ঢাকা: বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি)শিক্ষক সমিতি, কর্মকর্তা সমিতি এবং কর্মচারী সমিতির আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন সমিতি অনেকদিন থেকেই উপাচার্যের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, পদোন্নতি বঞ্চনা, তড়িঘড়ি করে বিভিন্ন নির্বাচনী বোর্ড অনুষ্ঠিত করার মাধ্যমে নিয়ম বহির্ভূতভাবে নিয়োগ দানসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে।
মঙ্গলবার শিক্ষক সমিতি ৮ দফা দাবিসহ বিভিন্ন দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করলে বাউবির শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের তিন সমিতি গাজীপুরস্থ বাউবি কার্যালয়সহ দেশব্যাপী সব আঞ্চলিক ও স্থানীয় কার্যালয়ে কর্মবিরতি পালন শুরু হয়। তিন সমিতির কয়েকশ সদস্যের একটি মিছিল ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে।
তিন সমিতির নেতৃবৃন্দ এক বৈঠক শেষে কর্মবিরতি অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং আগামী ৩ জানুয়ারি দুপুর ১২টায় বাউবির ক্যাম্পাসে একটি সংবাদ সম্মেলন ডাকার সিদ্ধান্ত নেয়।
তিন সমিতির সভায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলা হয় যে, উপাচার্য বরাবরের মতো নানা মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অভ্যন্তরীণ আন্দোলনকে ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে চলমান জাতীয় আন্দোলন এবং সরকারের বিরুদ্ধে’ বলে সরকারি মহলে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
এ অপপ্রচারটি সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপূর্ণ, মিথ্যাচার এবং সরকারকে বিভ্রান্ত করার লক্ষ্যে করা হচ্ছে বলে তিন সমিতি মনে করে।
মঙ্গলবার এই তিনটি সমিতির সভাপতি স্বাক্ষরিত এক অভিযোগপত্রে বলা হয়, উপাচার্য অধ্যাপক আর আই এম আমিনুর রশীদ শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কোনো দাবি বাস্তবায়ন না করে নগ্নভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মনীতি ভঙ্গ করে অযোগ্য লোক নিয়োগদানের মাধ্যমে নিয়োগ বাণিজ্য করে যাচ্ছেন। এ সব নিয়োগে যথেষ্ট অনিয়ম ও দুর্নীতি হচ্ছে বলে সমিতিগুলো মনে করছে।
উপাচার্য আমিনুর রশীদের মেয়াদ আগামী ২৩ জানুয়ারি শেষ হচ্ছে। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে উপাচার্য নানা ‘ঘুপচি বিজ্ঞপ্তির’ মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কিছু নিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছেন, যা চরম নিয়ম-নীতি লঙ্ঘনের মাধ্যমে করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করে তিন সমিতি।
নির্বাচনী বোর্ডের এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে গত ৩০ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী সমিতি গাজীপুরস্থ বাউবি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শুরু করে।
সমিতি অভিযোগ করে, উপাচার্য নির্বাচনী বোর্ড নিয়ে নিজেকে ব্যস্ত রাখেন। কর্মচারী সমিতির দাবি দাওয়ার প্রতি কর্ণপাত করেননি। ৩১ ডিসেম্বর কর্মকর্তা সমিতি তাদের অনুরূপ দাবি দাওয়া বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কর্মবিরতি ঘোষণা করে। উপাচার্য ৩১ ডিসেম্বর বিকেল ৪টায় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করার সময় তার এপিএস মো. কামারুজ্জামান কর্মকর্তা, কর্মচারীদের ওপর দিয়ে গাড়ি চালানোর হুমকি দিলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
এক পর্যায়ে উপাচার্য দ্রুত ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন। রাতের বেলা পুলিশ এবং ‘সুবিধাবাদী কয়েকজন শিক্ষকের’ পাহারায় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০১, ২০১৩
এমএন/সম্পাদনা: আশিস বিশ্বাস, অ্যাশিস বিশ্বাস, অ্যাসিস্ট্যান্ট আউটপুট এডিটর