জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলে ছাত্রলীগের একপক্ষের নেতা-কর্মীরা রাতের আঁধারে নিজ সংগঠনের এক কর্মীকে রামদা,রড ও লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করেছে।
এ ঘটনার বিচার চেয়ে উপাচার্য বরাবর আবেদনপত্র জমা দিয়েছে অপরপক্ষের ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
বুধবার(২১ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৫টায় উপাচার্য বরাবর তারা এই আবেদনপত্র জমা দেয়। মঙ্গলবার মধ্যরাতে হলের বি-ব্লকের ২৬০ নম্বর কক্ষে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা জানায়, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ৩৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মী আব্দুল্লাহ আল-মামুন এর উপর হামলা চালায় একই হলের জুনিয়র ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। মধ্যরাতে শাখা ছাত্রলীগের উপ-তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আব্দুর রহিম জুয়েলের নেতৃত্বে তার অনুসারী ৮/৯ জন ছাত্রলীগ কর্মী মামুনের রুমে যায় এবং তাকে হল ছাড়ার নির্দেশ দেয়। এ সময় বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে লোহার রড, পাইপ ও রামদা দিয়ে মামুনের উপর হামলা চালায়। পরে আহত অবস্থায় মামুনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নেয়া হয়।
সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে সাভারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হামলাকারীরা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহমেদের অনুসারী বলে পরিচিত।
এদিকে ঘটনার বিচার চেয়ে বুধবার বিকেলে সাড়ে ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম বরাবর আবেদনপত্র জমা দেয় ঐ হলের অপরপক্ষের নেতা-কর্মীরা।
স্মারকলিপিতে তারা হামলাকারী হিসেবে ছাত্রলীগের উপ-তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আব্দুর রহিম জুয়েল, রবিউল ইসলাম, বনি আলম, মো. বখতিয়ার রিফাত, দেবাশীষ বিশ্বাস, সৈয়দ লায়েব আলী, আদনান সৌম্য, আজমাইন ফায়েক স্বপ্নীল, আবু হাসানের নাম উল্লেখ করেন।
তারা বলেন, ‘এরা চিহ্নিত সন্ত্রাসী, একাধিক মামলার আসামি এবং চাঁদাবাজির মত বহু বিষয়ে এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। আমরা মীর মশাররফ হোসেন হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা অতি দ্রুত এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার এবং হলের নিরাপত্তা ও নিরাপদে হলে অবস্থানের নিশ্চয়তা চাই। ’
লিখিত অভিযোগে শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তানভীর আহম্মেদ সোহাগ, সহ-সভাপতি রাহাত করিম, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মহিতোষ রায় টিটু ও উপ-সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক মো. বশিরুল হক সাক্ষর করেন। এরা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুর রহমানের অনুসারী বলে পরিচিত।
আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ষড়যন্ত্র করে একটি পক্ষ আমাকে মারধর করেছে।
আব্দুর রহিম জুয়েল বলেন, মামুন ছাত্রদল করে। হলে ভিতর ‘গুটি চালে’। তাই ওকে মারধর করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহমেদ বলেন, এই ঘটনায় যদি ছাত্রলীগের কেউ জড়িত থাকে তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহা বলেন, ‘উপাচার্য অসুস্থ থাকায় আমি অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করেছি। তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০১৫
আরআই