জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: ক্লাস শুরুর দুই দিনের মাথায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের দুই শিক্ষার্থী র্যাগিং-এর শিকার হয়েছেন। সিনিয়রদের শিক্ষার্থীদের কাছে অতিরিক্ত মানসিক নির্যাতনের ফলে ওই দুই শিক্ষার্থী বিভাগেই অজ্ঞান হয়ে পড়েন।
সোমবার (৩০ মার্চ) দুপুরে ভূগোল ও পরিবেশ এবং বাংলা বিভাগে এ ঘটনা ঘটে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, সোমবার দুপুরে সিনিয়র শিক্ষার্থীদের দ্বারা অতিরিক্ত মানসিক নির্যাতনের কারণে ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ইশতিয়াক ও বাংলা বিভাগের মাসুদ অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এরপর মেডিক্যাল সেন্টারে নেওয়া হলে সেখানে তারা বমি করেন। পরে মেডিক্যাল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাদের সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শ্যামল কুমার শীল বলেন, অতিরিক্ত মানসিক নির্যাতনের কারণে দুইজন শিক্ষার্থী অজ্ঞান হয়ে পড়ে। একাধিকবার বমিও করেছে তারা। গুরুতর হওয়ায় সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন র্যাগিং এর বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, র্যাগিং একটি জঘন্য সামাজিক ব্যাধি। এই ঘৃণ্য আচরণ দ্বারা ব্যক্তির অপূরণীয় শারীরিক-মানসিক ক্ষতি হতে পারে। র্যাগিং নাগরিক অধিকার পরিপন্থি, বেআইনি ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এছাড়া দৈহিক/মানসিক পীড়ন, যে কোনো ধরনের অশোভন আচরণ, কারো অধিকারে হস্তক্ষেপ/কর্তব্যকর্ম থেকে বিরত রাখার চেষ্টা/মত প্রকাশে বাধাদান, জোরপূর্বক কোনো রাজনৈতিক মতবাদে বিশ্বাসী করা এবং রাজনৈতিক সংগঠনে যুক্ত হতে বাধ্য করা, কারো সামাজিক/মানবিক মর্যাদাহানিকর কর্মকাণ্ড, চাঁদাবাজি, মুক্তিপণ, ঘুষ বা যেকোনো ধরনের আর্থিক অনাচার, বলপ্রয়োগ, আইনের দৃষ্টিতে অন্যান্য অপরাধ র্যাগিং হিসেবে গণ্য হবে।
কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানিয়েছেন, র্যাগিং এর সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা অধ্যাদেশ অনুযায়ী আজীবন বহিষ্কারসহ কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে। এছাড়াও অভিযুক্ত ব্যক্তিকে রাষ্ট্রীয় আইনের আওতায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে সোপর্দ করা হবে। একই সঙ্গে কর্তৃপক্ষ অভিযোগকারীর নাম গোপন রাখারও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহা বলেন, আমি এখনও ঘটনাটি জানি না। তবে ঘটনাটি শোনার জন্য মেডিক্যাল সেন্টারে এসেছি। বিষয়টি জেনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০১ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৫