ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

বুধবার থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি, শঙ্কায় মেধাবীরা

আব্দুল্লাহ আল নোমান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৮ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০১৪
বুধবার থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি, শঙ্কায় মেধাবীরা

সিলেট: এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্তির পরও পছন্দের প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছে মেধাবী শিক্ষার্থীরা। ভালো মানের কলেজে আসন সংখ্যা কম হওয়ায় ভর্তি নিয়ে যেনো যুদ্ধেই নামতে হয় তাদের।

  বুধবার শুরু হচ্ছে মাধ্যমিকের গন্ডি পেরোনো শিক্ষার্থীদের উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে ভর্তি।

সিলেট মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড থেকে এ বছর ৩ হাজার ৩৪১ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ ও ১৬ হাজার ৬৯৪ জন ‘এ’ গ্রেড পেয়েছে। ‘এ’ মাইনাস গ্রেডে ১৪ হাজার ৩৬২ জন, ‘বি’ গ্রেডে ১৩ হাজার ৭২৩ জন, ‘সি’ গ্রেডে ১২ হাজার ও ডি গ্রেডে ৬৩০ জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে।

এছাড়া মাদরাসা বোর্ড থেকে দাখিলে ১ হাজারের মতো শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। জিপিএ-৫ ও ৪ প্রাপ্ত এসব শিক্ষার্থীর মধ্যে অর্ধেকের বেশি শিক্ষার্থী পছন্দের কলেজে ভর্তির সুযোগ পাবে না।

১৭ এপ্রিল প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, ২ হাজার ৮২০ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়ে সর্বাধিক ভালো ফলাফল করেছে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এ বিভাগে ভর্তির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকায় সবসময় থাকে এমসি কলেজ, সরকারি মহিলা কলেজ, সিলেট সরকারি কলেজ, ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং স্কলার্স হোম।

এসব কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে আসন রয়েছে দেড় হাজারের মতো। ফলে অনেক মেধাবী ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও এসব কলেজে ভর্তি হতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন সিলেটের শীর্ষ কলেজগুলোর অধ্যক্ষরা।

সিলেট শহরে সরকারি কলেজগুলোতে আসন রয়েছে ৩ হাজার ৭০০টি। সিলেট সরকারি কলেজে মোট আসন রয়েছে ৯০০টি। এর মধ্যে বিজ্ঞান, মানবিক এবং ব্যবসায় শিক্ষার প্রত্যেকটি বিভাগে ৩০০ জন করে শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পাবে।
 
সরকারি মহিলা কলেজে মোট আসন রয়েছে ৮৫০টি। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে ৫০০ জন এবং মানবিক বিভাগে ৩৫০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পাবে। কলেজটিতে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের কার্যক্রম চালু নেই।

মদনমোহন সরকারি কলেজে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ১ হাজার ৫০০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পাবে।
অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কলেজে আসন রয়েছে ৩০০টি। এখানে বিজ্ঞান বিভাগে ১৫০ জন ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ১৫০ জন শিক্ষার্থীর ভর্তির সুযোগ রয়েছে।

এছাড়া স্কলারস হোমে তিন বিভাগ মিলিয়ে ৬০০, জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৯০০ জন শিক্ষার্থীর ভর্তির সুযোগ রয়েছে।

জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের প্রথম পছন্দ সিলেট এমসি কলেজ হলেও এখানে আসন সংখ্যা ৩০০। ফলে এ সীমিত আসনে মেধাবী অনেক শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পাবে না।

ছাত্রীদের পছন্দের তালিকায় থাকা আরেকটি কলেজেরে নাম সিলেট সরকারি মহিলা কলেজ। এখানেও আসন সংখ্যা সীমিত থাকায় ভর্তির সুযোগ পাবে না অনেকেই।

এ প্রসঙ্গে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নজরুল হক বলেন, সিলেটে বেসরকারি মহিলা কলেজসহ বেশ কয়েকটি কলেজের মধ্যে বেশিরভাগ এখানে পড়তে আগ্রহী। কিন্তু আসন কম থাকায় সবাইকে ভর্তি করা সম্ভব হবে না।
 
ভালো প্রতিষ্ঠান গড়ে না ওঠায় এটি এখন বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে স্কলারস হোমের অধ্যক্ষ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) জুবায়ের সিদ্দিকী বলেন, এ সমস্যার সমাধানে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে কর্তৃপক্ষের এগিয়ে আসতে হবে।

এছাড়া শিক্ষক সংকট ও কাঠামো সংকট সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারলে সব প্রতিষ্ঠানেই ভালো শিক্ষা দেওয়া সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।

সিলেটে সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে ভালো মানের কলেজের সংখ্যা ২২টি। এগুলোতে সর্বোচ্চ ১৭ হাজারের মতো আসন রয়েছে।

সরকারি ছাড়াও চার জেলায় বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৯৩ হাজার ৮৭৫টি আসন রয়েছে। এবছর পরীক্ষায় পাস করেছে ৬০ হাজার ৭৫০ জন শিক্ষার্থী।

সে হিসেবে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী সবাই ভর্তির সুযোগ পেলেও পর্যাপ্ত আসন না থাকায় মেধাবী শিক্ষার্থীরা তাদের কাঙ্খিত প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবে না।

যারাও বা ভর্তির সুযোগ পাবে তাদের মুখোমুখি হতে হবে ভর্তিযুদ্ধের লড়াইয়ে।

বুধবার থেকে শুরু হওয়া ভর্তি ‍যুদ্ধে শুধু জিপিএ-৫ প্রাপ্তরাই নয় ‘এ’ গ্রেডে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরাও ভালো মানের প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবে না।

শেষ পর্যন্ত এসব শিক্ষার্থীদের শরণাপন্ন হতে হবে নগরীর আনাচে কানাচে গড়ে ওঠা বিভিন্ন প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানগুলোর। যদিও এসব কলেজের পড়াশুনার মান নিয়ে সবসময়ই প্রশ্ন রয়েছে অভিভাবকসহ সচেতন মহলের।

সৈয়দ হাতিম আলী স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী তাসনুবা বলেন, আমার সাফল্যে পরিবারের সবাই খুশি। কিন্তু ভালো রেজাল্ট করা শিক্ষার্থীদের সংখ্যাও কম নয়। তাই পছন্দের কলেজে এমসিতে ভর্তি হতে পারব কি না তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।

বাংলাদেশ সময়: ১২১৭ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।