ঢাকা: উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষায় এবার গড় পাসের হার ৭৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ। সারাদেশে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭০ হাজার ৬০২ জন।
এবার গত বছরের তুলনায় গড় পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে।
বুধবার সকাল ১০টায় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বিভিন্ন বোর্ডের চেয়ারম্যানদের নিয়ে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ফলাফলের অনুলিপি হস্তান্তর করেন।
বেলা একটায় শিক্ষামন্ত্রী সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ফলের বিস্তারিত তুলে ধরেন। তবে এসময় প্রশ্নফাঁসের বিষয়টি অস্বীকার করে মন্ত্রী বলেন, সার্বিকভাবে ফলাফল ভালো হয়েছে।
এবার ঢাকা শিক্ষাবোর্ডে পাসের হার ৮৪দশমিক ৫৪ শতাংশ, চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে পাসের হার ৭০ দশমিক ৬ শতাংশ, রাজশাহীতে পাসের হার ৭৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ, কুমিল্লায় ৭০ দশমিক ১৪ শতাংশ, সিলেটে ৭৯ দশমিক ১৬ শতাংশ, বরিশালে ৭১ দশমিক ৭৫ শতাংশ, দিনাজপুরে ৭৪ দশমিক ১৪ শতাংশ এবং যশোর শিক্ষাবোর্ডে পাসের হার ৬০ দশমিক ৮৫ শতাংশ।
অন্যদিকে মাদ্রাসা বোর্ডে পাসের হার ৯৪ দশমিক ০৮ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬ হাজার ২৫ জন। কারিগরি বোর্ডে ৮৫ দশমিক ২ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে।
এবার পূর্ণ জিপিএ (জিপিএ-৫) পাওয়া শিক্ষার্থীর মধ্যে ৮ সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে ৫৭ হাজার ৭৮৯ জন, মাদ্রাসা বোর্ডে ৬ হাজার ২৫ জন ও কারিগরি বোর্ডে ৬ হাজার ৩৯৩ জন।
ছেলেদের মধ্যে পাসের হার ৭৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ। জিপিএ-৫ প্রাপ্তের সংখ্যা ৩৮ হাজার ৭৮৭ জন।
মেয়েদের মধ্যে পাসের হার ৭৮ দশমিক ৮৬ শতাংশ। জিপিএ-৫ প্রাপ্তের সংখ্যা ৩১ হাজার ৮১৫ জন।
শতভাগ পাস করেছে এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা এক হাজার ১৪৭টি। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাসের হার ৮২ দশমিক ৯৩ শতাংশ।
গত বছর গড় পাশের হার ছিলো ৭৪ দশমিক ৩০ শতাংশ। আর জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করে ৫৮ হাজার ১৯৭ শিক্ষার্থী।
গত বছরের তুলনায় এবার পাসের হার বেড়েছে ৪ দশমিক ০৩ শতাংশ।
একই সঙ্গে এবার জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের সংখ্যাও বেড়েছে ১২ হাজার ৪০৫ জন। এবছর জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭০ হাজার ৬০২ জন। যা গত বছর ছিল ৫৮ হাজার ১৯৭।
এর আগে গত ২০১২ সালে এইচএসসিতে ৮ সাধারণ বোর্ডসহ ১০ বোর্ডে গড় পাসের হার ছিল ৭৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
এবার এইচএসসিতে আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার বেড়ে হয়েছে ৭৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ। গত বছর এ হার ছিল ৭১ দশমিক ১৩ শতাংশ।
গত বছরের মতো এবারো মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডে পাসের হার সর্বোচ্চ।
এ বোর্ডে পাসের হার ৯৪ দশমিক ০৮ শতাংশ। যা গতবার ছিল ৯১ দশমিক ৪৬ শতাংশে।
ঢাকা বোর্ডের অধীন ডিআইবিএস-এ (ডিপ্লোমা ইন বিজনেস স্টাডিজ) পাসের হার ৭৮ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
এদিকে গত তিন বছরের মতো এবারও ঢাকা বোর্ডসহ সারাদেশে সেরা হয়েছে রাজধানীর রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ।
দ্বিতীয় অবস্থানে আছে নরসিংদীর আব্দুল কাদের মোল্লা সিটি কলেজ এবং তৃতীয় হয়েছে ঢাকা সেনানিবাসে অবস্থিত আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ।
বিগত কয়েক বছর ধরে এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষা শেষের ৬০ দিনের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ করা হচ্ছে। এবার ৫৮ দিনে ফল প্রকাশ হলো।
গত ৩ এপ্রিল সারা দেশে একযোগে এইচএসসি, আলিম ও এইচএসসি (বিএম/ভোকেশনাল) ও ডিআইবিএস পরীক্ষা শুরু হয়। যা গত ৮ জুন শেষ হয়।
এতে ১১ লাখ ৪১ হাজার ৩৭৪ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেন।
এরমধ্যে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ ওঠায় ৯ এপ্রিলের অনুষ্ঠ্যেয় এইচএসসি ও ডিআইবিএসের (ডিপ্লোমা ইন বিজনেস স্টাডিস) ইংরেজি দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। পরে ৮ জুন নতুন সূচি নির্ধারণ করে স্থগিত হওয়া পরীক্ষা নেওয়া হয়।
তবে গণিতসহ আরও কয়েকটি বিষয়ের প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ উঠলেও সরকারের পক্ষ থেকে তা নাকচ করে দেওয়া হয়।
এ বছর বাংলা প্রথম পত্র, রসায়ন, পৌরনীতি, ব্যবসায় নীতি ও প্রয়োগ, জীববিজ্ঞান, পদার্থবিদ্যা, ইতিহাস, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, হিসাববিজ্ঞান, ব্যবসায় উদ্যোগ ও ব্যবহারিক ব্যবস্থাপনা, সমাজবিজ্ঞান, সমাজকল্যাণ এবং কম্পিউটার শিক্ষা প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রসহ ২৫টি পত্রে সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে।
ইন্টারনেটে ফল
পরীক্ষার্থীরা শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট www.educationboardresults.gov.bd এবং সংশ্লিষ্ট বোর্ডের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ফল সংগ্রহ করতে পারবেন।
মোবাইলে ফল
যে কোনো মোবাইল থেকে এসএমএসের মাধ্যমে ফল পেতে মেসেজ অপশনে গিয়ে HSC অথবা Alim লিখে স্পেস দিয়ে শিক্ষা বোর্ডের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে পাসের সাল লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে।
উদাহরণ: সাধারণ বোর্ডের জন্য HSC Dha 123456 2014, মাদ্রাসা বোর্ডের জন্য Alim Mad 123456 2014 এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের জন্য HSC Tec 123456 লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে।
পুনঃনিরীক্ষণ
পুনঃনিরীক্ষণের জন্য এসএমএসের মাধ্যমে ১৪ আগস্ট থেকে ২০ আগস্টর পর্যন্ত আবেদন গ্রহণ করা হবে।
এজন্য শুধু টেলিটক মোবাইল থেকে মেসেজ অপশনে গিয়ে RSC লিখে স্পেস দিয়ে শিক্ষা বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে বিষয় কোড লিখে স্পেস দিয়ে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে।
প্রতিটি বিষয় বা পত্রের জন্য ১৫০ টাকা ফি প্রযোজ্য।
ফিরতি এসএমএসে আবেদন ফি বাবদ কত টাকা কেটে নেওয়া হবে তা জানিয়ে একটি পিন নম্বর দেওয়া হবে। আবেদনে সম্মত থাকলে মেসেজ অপশনে গিয়ে RSC লিখে স্পেস দিয়ে YES লিখে স্পেস দিয়ে পিন নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে মোবাইল নম্বর দিয়ে পূণরায় ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে।
যেসব বিষয়ের দুটি পত্র (যেমন: বাংলা ও ইংরেজি) রয়েছে, সেসব বিষয়ে একটি বিষয় কোডের বিপরীতে আবেদন দুটি পত্রের আবেদন হিসেবে বিবেচিত হবে এবং আবেদন ফি ৩০০ টাকা ফি নেওয়া হবে।
একই এসএমএসে একাধিক বিষয়ের আবেদন করা যাবে, এক্ষেত্রে বিষয় কোড পর্যায়ক্রমে কমা দিয়ে লিখতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১০২৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১৪/আপডেট: ১৮৪৮ ঘণ্টা
** সিলেট বোর্ডে পাসের হার ৭৯.১৬
** চতুর্থবারের মতো দেশসেরা রাজউক উত্তরা
** কুমিল্লায় পাসের হার ৭০.১৪
** মৌলভীবাজার পাসের হার ৭৭.৭৮
** এইচএসসিতে সুনামগঞ্জে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৪৫ জন
** চট্টগ্রাম বোর্ডে পাশের হার ৭০.০৬ শতাংশ
** বরিশাল বোর্ডে পাসের হার ৭১.৭৫
** ভোলায় এইচএসসিতে পাসের হার ৬৭.২০
** আজ এইচএসসি পরীক্ষার ফল