ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

শিক্ষা আইনের খসড়া চূড়ান্ত

প্রশ্ন ফাঁসের সাজা ১০ বছর জেল

ইসমাইল হোসেন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১৪
প্রশ্ন ফাঁসের সাজা ১০ বছর জেল ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: প্রশ্ন ফাঁসে সর্বোচ্চ শাস্তি ১০ বছর কারাদণ্ডের বিধান রেখে শিক্ষা আইনের খসড়া চূড়ান্ত করছে সরকার।
 
উচ্চ মাধ্যমিকসহ পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের পর শিক্ষা আইনে প্রশ্ন ফাঁস ও শাস্তির বিষয়ে একটি ধারা যোগ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।


 
কয়েক মাস আগে শিক্ষা আইনের খসড়া চূড়ান্ত করে পাঠানো হলেও কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়ে ফেরত পাঠায় মন্ত্রিসভা।
 
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মতামত নিয়ে চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে আইনের উপর একটি কর্মশালা করে বিশিষ্টজনদের মতামত সংযুক্ত করে মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হবে।    
 
এর আগে মতামতের জন্য আইনের খসড়াটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দেয়া হয়েছিল।
 
‘জাতীয় শিক্ষানীতি, ২০১০’ এর আলোকে এক বছর আগে শিক্ষা আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

প্রণীত খসড়ায় শিক্ষার বিভিন্ন বিষয়ে ৬৫টি ধারাসহ একাধিক উপধারা সন্নিবেশিত রয়েছে।
 
আইনে শিক্ষার্থীদের শারীরিক শাস্তি না দেয়া, ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোর জন্য সুনির্দিষ্ট বিধান, মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়নসহ বিভিন্ন বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
 
এছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতিকে ন্যূনতম স্নাতক পাস হবে হবে বলেও বলা ছিল।
 
আইনটির খসড়া মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হলেও মন্ত্রিসভা কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়ে ফেরত পাঠায়।
 
সর্বশেষ আইনটি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মতামতের জন্য রয়েছে।
 
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (অডিট ও আইন) রফিকুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, মন্ত্রিসভা কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়েছিল।
 
স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় জনবল নিয়োগ সংক্রান্ত আর্থিক বিষয় সংশ্লিষ্ট থাকার কারণে অর্থ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের লিখিত অনুমোদন নেয়া হয়েছে। এছাড়াও ধর্ম মন্ত্রণালয় মতামত দিয়েছে।
 
আগে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মতামত নেয়া হলেও সরকার পরিবর্তনে নতুন মন্ত্রী আসায় আবারো মতামতের জন্য রয়েছে। এরপর একটি কর্মশালা করে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক করে মন্ত্রিসভায় উপস্থাপনের জন্য পাঠানো হবে।
 
চলতি বছরে এইচএসসি পরীক্ষায় ঢাকা বোর্ডের ইংরেজী দ্বিতীয়পত্র এবং গণিত দ্বিতীয়পত্রের প্রশ্ন ফাঁসের পর শিক্ষাবিদ ও বিশিষ্টজনরা শিক্ষা আইনে প্রশ্ন ফাঁসে কঠোর সাজার বিষয়টি অন্তর্ভুক্তের দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
 
ইংরেজী দ্বিতীয়পত্রের প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সোহরাব হোসেইনের নেতৃত্বে গঠিত সরকারের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটিও প্রশ্ন ফাঁসের সাজা বাড়ানোর সুপারিশ করেছিল।
 
বর্তমানে প্রশ্ন ফাঁসে সাজার বিষয়ে একটি আইন থাকলেও তাত সাজা যথেষ্ট নয়।
 
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া ওই প্রতিবেদনের ১০ ধারার ১৫.১.২২ অনুচ্ছেদে সুপারিশ করা হয়, ‘দ্য পাবলিক ইক্সামিনেশনস (অফেন্স) ১৯৮০ (অ্যামেন্ড ১৯৯২) আইনে বর্ণিত শাস্তির মাত্রা বাড়িয়ে কঠোরভাবে তা প্রয়োগ ও ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা করা যায়। ’ 
 
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, প্রশ্ন ফাঁস ও এ বিষয়ে শাস্তি সংশ্লিষ্ট একটি ধারা শিক্ষা আইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
 
“শিক্ষা আইনে ১০ বছরের সাজার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। ”
 
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এর আগে বাংলানিউজকে বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনুদানের বিষয়টি থাকায় আইনটির জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের মতামত নেয়া হয়।
 
শিক্ষা আইনে সাজার বিষয়টি থাকায় পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস রোধ করা যাবে বলে মনে করেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা।
 
আর খুব শিগগিরই আইনটি মন্ত্রিসভায় উপস্থাপনের জন্য পাঠানো হবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৯০৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।