ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

ঢাবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচন

নীল-সাদার দৌড়ঝাঁপ

সাখাওয়াত আমিন, ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৪
নীল-সাদার দৌড়ঝাঁপ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে চলছে শেষ মুহুর্তের প্রচারণা।   বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

নির্বাচনে ১ হাজার ৯০০ শিক্ষক নির্বাচিত করবেন ১৫ সদস্যের কার্যকরী পরিষদ।

নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে আওয়ামী লীগ সমর্থিত শিক্ষকদের সংগঠন নীল দল এবং বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত সাদা দলের দুটি আলাদা প্যানেল।

সংখ্যাগরিষ্ঠতার ব্যাপারে নীল দল অনেকটা এগিয়ে থাকলেও সহ-সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক পদে জিততে তাদের বহু কাঠখড় পোড়াতে হবে। অন্যদিকে সাদা দল এ দুটি পদকে টার্গেট করেই চালিয়েছে তাদের প্রচারণা। উভয় দলের কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই আভাস পাওয়া গেছে।

সাধারণ সম্পাদক পদে নীল দল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আর্থ এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অনুষদের ডিন এবং শিক্ষক সমিতির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল। সাদা দল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন স্যার পিজে হার্টগ ইন্টারন্যাশনাল হলের প্রভোস্ট এবং বর্তমান কার্যকরী পরিষদের অন্যতম সদস্য অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্যানেল ভোটার নীল দলে বেশি। তাই অধ্যাপক মাকসুদ কামাল কিছুটা সুবিধা পাবেন। অন্যদিকে সাদা দলের শিক্ষক হলেও জনপ্রিয়তার দিকে থেকে এগিয়ে রয়েছেন অধ্যাপক লুৎফর রহমান। তাছাড়া বিরোধীদল সমর্থক হলেও এ সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত সবগুলো শিক্ষক নির্বাচনেই তিনি শিক্ষক সমিতির কার্যকরী পরিষদে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি সিন্ডিকেট ও সিনেটেরও সদস্য।

অন্যদিকে সহ-সভাপতি পদ নিয়েও চলছে নানা হিসাব-নিকাশ। এ পদে নীল দল থেকে মনোনীত করা হয়েছে ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. হাসিবুর রশীদকে। তিনি সিনেট ও ফাইনান্স কমিটিরও অন্যতম সদস্য এবাং সাদা দল থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এবং বর্তমান কার্যকরী পরিষদের অন্যতম সদস্য ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম।
এক্ষেত্রেও জনপ্রিয়তার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন সাদা দল সমর্থিত অধ্যাপক ওবায়দুল ইসলাম। তিনি এর আগে দুইবার করে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এবং যুগ্ম সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন।

নীল দলের ভোটার বেশি হলেও অধ্যাপক হাসিবুর রশীদের ইমেজ সাধারণ শিক্ষকদের কাছে ততটা উজ্জল নয়। সেক্ষেত্রে সাদা দল সমর্থিত প্রার্থীকে হারাতে হলে তাকে অনেক বেগ পেতে হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
সহ-সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক পদে জিততে নীল দলের শিক্ষকরা তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন বলেও জানান নীল দলেরই কয়েক জন শিক্ষক।

সভাপতি পদে নীল দলের প্রার্থী অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। তিনি শিক্ষক সমিতির গত দুইবারের নির্বাচিত সভাপতি। তাছাড়া সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন, সিনেট, সিন্ডিকেটসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদেও রয়েছেন তিনি। জনপ্রিয়তার দিক থেকে তিনি সাদা দলের সভাপতি প্রার্থী ড. মো. আখতার হোসেন খানের চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

কার্যকরী পরিষদের অন্যান্য পদের জন্যও অনেক হিসেব কষে প্রার্থী দিয়েছে নীল দল। কোষাধ্যক্ষ পদে লড়বেন বাণিজ্য অনুষদের ডিন এবং ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনসিওরেন্স বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলি রুবাইতুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক পদে রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক এবং সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক মো. আফতাব আলী শেখ।

সাদা দলের কোষাধ্যক্ষ পদে লড়বেন মার্কেটিং এর অধ্যাপক ড. এ বি এম শহিদুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক পদে পালি ও বুদ্ধিস্ট স্টাডিস বিভাগের অধ্যাপক ড. দিলীপ কুমার বড়ুয়া।
তবে শিক্ষকদের সার্বিক কল্যাণে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন উভয় দলই।

শিক্ষক সমিতির ২০১৪ সালের কার্যকরী পরিষদের নির্বাচনে নীল দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে মোট ১৫টি পদের মধ্যে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ নয়টি পদেই জয়ী হয় তারা। সাদা দল ছয়টি পদে বিজয়ী হয়।

এছাড়া ২০১৩ সালের নির্বাচনে নীল দল আটটি এবং সাদা দল সাতটি পদে নির্বাচিত হয়েছিল।

এদিকে শিক্ষক সমিতির নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক শফিক উজ জামান বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচনের সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে এ নির্বাচনের ভোটগ্রহন অনুষ্ঠিত হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।