জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী জুবায়ের আহমেদ হত্যার দ্রুত বিচারের দাবিতে আন্দোলনকারী ২ শিক্ষার্থীকে মারধর ও হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে হত্যা মামলার ৭ আসামির বিরুদ্ধে।
রোববার দুপুর ১২টায় মামলার শুনানি শেষে ঢাকা জেলা ও দায়রা জর্জ কোর্টের পাশের একটি গলিতে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।
হামলার শিকার ওই দুই শিক্ষার্থী হলেন পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের সৈয়দ নাজমুল হোসেন ও ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের রাজিবুল ইসলাম। তারা দুজনই ৩৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারের সংগঠক এবং জুবায়েরের বন্ধু।
হামলার শিকার শিক্ষার্থীরা বলেন, রোববার মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ এবং সার্বিক অবস্থা দেখতে আমরা দু’জন আদালতে যাই। আদালতের ভিতরেই আসামিরা আমাদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘তোরা আন্দোলন করতেছস ভালো কথা, কিন্তু মনে রাখিস আমাদের ফাঁসি না হইলে আরো কয়েকটা লাশ পড়বে’।
সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হলে আদালত প্রাঙ্গণের বাইরে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে হত্যা মামলার আসামি প্রাণিবিদ্যা বিভাগের আশিকুল ইসলাম, জাহিদ হাসান, খান মো. রইছ, দর্শন বিভাগের ইসতিয়াক মেহবুব, মো. রাশেদুর ইসলাম রাজু, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের মাহবুব আকরাম ও প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিভাগের নাজমুস সাকিব তপু রাজিবুল ইসলামকে মারধর করে। এ সময় নাজমুল হোসেন এগিয়ে এলে তাকেও মারধর করে আসামিরা।
পরে মারধর থেকে রক্ষা পেতে রাজিবুল ও নাজমুল দৌড়ে পাবলিক প্রসিকিউটর রফিকুল ইসলামের শরণাপন্ন হন।
তারা বলেন, মামলার সাক্ষী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আজীম উদ্দিনের সাথে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়িতে ক্যাম্পাসে ফেরার কথা থাকলেও মারধরের সময় আজীম গাড়ির দরজা খোলেননি বরং আমাদের ফেলে সে চলে আসে।
জুবায়ের হত্যাসহ পূর্বেও আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা রয়েছে। এ ঘটনায় ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে আন্দোলনকারী ও শিক্ষার্থীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
এ বিষয়ে জানার জন্য আজীম উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায় মামলার অধিকাংশ আসামির। তবে এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেছেন ইশতিয়াক মেহবুব।
প্রক্টর মোহা. মুজিবুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। ঘটনাটি ক্যাম্পাসের বাহিরে হওয়ায় তাদের থানায় যেতে বলেছি। ক্যাম্পাসের ভিতরে আমার কিছু করার থাকলে আমি অবশ্যই করব।
২০১২ সালের ৮ জানুয়ারি জুবায়ের আহমেদ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের হামলার শিকার হয়ে ৯ জানুয়ারি রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ৩৭তম ব্যাচের ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন। এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা হামিদুর রহমান বাদী হয়ে ১৩ জনকে আসামি করে আশুলিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০১৪
সম্পাদনা: এম জে ফেরদৌস, নিউজরুম এডিটর