ব্রাহ্মণবাড়িয়া: শুধুমাত্র স্কুল পর্যায়ে পাঠদানের অনুমতি থাকলেও কলেজ নাম ব্যবহার করা হচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।
সম্প্রতি স্বঘোষিত এসব কলেজের সাইনবোর্ড থেকে কলেজ শব্দ মুছে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে জেলা শিক্ষা কার্যালয়।
তবে সংশ্লিষ্টরা এসবের তোয়াক্কা করছে না। তারা সাইন বোর্ডে দিব্যি কলেজ শব্দটি ব্যবহার করে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে প্রতারণা করছে।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, পৌর এলাকার অক্সফোর্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজ, পিপলস স্ট্যান্ডার্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজ, নকশী বাংলা স্কুল অ্যান্ড কলেজ, স্কলারস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ক্রিয়েটিভ স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মডার্ন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, উইজডম স্কুল অ্যান্ড কলেজ, প্রেসিডেন্সি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কবি আল মাহমুদ স্কুল অ্যান্ড কলেজ নামে প্রতিষ্ঠানগুলোর কলেজ পর্যায়ে পাঠদানের কোনো অনুমতি নেই। এজন্য সংশ্লিষ্টদের চিঠি দিয়ে কলেজ নাম মুছে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, কলেজ নাম ব্যবহার না করার নির্দেশনা দেওয়া হলেও তা মানা হচ্ছে না। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের পাঠদান ও পরিবেশগত অবস্থাও নাজুক।
জানা গেছে, এমপিওভুক্ত না হওয়ায় এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অন্য কোনো স্কুল থেকে এসএসসি, জেএসসির মতো পাবলিক পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। ফলাফলও খুব একটা সন্তোষজনক নয়। তারপরও প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভর্তি ও টিউশন ফি নেওয়া হচ্ছে অধিক হারে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, একেকটি প্রতিষ্ঠানে প্লে গ্রুপ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত প্রতি মাসের টিউশন ফি নেওয়া হয় তিনশ’ থেকে সাতশ’ টাকা করে। ভর্তি ফি নির্ধারণ করা আছে দুই থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত। আবাসিক শিক্ষার্থীদের প্রতিমাসে সব মিলিয়ে খরচ দিতে হয় আট থেকে ১০ হাজার টাকা।
উইজডম স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক ছাত্র মো. গোলাম কিবরিয়া দুর্জয় জানায়, আবাসিক ছাত্র হিসেবে প্রতি মাসে আট হাজার টাকার মতো দিতে হতো তার অভিভাবককে। কিন্তু এতো টাকা দিয়ে পড়ানো সম্ভব নয় বলে গেল বছর তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি করানো হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র দুর্জয় শহরের কাউতলী এলাকার মো. আসাদুল্লাহর ছেলে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাউতলীর একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, স্কুলের পাঠদানের অনুমতি নিয়ে কলেজ নাম লেখা খুবই অন্যায়। কর্তৃপক্ষ চিঠি দেওয়ার পরও কলেজ নাম না মুছে সংশ্লিষ্টরা আরো বেশি অন্যায় করছেন। প্রশাসনের উচিৎ এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. ছানাউল হক বলেন, কাগজে-কলমে আমরা স্কুল নামই ব্যবহার করছি। তবে পুরনো দুই/একটি বিজ্ঞাপনে সেটি থাকতে পারে।
তিনি আরো বলেন, জেলা শিক্ষা অফিস থেকে দেওয়া চিঠির ব্যাপারে পরিচালনা কমিটিকে জানিয়েছি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী সলিম উল্লাহ বলেন, মূলত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের আকর্ষণ করতেই স্কুলের সঙ্গে কলেজের নাম জুড়ে দেওয়া হয়। আমরা এ ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিঠি দিয়ে কলেজ নাম বাদ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০১৪