ঢাকা, সোমবার, ২১ আশ্বিন ১৪৩১, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৩ রবিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

বিদ্যালয় নির্মাণ নিয়ে দুই মন্ত্রণালয়ে দ্বিমত

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯০৪ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০১৫
বিদ্যালয় নির্মাণ নিয়ে দুই মন্ত্রণালয়ে দ্বিমত

ঢাকা: শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে নতুন জাতীয়করণকৃত দুই হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজের দায়িত্ব বণ্টন নিয়ে দ্বিমত পোষণ করেছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় এবং  প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
 
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, বিদ্যালয় নির্মাণের কাজ গণপূর্ত অধিদপ্তরকে  (পিডব্লউডি)  দেওয়া যেতে পারে।



অন্যদিকে এলজিইডি এই কাজ করলে মান অনেকাংশে ভালো হবে বলে মনে করছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ করে আসছে।

তবে তৃতীয় প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির (পিইডিপি) আওতায় দেশব্যাপী যে পরিমাণ কাজ করতে হচ্ছে এতে এলজিইডির পক্ষে নতুন কোনো প্রকল্পের দায়িত্ব নেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে।
 
এতে প্রকল্প বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়বে বলেও মনে করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, এসব বিবেচনায় এ পর্যায়ে গণপূর্ত অধিদপ্তর (পিডব্লউডি) প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ করলে যথাযথ হবে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, নতুন জাতীয়করণ প্রাথমিক বিদ্যালয় পুনঃনির্মাণ, বিদ্যালয়গুলোতে উন্নতমানের আসবাবপত্রও সরবরাহ করা হবে। যাতে খুদে শিক্ষার্থীরা লেখা-পড়ার মনোরম পরিবেশ পায়।

এর মাধ্যমে প্রাথমিকে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা শূন্যের কোঠায় নেমে আসবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করছে মন্ত্রণালয়।
 
নতুন জাতীয়করণকৃত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পুনঃনির্মাণ প্রকল্পের আওতায় সারাদেশে কাজটি বাস্তবায়ন করা হবে। এতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৮৭৩ কোটি ৪১ লাখ টাকা।

সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে চলতি বছরের মার্চ থেকে ২০১৮ সালের জুন নাগাদ দেশব্যাপী প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রস্তাবিত প্রকল্পের সব কিছু ঠিকঠাক করা হয়েছে। তবে দুই হাজার বিদ্যালয় কে নির্মাণ করবে? এলজিইডি না পিডব্লিউডি-এই নিয়ে টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছে।
 
অন্যদিকে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পের আওতায় এখনও বিদ্যালয়ের তালিকা প্রকল্প উন্নয়ন পরিকল্পনায় (ডিপিপি) যোগ করা হয়নি।

সূত্রটি বলছে, প্রস্তাবিত প্রকল্পের নির্মাণ কাজ গ্রাম পর্যায়ে ও উপজেলা পর্যায়ে হবে। ওই পর্যায়ে গণপূর্ত অধিদপ্তরের কার্যালয় ও প্রয়োজনীয় জনবল নেই।

এছাড়া গ্রামে এলজিইডি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণে অভিজ্ঞ। কাজেই এই প্রকল্পে বিদ্যালয়গুলো এলজিইডি নির্মাণ করলেই ভালো হবে।
 
এলজিইডি ও পিডব্লিউডিকে কাজ দেওয়া প্রসঙ্গে টানাপোড়েনের বিষয়টি স্বীকার করেছেন পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক এবং ভৌত অবকাঠামো বিভাগের প্রধান শামছুন নাহারও।

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, এলজিইডি ও পিডব্লিউডি-কে বিদ্যালয় নির্মাণ কাজ দেওয়া নিয়ে আমাদের মধ্যে টানাপোড়েন চলছে।

‘আমরা মনে করি দুই হাজার বিদ্যালয় নির্মাণ কাজ এলজিইডিকে দিলে অনেক ভালো হবে। কারণ উপজেলা পর্যায়েও প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ করা হবে কিন্তু উপজেলা পর্যায়ে পিডব্লিউডির কোনো জনবল নেই। এমনকি উপজেলা পর্যায়ে তাদের কোনো অফিসও নেই’- বলেন শামছুন নাহার।

তবে পরিকল্পনা কমিশনের এই সিদ্ধান্তে দ্বিমত পোষণ করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। পিডব্লিউডি-কে দুই হাজার বিদ্যালয় নির্মাণ কাজ দেওয়ার বিষয়ে এখনও অনড় এ মন্ত্রণালয়।  

বাংলাদেশ সময়: ০৯০০ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।