত ৩০ নভেম্বর আন্দোলনকারীদের তীব্র বাধার মুখে রুয়েটের প্রধান ফটকে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন উপাচার্য ড. সিরাজুল করিম চৌধুরী। প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে সেখানে দাঁড়িয়ে থেকেও বাসায় প্রবেশ করতে পারেন নি তিনি। পরে ক্যাম্পাসের মূল ফটক থেকে সস্ত্রীক ফিরে যান রুয়েট উপাচার্য।

বাংলাদেশ সময়: ০১৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০১২
এসএস/জেডএম; জুয়েল মাজহার, কনসালট্যান্ট এডিটর ; [email protected]

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।