সিলেট: এবার মানববিহীন বিমান (ড্রোন) বানাচ্ছে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) তরুণ গবেষক দল। নতুন বছরের শুরুতেই তারা ড্রোনের একটা পরীক্ষামূলক ডিজাইন তৈরি করেছেন।
আগামী এপ্রিল মাসে সিলেটের আকাশে তারা ড্রোন ওড়াবেন বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন গবেষক টিমের প্রধান শাবির পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী সৈয়দ রেজওয়ানুল হক নাবিল।
মানববিহীন বিমান (ড্রোন) বানানোর উদ্যোগ নিয়ে শুক্রবার বিকেলে সৈয়দ রেজওয়ানুল হক নাবিল কথা বলেন বাংলানিউজের সঙ্গে।
ড্রোন তৈরি টিমের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন শাবির ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল।
নাবিল ছাড়াও ড্রোন-গবেষক টিমে আরও রয়েছেন পদার্থবিজ্ঞানের ৪র্থ বর্ষের ছাত্র রবি কর্মকার এবং ২য় বর্ষের ছাত্র মারুফ হোসেন রাহাত। তারা সকলেই সাস্ট রোবটিক্স অ্যারোনোটিক্স অ্যান্ড ইন্টারফেসিং রিসার্চ গ্রুপের www.facebook.com/SUSTRoboAero সদস্য।
বাংলানিউজকে নাবিল জানান, আপাতত আমরা নিজের টাকাতেই শুরু করেছি। তবে কোনো স্পন্সর পেলে এটা আরো বড় আকারে এবং দ্রত শেষ করা সম্ভব। তবে স্পন্সর না পেলে স্বাভাবিকভাবে এপ্রিলেই শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আকাশে ড্রোনটি ওড়ানোর আশা করছি।
নাবিল বলেন, ‘এই ড্রোন দিয়ে দেশের সীমানা পাহারা দেওয়া, উপর থেকে তাৎক্ষণিক ছবি তোলা সম্ভব হবে। এছাড়া আবহাওয়া সম্পর্কে তথ্য জানা যাবে। দেশের সেনা, বিমান ও নৌবাহিনী এটি ব্যবাহার করে তাদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত কাজ করতে পারবে। ’
নাবিল উল্লেখ করেন, রেলে যেভাবে নাশকতা বাড়ছে তাতে রেলের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিচ্ছে। ড্রোন দিয়ে রেল লাইনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে। অর্থাৎ রেল লাইনের পাহারার কাজ করবে ড্রোন।
এছাড়া আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এটা ব্যবহার করে দেশের যে কোনো স্থান পর্যবেক্ষণ করতে পারবে।
নাবিল জানান, গত বছরের এপ্রিল থেকে তারা ড্রোন তৈরির তাত্ত্বিক কাজ শুরু করেন। এরপর চলতি বছরের শুরু থেকে তারা মূল কাজগুলো শুরু করেছেন। আরও তিন মাস পরেই ড্রোন আকাশে ওড়ানো যাবে।
শান্তিপূর্ণ কাজে ড্রোন ব্যবহারের নানাদিক তুলে ধরে নাবিল বলেন, বিশেষত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের চাহিদা অনুযায়ী ড্রোন ব্যবহার করতে পারবে। তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী ড্রোনের বিভিন্ন ডিভাইস অন্তর্ভূক্ত করা সম্ভব।
আর ড্রোনটি সহজ পদ্ধতিতে চালনা করা যাবে বলে জানান গবেষক দলের প্রধান নাবিল।
প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক বিশ্বে ড্রোন একটি আলোচিত যন্ত্র। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি ড্রোন যেমন রাডার ফাঁকি দিয়ে একটি দেশের ভেতর অনায়াসে ঢুকে পড়তে পারে, তেমনি দূরনিয়ন্ত্রিত এসব বিমান লক্ষ্যবস্তুতেও আঘাত হানতে পারে নির্ভুলভাবে।
জানা গেছে, মনুষ্যবিহীন ড্রোন-এ ক্যামেরা থাকে। ওই ক্যামেরার মাধ্যমে গৃহীত ভিডিওচিত্র ভূমি থেকে বিমান নিয়ন্ত্রণকারী অপারেটরের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। আকাশসীমায় পর্যবেক্ষণ চালানো, নিজ দেশের আকাশসীমা পাহারা দেওয়া, আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ, শত্রুদের বেতার ও রাডার সিস্টেমে ব্যাঘাত ঘটানো, আড়ি পেতে তথ্য জোগাড় করা থেকে শুরু করে প্রয়োজনে আরও ব্যাপক ভূমিকা পালন করতে পারে পাইলটহীন এই বিমান।
এসব বিমান পাইলটবিহীন হওয়ায় যুদ্ধে পাইলটের মৃত্যুঝুঁকি থাকে না। তাই যে কোনো পরিস্থিতিতে এ ধরনের বিমান ব্যবহার করা যায়।
বিশ্বে প্রযুক্তিতে এগিয়ে যাওয়া উন্নত বেশ কয়েকটি দেশ ড্রোন ব্যবহার করছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল, চীন, রাশিয়া, ফ্রান্স ও ভারত উল্লেখযোগ্য।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০১৪
সম্পাদনা: বেনু সূত্রধর, নিউজরুম এডিটর/ জুয়েল মাজহার, কনসালট্যান্ট এডিটর
শিক্ষা
ড্রোন বানাচ্ছে শাবি, এপ্রিলে উড়বে
সাব্বির আহমদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।