ঢাকা, সোমবার, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ জুলাই ২০২৪, ২৩ জিলহজ ১৪৪৫

শিক্ষা

শুক্র-শনি পরীক্ষার পক্ষে প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০১৫
শুক্র-শনি পরীক্ষার পক্ষে প্রধানমন্ত্রী ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: হরতালের কারণে সময়সূচি পরিবর্তন করে সপ্তাহে দুই দিন করে এসএসসি পরীক্ষা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, ‘ছেলেমেয়েরা যখন মানসিকভাবে প্রস্তুতি নেয় যে, আমি আজ পরীক্ষা দেবো- তারপর পরীক্ষার সময় পরিবর্তন হলে একটু ধাক্কা লাগে, একটু অনিশ্চয়তার মধ্যে চলে যায়।

যে কারণে আবারও যখন হরতাল দিলো তখন আমি সাথে সাথে শিক্ষামন্ত্রীকে বলে দিয়েছি- কোন কোন দিন পরীক্ষা আছে, সপ্তাহে দুইটা পরীক্ষা করে আগেভাগেই পরিবর্তন করে দেন। অন্ততপক্ষে তারা যেন ভালোভাবে পরীক্ষা দিতে পারে। ’

রোববার (৮ ফেব্রুয়ারি) ধর্মমন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে তিন এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ সপ্তাহে দুটি পরীক্ষা ছিলো- আমরা তা শুক্রবার, শনিবার করে দিয়েছি। জামায়াত বিএনপি ধর্মের নামে ব্যবসা করে বেড়ায়, এদের তো কোন বিশ্বাস নেই। হয়তো দেখা গেলো শুক্রবারেও আবার হরতাল দিয়ে দেবে কিনা কে জানে। যাই হোক আমরা এটুকুই চাই, আল্লাহ এদের সুমতি দিক। ’

বিএনপি জামায়াতের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘এরা মানুষ পুড়িয়ে মারা বন্ধ করুক। আর এসএসসি পরীক্ষার সময় হরতাল অবরোধ বন্ধ করুক, যেন ছেলেমেয়েরা ভালোভাবে পড়াশুনা করতে পারে। অন্তত সেভাবে তারা পদক্ষেপ নেবে এটা আশা করি। ’

খালেদা জিয়া ও বিএনপি উন্মাদ হয়ে গেছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এরা তো মানুষ না, এরা তো উন্মাদ হয়ে গেছে। আমার তো মনে হয় বিএনপি নেত্রী বোধ হয় উন্মাদই হয়ে গেছেন। নইলে বাড়িঘর ছেড়ে দিয়ে তিনি অফিসে বসে কোন বিপ্লব ঘটাচ্ছেন সেটা আমার বোধগম্য না। কিন্তু মানুষ খুন করছেন এটাতো সকলেই দেখতে পাচ্ছেন। ’

তিনি বলেন, ‘ছোট্ট শিশুদেরও আগুনে পুড়িয়ে মারছে। আমাদের পরীক্ষার্থী শিশুদেরতো এত ঝুঁকির মধ্যে পাঠাতে পারি না। কাজেই আমরা সময়ের সঙ্গে মিলিয়ে আবার নতুন রুটিন করে দিচ্ছি। ’

এসএসসি পরীক্ষার মধ্যে হরতাল অবরোধের কড়া সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি জানি না বিএনপি নেত্রীর কি উদ্দেশ্য। মানুষ লেখাপড়া করুক, মানুষের মতো মানুষ হোক, উচ্চশিক্ষিত হোক এটা বোধ হয় উনি চান না। শিবির আর জামায়াতও আবার হরতাল ডাকে। লেখাপড়া শিখলে মানুষের সচেতনতা বাড়বে। তারা যে মানুষকে বিভ্রান্ত করে সে বিভ্রান্তির হাত থেকে মানুষ মুক্তি পাবে। সে জন্যই তারা এদেশের মানুষকে শিক্ষিত হতে দিতে চায় না। এটাই বোধ হয় তাদের উদ্দেশ্য। ’

তিনি বলেন, ‘আমরা ১ জানুয়ারি বই দিচ্ছি। ২ ফেব্রুয়ারি থেকে এসএসসি পরীক্ষা। এরপর মার্চ মাসে যেয়ে এইচএসসি পরীক্ষা। অর্থাৎ সব কিছু যখন আমরা নিয়মের মধ্যে নিয়ে এসেছি। কি দুভার্গ্য আমাদের, সে সময় হঠাৎ হরতাল অবরোধ। পুরো মাসব্যাপীতো অবরোধ আছেই। আবার অবরোধের মধ্যে হরতাল। মরার ওপর খাড়ার ঘা যাকে বলে।

লাশের ওপর দিয়ে ক্ষমতায় যেতে চান কেন? বিএনপি নেত্রীর উদ্দেশ্যে এমন প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এরা (বিএনপি-জামায়াত) ক্ষমতায় ছিলো। আবার ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখে। কিন্তু সেই ক্ষমতায় যাওয়া মানুষের লাশের ওপর দিয়ে কেন? যদি ক্ষমতায় যেতে হয় গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন খালেদা জিয়া। কিন্তু তার খেসারত জাতি কেন দেবে? মানুষকে পুড়িয়ে মেরে সেই লাশের ওপর পাড়া দিয়ে উনি ক্ষমতায় যাবেন এটা কোন ধরনের বিবেচনা।

দিনের পর দিন মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে বিএনপি কি অর্জন করতে চায় প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ নিরীহ মানুষ পুড়িয়ে বিএনপি-জামায়াত কি অর্জন করছে? কতগুলো মানুষকে পঙ্গু করে দেয়া, হাজার হাজার গাড়ি ঘোড়া পুড়িয়ে দেয়া। জনগণের সম্পদ ধ্বংস করা। এই ধ্বংস করা, মানুষ পুড়িয়ে মারা, মানুষকে পঙ্গু করে দেয়া ছাড়া আর কোন অর্জনতো তাদের নেই। কিন্তু দেশের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নের কাজ করে যাচ্ছি, সেটা ব্যহত হচ্ছে। ’

এ সময় ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকালীন সহিংসতার কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

মানুষ পুড়িয়ে মারা ও কোরআন শরীফ আগুনে পোড়ানোর জন্য বিএনপি-জামায়াতের ধর্ম বিশ্বাসের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা শত শত কোরান শরীফ পুড়িয়েছে। যারা মসজিদে আগুন দেয়, কোরআন পোড়ায় তারা আর যাই হোক আদৌ কোন ধর্মে বিশ্বাস করে কি না সেটাই সন্দেহ। ’

ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষায় সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে আমরা মানুষ। ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার।

ধর্মীয় শিক্ষা ছাড়া  কোন শিক্ষা পূর্ণাঙ্গ হয় না মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা নীতিমালায় ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করার কথা তুলে ধরেন।

যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ার পাশাপাশি ইসলাম ধর্মের প্রচার ও প্রসারে বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ১৯৭৫ পর যারা ক্ষমতায় এসেছিলো তারা ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করেছে। তারা অন্য ধর্মাবলম্বীদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন করেছে।

বিগত বিএনপি-জামায়াত আমলে অন্য ধর্মাবলম্বীদের ওপর অত্যাচার নির্যাতনের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

এ সময় ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, সচিব চৌধুরী মোহাম্মদ বাবুল হাসানসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।