ঢাকা: শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে গিয়ে দীর্ঘ তিন ঘণ্টা মন্ত্রী, সচিব, অধিদফতর ও সংস্থা প্রধানদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনে দিক-নির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি।
কাজের গতি আনতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করছেন সরকার প্রধান। এরই ধারাবাহিকতায় সকাল সাড়ে ১০টায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আসেন প্রধানমন্ত্রী।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় প্রথমে স্বাগত বক্তব্য দেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। শিক্ষামন্ত্রী বিগত পাঁচ বছরে মন্ত্রণালয়ের অর্জন এবং আগামী পরিকল্পনা তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী সকলের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন।
মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানান, সবার উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে খোলামেলা আলোচনায় অংশ নেন।
শিক্ষাসচিব মোহাম্মদ সাদিক নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আগামী দিনের পরিকল্পনা প্রজেক্টরের মাধ্যমে সরকার প্রধানের কাছে তুলে তুলে ধরেন। একে একে বিভিন্ন অধিদফতর, সংস্থা, বোর্ডের প্রধানের কাছে তাদের কাজ সম্পর্কে জানতে চান প্রধানমন্ত্রী। তারা প্রধানমন্ত্রীর সামনে তাদের লক্ষ্য ও পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন।
মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশনজট কমাতে গুরুত্ব দেন।
এজন্য প্রধানমন্ত্রী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভূক্ত কলেজগুলোকে বিভাগভিত্তিক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আনার তাগিদ দেন।
কারিগরি শিক্ষার ওপরও জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী প্রতি উপজেলায় একটি করে কারিগরি স্কুল প্রতিষ্ঠার তাগিদ দিয়েছেন। আর জেলায় জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের নির্দেশ দেন। সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়, যেমন- কৃষিসহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় করার নির্দেশ দেন।
এসব বিশ্ববিদ্যালয় সরকারি-বেসরকারি কিংবা যৌথ উদ্যোগে করার ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাতে শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ এলাকায় পড়াশোনা করতে পারে, সে ব্যবস্থা নিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বিভাগভিত্তিক ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপন করার তাগিদ দেন। বর্তমানে তিনটি বিভাগে এমন কলেজ রয়েছে বলেও সভায় জানানো হয়।
আরবি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় দ্রুত স্থাপন, রাঙ্গামাটিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা দ্রুততম সময়ের মধ্যে করার তাগিদও দিয়েছেন শেখ হাসিনা। নিজস্ব আর্কিটেকচার দিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপন কার্যক্রমের ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেন ভূমির কোনো ক্ষতি না হয়, সেভাবে স্থাপন করতে হবে।
বছরের শুরুতে বই প্রদান, নির্ধারিত তারিখে ক্লাস-পরীক্ষা শুরু, ফলাফল প্রকাশ এবং পাসের হারের প্রশংসা করেন শেখ হাসিনা।
তবে শিক্ষার সর্বোচ্চ মানোন্নয়নের ওপরও জোর দেন প্রধানমন্ত্রী।
নিজ কলেজ আজিমপুর কলেজ সরকারিকরণের অগ্রগতি সম্পর্কে রসিকতার ছলে বার বার মন্ত্রীর কাছে জানতে চান শেখ হাসিনা। শিক্ষামন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে জানান, অর্ডার হয়ে গেছে, কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
আন্তঃশিক্ষা সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান তাসলিমা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিশেষায়িত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনসহ আমাদের পরিকল্পনাগুলোকে এগিয়ে নিয়ে যেতে বলেছেন।
এজন্য সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে তিনি বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা দেন।
মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শিক্ষাখাতের অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে কারো কথায় থেমে না থেকে মন্ত্রীকে পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন।
** এমপিও ভূক্তিতে তদবির নয়: প্রধানমন্ত্রী
** পড়াশোনার বাইরে কেউ থাকতে পারবে না
** প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে সুফল পাচ্ছে জনগণ
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০১৪