সিলেট: ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপিঠ মুরারী চাঁদ (এমসি) কলেজের শিক্ষক সংকট কাটছে না কিছুতেই। ১৩৮টি পদের বিপরীতে বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন ১০৬জন শিক্ষক।
এ সমস্যা সমাধানে মন্ত্রণালয়কে বার বার তাগিদ দিয়েও প্রতিকার মিলছে না। দীর্ঘদিন থেকে নতুন শিক্ষক নিয়োগ না দেওয়ায় কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বাংলানিউজকে এমনটাই জানালেন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর নিতাই চন্দ্র চন্দ।
১৮৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত এই কলেজে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিনে বর্তমানে ১৫টি বিষয়ে স্নাতক অনার্স ও স্নাতকোত্তর মাস্টার্স এবং ডিগ্রি পাস কোর্স চালু রয়েছে। এছাড়া সিলেট শিক্ষা বোর্ডের অধিনে উচ্চ মাধ্যমিকের বিজ্ঞান বিভাগের পাঠদানও দেওয়া হয়। এসব কোর্সে বর্তমানে প্রায় ১২হাজার শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত আছেন।
কলেজ অধ্যক্ষের কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী- ১৫টি বিভাগে অধ্যাপক, প্রভাষক ও সহকারী শিক্ষকসহ মোট ১৩৮টি পদ রয়েছে। এর মধ্যে শিক্ষক আছেন ১০৬জন। অধিকাংশ বিভাগেই একাধিক পদ শূন্য রয়েছে। এসব শূন্য পদের মধ্যে ৬টি অধ্যাপক, প্রভাষক ১৪টি, সহকারী ও প্রদর্শক শিক্ষকের ৮টি পদ রয়েছে। এ অবস্থায় কলেজের ১২হাজার শিক্ষার্থীর পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। আর এই কারণে অ্যাকাডেমিক পাঠদানে অনেকটা হিমশিম খেতে হচ্ছে সংশ্লিষ্ঠদের।
শূন্য পদের মধ্যে বাংলা বিভাগের শিক্ষকদের ৮টি পদের মধ্যে ৩টি প্রভাষকের পদ শূন্য রয়েছে, ইংরেজী বিভাগে ৮টির মধ্যে একটি অধ্যাপক ও দুটি প্রভাষকের পদসহ মোট ৩টি, বাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ১২টি পদের মধ্যে একটি প্রভাষক পদ, দর্শন বিভাগে ৭টি পদের মধ্যে একটি অধ্যাপক পদ, আররি ও ইসলাম শিক্ষা বিভাগের ৪টি পদের মধ্যে একটি সহকারী শিক্ষকের পদ, উর্দু বিষয়ের জন্য একটি প্রভাষকের পদ, ইসলামের ইতিহাস বিভাগের ৪টি পদের মধ্যে একটি প্রভাষকের পদ, সংস্কৃতি বিষয়ের জন্য একটি প্রভাষকের পদ শূন্য রয়েছে।
এছাড়া মনোবিজ্ঞানে ৪টি শিক্ষক পদের মধ্যে একটি প্রভাষক পদ, পদার্থ বিজ্ঞানে একটি অধ্যাপক, একটি প্রভাষক ও ২টি প্রদর্শক শিক্ষকসহ মোট ৪টি পদ, রসায়ন বিজ্ঞান বিভাগের ১২টি পদের মধ্যে একটি প্রভাষক ও ২টি প্রদর্শক শিক্ষকসহ মোট ৩টি পদ, প্রাণীবিজ্ঞান বিভাগে ৮টির মধ্যে একটি অধ্যাপক, একটি প্রভাষক ও একটি সহকারী শিক্ষকসহ মোট ৩টি পদ, উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগে ১২টি পদের মধ্যে ২টি প্রদর্শক শিক্ষকের পদ, গণিত বিভাগে ১২টি পদের মধ্যে একটি অধ্যাপকের পদ, পরিসংখ্যান বিভাগে ৪টি পদের মধ্যে একটি অধ্যাপকের পদ এবং একটি গ্রন্থাগারিকের পদ শূন্য রয়েছে।
তবে শূন্য পদ নেই এমন বিভাগও রয়েছে। অর্থনীতি এবং সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সব পদ পূর্ণ রয়েছে।
বদলি সংক্রান্ত কারণ ছাড়াও শূন্য এসব পদে নতুন করে নিয়োগ না হওয়ায় এমন অবস্থার সৃষ্ঠি হয়েছে। এতে করে শিক্ষা কার্যক্রমে এক ধরনের অচলাবস্থা চলে এসেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ঠ বিভাগীয় প্রধানরা।
এ ব্যাপারে কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর নিতাই চন্দ্র চন্দ বাংলানিউজকে বলেন- দীর্ঘদিন থেকে নতুন শিক্ষক নিয়োগ না দেওয়ায় এসব পদ শূন্য রয়েছে। এ সমস্যার সমাধানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বার বার তাগিদ দিয়েও কোন প্রতিকার মিলছে না। আর এতে কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
তাই শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে দ্রুত শূন্য এসব পদে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ঘন্টা, ২৫জুন, ২০১৪