ঢাকা: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২০১৩-১৪ শিক্ষা বর্ষের অনার্স প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষার আসন বিন্যাসে ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজ কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার সকাল ১১ টায় সারা দেশে একযোগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হবে।
কিন্তু তিতুমীর কলেজে পরীক্ষার আসন বিন্যাস দেখতে এসে বিপাকে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা।
কলেজটির অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. দিলারা হাফিজ ও অনার্স ১ম বর্ষ ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক সেলিম মিয়া স্বাক্ষরিত ভর্তি পরীক্ষার আসন বিন্যাসে বিজ্ঞান অনুষদের ৫৭৬৭৮৫৪ থেকে ৩৩৪৬৪৭৮ রোল নম্বরের ২,৮৪৬ জন পরীক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষা আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজে হবে।
একই অনুষদের ৩৩৪৩২৭৩ থেকে ৩৩৪৬৪৭৮ রোল নম্বরধারী পরীক্ষার্থীর পরিবর্তে ভুল করে ৫৭৬৭৮৫৪ থেকে ৩৩৪৬৪৭৮ রোলধারীদের আসন বিন্যাস দেওয়া হয়েছে। বিভাগ ছাড়া অন্য বিভাগগুলোর তথ্য ঠিক আছে বলে জানা গেছে।
এদিকে ভুল তথ্য সম্বলিত আসন বিন্যাস এ নিজেদের রোল নম্বর না পেয়ে বিজ্ঞান বিভাগের অনেক শিক্ষার্থী দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
সালাহউদ্দিন মাহমুদ নামের একজন শিক্ষার্থী বাংলানিউজকে বলেন, আগামীকাল (শুক্রবার) পরীক্ষা। আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখি আমার রোল নম্বর নাই। পড়াশুনা বাদ দিয়ে তাড়াতাড়ি করে বন্ধুবান্ধবদের দিয়ে খোঁজ নিতে লাগলাম। অবশেষে তিতুমীর কলেজে এসে একই তালিকা দেখে মাথা নষ্ট হওয়ার উপক্রম।
এ বিষয়ে সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট, তিতুমীর কলেজের গেট, তিতুমীর কলেজের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কক্ষের সামনে এই ভুল তালিকা টানানো আছে। তবে তিতুমীর কলেজের ভেতরে একটি ভবনের সামনে সঠিক তথ্য সম্বলিত একটি ডিজিটাল ব্যানার টানানো আছে। যা দৃষ্টি গোছরে আসা কঠিন।
দেখা যায়, দুপুরের পর থেকে কলেজের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কক্ষ তালা দেওয়া। শিক্ষকরা সব হাতের নাগালের বাইরে। বেশ কয়েকজন শিক্ষক কলেজের প্রশাসনিক ভবনের তিন তলায় শিক্ষক মিলনায়তনে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে বসে আছেন।
কলেজের কয়েকজন কর্মচারী বাংলানিউজকে জানান, এখন কেউ নাই। কার সঙ্গে কথা বলবেন। স্যাররা সবাই চলে গেছেন। অধ্যক্ষ ম্যাডামও কিছুক্ষণ আগে চলে গেছেন।
কলেজটির দ্বিতীয় বর্ষের একজন শিক্ষার্থী বাংলানিউজকে জানান, ভুল তথ্য দিয়ে স্যাররা বেকায়দায় আছেন। তাই তারা চুপচাপ শিক্ষক মিলনায়তনে লুকিয়ে আছেন। তারা ভুল সংশোধনের ব্যবস্থাও নিচ্ছেন না।
শিক্ষক মিলনায়তনে গিয়ে বাইরে থেকে দরজার কড়া নাড়লে করলে একজন শিক্ষক বেরিয়ে আসেন। তার সঙ্গে পরিচয় দিয়ে কথা বলতে চাইলে তিনি অন্য আরেকজন শিক্ষককে দেখিয়ে চলে যান। ওই শিক্ষকের সঙ্গে কথা বললে, তিনি প্রথমে ভুলের কথা অস্বীকার করলে পরে বলেন, এটা এখন আর সংশোধন করা সম্ভব নয়।
ভুল তথ্য সংশোধন বিষয়ে কলেজটির অনার্স ১ম বর্ষ ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক সেলিম মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, কোনো ভুল হয় নি। তালিকা অনুযায়ী পরীক্ষা হবে। আপনি ওয়েবসাইট দেখেন। পরে দীর্ঘ বির্তকের পর তিনি ভুলের কথা স্বীকার করে বলেন, এটা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ভুল করেছে। আমাদের কিছু করার নেই।
ভুলটি ওয়েবসাইটসহ সংশ্লিষ্ট জায়গায় সংশোধন করার কথা বললে তিনি বলেন, এখন আর এটা সংশোধন করা সম্ভব নয়।
বিকেল পৌনে ৪টার দিকে শিক্ষার্থীদের কয়েকজন তালিকায় ভুল তথ্য কেটে কলম দিয়ে সঠিক রোল নম্বরটি লিখে দেয়।
রাকিব হোসেন নামের একজন শিক্ষার্থী বাংলানিউজকে বলেন, একটা ভুল ধরা পড়ার পরও তা সংশোধণ না করে নিজেদের সবার নাগালের বাইরে রাখা শিক্ষকদের কাছ থেকে আশা করা যায় না।
পরে এ বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি আমলে নিয়ে তিতুমীর কলেজসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ভুল সংশোধনের নির্দেশ দেন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা শুক্রবার
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৩
সম্পাদনা: শরিফুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর