সিলেট: ৫০ বছর পেরিয়ে দেশের স্বনামধন্য ঐতিহ্যবাহী সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ। বর্ণালী উৎসবে তাই মহামিলনের মেলায় মেতে উঠেছে ক্যাম্পাস।
শনিবার বর্ণাঢ্য র্যালি দিয়ে শুরু হয় তিনদিনব্যাপী এ উৎসব।
মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ ও সিলেট অঞ্চলের চিকিৎসা সেবায় উল্লেখযোগ্য অবদান রাখা এই প্রতিষ্ঠনের সুবর্ণ জয়ন্তীর দ্বিতীয়দিন রোববার যোগ দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, “ওসমানী মেডিকেল কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের সুযোগ তৈরি হয়েছে। নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে, অচিরেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের ঘোষণা দেওয়া হবে। ’’
স্মৃতির কথায় গিয়ে অর্থমন্ত্রী বললেন, “সিলেটের দু’টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমার সম্পর্ক খুব নিবিড়। এর একটি ওসমানী মেডিকেল কলেজ, অন্যটি মদনমোহন কলেজ। ’’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক তার বক্তব্যে বলেন, “সারাদেশে ১২ হাজার ২৩০টি কমিউনিটি ক্লিনিক চালু আছে। প্রতি ক্লিনিকে দিনে একশ থেকে দেড়শ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। সরকারের লক্ষ্য, কমিউনিটি ক্লিনিক ১৮ হাজারে উত্তীর্ণ করা। ’’
এদিকে, সুর্র্ণ জয়ন্তী যোগ দিতে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে ওসমানী মেডিকেল কলেজের সাবেক ছাত্ররা এসে জড়ো হয়েছেন। উৎসবের আনন্দ আয়োজনে প্রিয় আঙিনায় তাদের সময় কাটছে স্মৃতি কাতরতায়।
সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হাসান ও মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলান, সিলেট জেলা শাখার সভাপতি ডা. রুকন উদ্দিন আহমদ, জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে মুমেন, জাতীয় অধ্যাপিকা শাহলা খাতুন প্রমুখ।
উৎসবে দ্বিতীয় দিনে সভাপতিত্ব করেন ওসমানী মেডিকেল কলেজের উপপরিচালক ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল।
সুবর্ণ জয়ন্তীতে দুপুরে মুক্তিযোদ্ধা ডাক্তারদের সম্মাননা প্রদান করা হয়। সম্মাননাপ্রাপ্তরা হলেন- শহীদ ডা. শামসুদ্দিন (তার পক্ষে সম্মাননা গ্রহণ করেন তার ছেলে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ডা. জিয়া উদ্দিন সাদেক), লে. কর্নেল জিয়াউর রহমান (তার সম্মাননা গ্রহণ করেন কলেজর অধ্যক্ষ অছুল আহমদ চৌধুরী), শহীদ ডা. শ্যামা কান্তি লালা (সম্মাননা গ্রহণ করেন মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. মৃগেন কুমার দাস চৌধুরী), শহীদ নার্স মাহমুদুর রহমান (সম্মাননা গ্রহণ করেন হাসপাতালের কর্মচারী নূর মিয়া), শহীদ কোরবান আলী (সম্মাননা গ্রহণ করেন তার ছেলে তামিক উদ্দিন)।
এছাড়া আরও সম্মাননা গ্রহণ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. বিএন দেলওয়ার রানা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. রণজিৎ দেব, বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলামের পক্ষে তার ছেলে ডা. রাছি মাহমুদ চৌধুরী, ডা. জালাল সামাদ, ডা. জাহেদ আহমদ মাদানী, ডা. এম এ সালাম এবং ডা. এম এ হাকিম।
উল্লেখ্য, ১৯৬২ সালে মাত্র ২৭ জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে যাত্রা শুরু করা ওসমানী মেডিকেল কলেজে অর্ধশতাব্দীতে হাজার হাজার শিক্ষার্থী চিকিৎসা শিক্ষা গ্রহণ করে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আর্ত-মানবতার সেবায় নিজেদের নিয়োজিত করে সাফল্যের স্বাক্ষর রেখে চলেছেন।
বর্তমানে কলেজে ২০টি বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্স চালু আছে। প্রতি সেশনে ৯৮ জন চিকিৎসক ভর্তি হতে পারেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১২
এসএ/সম্পাদনা: মীর সানজিদা আলম, নিউজরুম এডিটর, আশিস বিশ্বাস, অ্যাসিস্ট্যান্ট আউটপুট এডিটর