ঢাকা: নম্বর বাড়িয়ে বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা ২০০ নম্বরে নিতে বিধিমালা সংশোধন করে তা চূড়ান্ত করেছে সরকার। সংশোধিত বিধিমালায় এক ঘণ্টার স্থলে দুই ঘণ্টা প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
‘বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বয়স, যোগ্যতা ও সরাসরি নিয়োগের জন্য পরীক্ষা) বিধিমালা, ২০১৪’ আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং শেষে রোববার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে এসেছে ।
সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বাংলানিউজকে জানান, সংশোধিত বিধিমালা অনুযায়ী প্রিলিমিনারি পরীক্ষার আবেদনপত্রের মূল্য ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭০০ টাকা করা হয়েছে।
তবে প্রতিবন্ধী ও সুবিধাবঞ্চিত তথা অনগ্রসর অধিবাসীদের জন্য ২৫০ টাকা থেকে কমিয়ে আবেদনপত্রের মূল্য ১০০ টাকা করা হয়েছে। লিখিত পরীক্ষায় পাস নম্বর গড়ে ৫০ শতাংশ থাকলেও মৌখিক পরীক্ষায় ৪০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করা হয়েছে। লিখিত পরীক্ষায় ৩০ নম্বরের কম পেলে প্রার্থী কোনো নম্বর পাননি বলে গণ্য হবে, আগে যা ছিল ২৫ শতাংশ।
আগের মতো একটি ভুল প্রশ্নের জন্য দশমিক ৫০ নম্বর কাটা হবে। আর ৩৫তম বিসিএস থেকেই এ নতুন নিয়মে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। বয়স, যোগ্যতাসহ আর কোনো মৌলিক পরিবর্তন আনা হয়নি বলে জানান তারা। আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিংয়ের পর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব সোমবার বিধিমালায় সই করেছেন। বিধির সারসংক্ষেপ অনুমোদনের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দপ্তরে রয়েছে।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী সই করলে অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হবে। এরপর আগামী সপ্তাহে প্রজ্ঞাপন জারি করা হতে পারে।
পিএসসির একজন সদস্য বাংলানিউজকে বলেন, বিধিমালার প্রজ্ঞাপনের পরপরই তারা ৩৫তম বিসিএসের বিজ্ঞাপন প্রকাশ করবে।
এর আগে সরকারি কর্ম কমিশন ‘দ্য বাংলোদেশ সিভিল সার্ভিস (এইজ, কোয়ালিফিকেশন, অ্যান্ড এক্সামিনেশন ফর ডিরেক্ট রিক্রটমেন্ট) রুলস, ১৯৮২’ সংশোধনের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়।
‘বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বয়স, যোগ্যতা ও সরাসরি নিয়োগের জন্য পরীক্ষা) বিধিমালা, ২০১৪’ খসড়া প্রস্তাব পাঠায় পিএসসি।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বলছে, বিধিমালা আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগে পাঠালে সংবিধানের সপ্তম সংশোধনী মামলায় সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক সামরিক শাসনামলে প্রণীত অধ্যাদেশ, ফরমান ইত্যাদি অবৈধ ও অকার্যকর ঘোষণা করা হয়েছে মর্মে বিবেচ্য রুলস নতুন করে প্রণয়ন হবে মর্মে মতামত প্রদান করেছে।
এমসিকিউ পরীক্ষা পদ্ধতি, বিভিন্ন ক্যাডারের পদের নাম পরিবর্তনসহ কিছু বিষয়ে পরিবর্তন আনার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পরামর্শ করে চূড়ান্ত করার অনুরোধ করে পিএসসি।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা করে মতামত নিয়ে নিয়োগবিধি পরীক্ষণ সংক্রান্ত উপকমিটি কিছু বিষয় সংশোধন করে প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটিতে পাঠায়।
গত ১১ মে সচিব কমিটি অনুমোদন দিলে সংবিধানের ১৪০ (২) অনুচ্ছেদের বিধান মোতাবেক সুপারিশ করার জন্য পিএসসিকে অনুরোধ করা হলে ৩ জুন পুনরায় সুপারিশ করে পাঠায় পিএসসি।
সর্বশেষ ৩৪তম বিসিএসে ২ হাজার ৫২টি পদের বিপরীতে ২ লাখ ২১ হাজার ৫৭৫ জন প্রার্থী প্রিলিমিনারির ফরম পূরণ করে। আর ৪৬ হাজার ২৫০ জন লিখিত পরীক্ষার জন্য উত্তীর্ণ হন।
প্রিলিতে পাসের সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় লিখিত পরীক্ষার সূচি নির্ধারণ, কেন্দ্র বরাদ্দ, খাতা মূল্যায়নসহ নানা সমস্যা তৈরী হয়।
জনপ্রশাসন ও পিএসসির কর্মকর্তারা বলেন, প্রিলিমিনারিতে নম্বর বেড়েছে যাতে লিখিত পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীর চাপ কমে আসবে। মেধাবীরাই পরীক্ষায় টিকে থাকবে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব (বিধি-৫) হাবিব মো. হালিমুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, প্রিলিমিনারিতে নম্বর ও সময় বাড়ানো ছাড়া মৌলিক কোনো পরিবর্তন হয়নি।
আনুষ্ঠানিকতা শেষে আগামী সপ্তাহে বিধিমালাটি প্রজ্ঞাপন আকারে জারি হতে পারে বলে জানান হালিমুজ্জামান।
দশম জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক জানান, ৩৫তম বিসিএসে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগ দেওয়া হবে এক হাজার ৭৪৯ জন কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪২ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৪