ঢাকা: বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রদের জন্যে একমাত্র বিশেষায়িত কলেজে ভর্তি হচ্ছে বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষার্থী। সম্প্রতি প্রকাশিত কলেজ ভর্তির ফলাফলে যে বিশৃঙ্খলতা দেখা যায়, সেখানে সরকারি বিজ্ঞান কলেজে ভর্তির জন্যে বাণিজ্যের ২০০ ছাত্রকে বাছাই করা হয়।
গত ২৯ জুন মধ্যরাতে প্রকাশিত কলেজ ভর্তির ফলাফল নিয়ে শুরু থেকেই ভুলত্রুটি ধরা পড়ে। এর মধ্যে অন্যতম আলোচিত হয়ে ওঠে সরকারি বিজ্ঞান কলেজে বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়টি।
১৯৫৪ সালে টেকনিক্যাল হাইস্কুল নামে যাত্রা শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। ১৯৬২ সালে ইন্টারমেডিয়েট টেকনিক্যাল কলেজ হিসেবে পুনঃনামকরণ করা হয়। ১৯৮৫ সালে বিএসসি কোর্স চালুর মাধ্যমে সরকারি বিজ্ঞান কলেজ হিসেবে কার্যক্রম শুরু করে। এরপর থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্যে বিশেষায়িত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এটি।
কলেজটির কাঠামোতেও বিজ্ঞান বিভাগের পড়াশোনার দিকটি গুরুত্বের সঙ্গে রয়েছে। এখানে বিশেষ পরীক্ষাগার ও যন্ত্রপাতি রয়েছে শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে। তবে বাণিজ্য বিভাগের কোনো শিক্ষকও নেই এখানে।
রোববার (৫ জুলাই) রাজধানীর ফার্মগেটে অবস্থিত কলেজটিতে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, এখানে রয়েছে স্কুল পর্যায়ের শিক্ষাও। তবে সবই বিজ্ঞান বিভাগ কেন্দ্রিক। মাধ্যমিকে পাস করা শিক্ষার্থীদের এ কলেজেই উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা। তবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সংযুক্ত স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা যায়নি।
স্কুল শাখা থেকে জিপিএ-৫ পেয়েও ভর্তি হতে পারেনি এমন কয়েকজন ছাত্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বাংলানিউজকে বলেছে, এটা সত্যিই আজব! সরকারি বিজ্ঞান কলেজে আমরা বিজ্ঞানের ছাত্ররা ভর্তি হতে পারিনি। অথচ বাণিজ্যের ছাত্র ভর্তি করা হচ্ছে।
কলেজ সূত্র জানায়, কলেজটিতে মোট আসন রয়েছে ৫৫০টি। বর্তমানে একজন বাণিজ্যের শিক্ষকও নেই এখানে। নেই কোনো অবকাঠামো। এ বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ ঢাকা শিক্ষাবোর্ড ও মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে তখনই যোগাযোগ করে। তবে মন্ত্রণালয় নিজেদের ভুল সংশোধনের বদলে এড়িয়ে যায়। কলেজটিকে বাণিজ্যের ছাত্র ভর্তি করতে বলা হয়।
সরকারি বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান সোমবার (৬ জুলাই) বাংলানিউজকে বলেন, আমাদেরকে ২০০ বাণিজ্যের শিক্ষার্থী ভর্তি করতে বলা হয়েছে। এরই মধ্যে একশ’ ছাত্র ভর্তি হয়েছে।
তিনি বলেন, এখনো আমাদের কলেজে বাণিজ্যের ছাত্র পড়ানোর মতো অবকাঠামো বা শিক্ষক নেই। তবে মন্ত্রণালয় বলছে, ভর্তি করিয়ে নিতে। সমস্যা হবে না। পরে শিক্ষক নিয়োগ ও অন্যান্য সুবিধা দেওয়া হবে।
এদিকে কলেজ সূত্র বলছে, মন্ত্রণালয়ের কথা অনুযায়ী কলেজ ভর্তি করাতে চাইলেও যেসব শিক্ষার্থী সেখানে সুযোগ পেয়েছে তাদের অনেকে ভর্তি হতে চাইছে না। বরং বিকল্প মাধ্যম খুঁজছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের সূত্রমতে, পূর্ব প্রস্তুতি ছাড়াই প্রায় সাড়ে ১১ লাখ ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীকে একসঙ্গে সব কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির কাজ অনলাইনে করতে গিয়ে এবার বিপাকে পড়ে বোর্ড। এসব ভুল ভ্রান্তির বিষয়ে এরই মধ্যে গত ২৮ জুন নিজের দোষ স্বীকার করে নিয়েছেন শিক্ষা সচিব নজরুল ইসলাম খান।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৮ ঘণ্টা, জুলাই ০৬, ২০১৫
এমএন/এএসআর
** একাদশে ভর্তির দ্বিতীয় তালিকা যেকোনো সময়