ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের শীর্ষ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্নাতক ভর্তিতে ভর্তি পরীক্ষার নম্বরের সঙ্গে স্কোর যোগ করে মেধাতালিকা তৈরি করলেও নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) মনে করছে এবার এই স্কোরিং নিয়ে প্রশ্ন উঠবে।
উচ্চ মাধ্যমিকের প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ উঠার পর উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তিতে একটি পক্ষ সুবিধা পাবে- এ আশঙ্কায় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যদের সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদও মনে করছে স্কোরিং উঠিয়ে দেওয়া উচিৎ।
চলতি বছর অনুষ্ঠিত উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষায় বেশ কয়েকটি বিষয়ের প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ উঠে। প্রমাণ পাওয়ায় ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের ইংরেজি দ্বিতীয়পত্র স্থগিত করে নতুনভাবে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে।
তবে রসায়ন, পদার্থসহ বেশ কয়েকটি বিষয়ের প্রশ্ন ফাঁসের প্রমাণ পাওয়া গেলেও তা বাতিল হয়নি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভর্তি পরীক্ষার নম্বরের সঙ্গে এসএসসি এবং এইচএসসির প্রাপ্ত নম্বরের সঙ্গে ৪ ও ৬ গুণ দিয়ে মেধাতালিকা তৈরি করে থাকে।
স্কোরিংয়ে ১০০ নম্বরের মধ্যে এইচএসসিরই ৬০ নম্বর গণনা করা হয়।
এবার প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগের মুখে এইচএসসির নম্বর যোগ কতটা যৌক্তিক- প্রশ্নের জবাবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক মো. রুহুল আমীন বাংলানিউজকে বলেন, এ প্রেক্ষাপটে স্কোরিংয়ের বিষয়টি এবার গুরুত্বপূর্ণ।
দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রুহুল আমীন বলেন, ঈদের পর আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি কমিটির মিটিংয়ে বিষয়টি উত্থাপন করে লিখিত পরীক্ষায় নম্বর বাড়িয়ে দেওয়ার প্রস্তাব করা হবে।
অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকেও ভর্তি পরীক্ষায় নম্বর বাড়িয়ে দেওয়ার ব্যাপারে অনুরোধ করা হবে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভাপতি।
প্রশ্ন ফাঁসে ভালো ফল উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে মেধা তালিকা তৈরিতে প্রভাব ফেলবে-এ আশঙ্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিযুদ্ধে শুধু ভর্তি পরীক্ষায় প্রাপ্ত ফলকেই প্রাধান্য দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন শিক্ষার্থী-অভিভাবক-শিক্ষাবিদেরা।
তারা বলছেন, এখনই এ বিষয়ে সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
পাশাপাশি সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার দাবি উঠলে দুই একটি প্রতিষ্ঠান রাজি হলেও অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় এতে সম্মত হয়নি।
এইচএসসির প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগের পর ভর্তি পরীক্ষার বাইরে স্কোরিং প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে বলে মনে করেন ইউজিসি চেয়ারম্যান এ কে আজাদ।
মেধা তালিকা তৈরির সময় স্কোর কমিয়ে দিলে প্রভাব পড়বে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, এক্ষেত্রে ভর্তি পরীক্ষায় বেশি নম্বর হতে পারে।
এ কে আজাদ বলেন, সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি বাস্তবায়ন করতে চাইলেও কিছু বিশ্ববিদ্যালয় রাজি না হওয়ায় জটিলতা তৈরি হয়েছে।
এদিকে আবেদনের জন্য ন্যূনতম যোগ্যতা নির্ধারণ করা হলেও বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ভর্তির ক্ষেত্রে এসএসসি ও এইচএসসির নম্বর যোগ হয় না।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ৪০ নম্বর স্কোর থাকলেও গত শিক্ষাবর্ষ থেকে তা তুলে দেওয়া হয়েছে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. চৌধুরী সারওয়ার জাহান সজল বাংলানিউজকে বলেন, সবাইকে একই মাপকাঠিতে নিয়ে এসে ভর্তি করানোর জন্য স্কোর তুলে দেওয়া হয়েছে। এতে শতভাগ মেধায় ভর্তি করা যাবে।
পত্র-পত্রিকায় প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টি এবার আলোচিত ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিতে স্কোরিং তুলে দেওয়া উচিৎ।
** বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি: প্রশ্ন ফাঁসে ‘ফেঁসে’ যাবে মেধাবীরা
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৭ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১৪