রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) মনোবিজ্ঞান বিভাগে সেশনজটের প্রতিবাদে অবস্থান ধর্মঘট, বিক্ষোভ ও মৌনমিছিল করেছে বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বিজ্ঞান ভবনের তৃতীয় তলায় বিভাগের কার্যালয়ের সামনে বেলা ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত অবস্থান ধর্মঘট পালন করে শিক্ষার্থীরা।
এরপর সেখান থেকে মৌনমিছিল নিয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সংক্ষিপ্ত মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি গুলো হলো- বিভাগের কার্যকরী অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রণয়ন। রুটিনমাফিক ক্লাশ নেওয়া। প্রতিটি বর্ষে একবছরের মধ্যে সব পরীক্ষা শেষ করা। পরীক্ষা শেষ হওয়ার পনের দিনের মধ্যে পরবর্তী বর্ষের ক্লাশ শুরু এবং নব্বই দিনের মধ্যে পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ এবং বিভাগে পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ।
দ্রুত ২০০৭-০৮ সেশনের ৪র্থ বর্ষ , ২০০৮-০৯ সেশনের চূড়ান্ত পরীক্ষার কার্যকর তারিখ ঘোষণা এবং ২০০৯-১০ সেশনের ২য় বর্ষের ব্যবহারিক পরীক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়ের শীতকালীন ছুটির আগে শেষ করা।
এসব দাবি বাস্তবায়নে বুধবার তারা অবস্থান ধর্মঘট একইসঙ্গে সেশনজটের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেন। এসময় বিভাগের শিক্ষকরা কার্যালয়ের ভেতর অবরুদ্ধ ছিলেন।
একপর্যায়ে বিভাগীয় সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মো.জিয়াউদ্দিন শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং শিক্ষার্থীদের দাবির ব্যাপারে পরে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানান।
এসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছাত্র ফেডারেশন রাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক উৎসব মোসাদ্দেক শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোকে যোক্তিক বলে উল্লেখ করে তাদের সমর্থনে বিভাগীয় সভাপতির সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি বিভাগের নিজস্ব ব্যাপারে তাকে কথা বলতে নিষেধ করেন। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। পরে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে সভাপতি ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
পরে বেলা ১টার দিকে শিক্ষার্থীরা অবস্থান ধর্মঘট তুলে নিয়ে মৌনমিছিল বের করার প্রস্তুতি নেওয়ার সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর চৌধুরী মোহাম্মাদ জাকারিয়া ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ এবং পদ্ধতিগতভাবে আন্দোলন করার পরামর্শ দেন।
এসময় প্রক্টর চৌধুরি মুহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রয়োজনীয় খোঁজ-খবর নিয়ে শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়ার ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নেবে। তিনি এ ব্যাপারে প্রশাসনকে অবহিত করবেন বলে উল্লেখ করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একই সঙ্গে ভর্তি হওয়া তাদের অন্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা মাস্টার্স শেষ করলেও তারা এখন সবে ৪র্থ বর্ষে আছেন।
মনোবিজ্ঞান বিভাগের এখন মোট ৭টি ব্যাচ রয়েছে বলে জানান শিক্ষার্থীরা। শিক্ষকরা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডসহ বিভিন্ন কাজে জড়িত থাকলেও নিয়মিত ক্লাশ পরীক্ষা না নেওয়ায় সেশনজট সীমাহীন পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। সীমাহীন সেশনজটে পড়ে শিক্ষাজীবন নিয়ে হতাশায় ভুগছেন বলে জানান বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে বিভাগীয় সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মো জিয়াউদ্দিন বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবির ব্যাপারে অ্যাকাডেমিক বৈঠক ডেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ’ সেশনজট দূর করতে বিভাগ আন্তুরিক বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০১৩
সম্পাদনা: রাফিয়া আরজু শিউলী, নিউজরুম এডিটর
[email protected]