রাবি: আমরা একই অঞ্চলে বাস করি। সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হলে এক সঙ্গে কাজ করা গুরুত্বপূর্ণ।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী নাট্যোৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ শরণ এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, এ নাট্যোৎসব আমাদের জন্য উৎসাহব্যঞ্জক। এটি শুধু নাটকের উৎসব নয়। এটি ভ্রাতৃত্ব, মনুষ্যত্ব ও বন্ধুত্বের উৎসব। আগামীতে এ ধরনের উৎসব আরো হতে পারে।
জাতির বিকাশ ও উন্নয়নে সংস্কৃতির গুরুত্ব উল্লেখ করে পঙ্কজ শরণ বলেন, যে জাতি সংস্কৃতি, শিল্পকলার প্রতি সম্মান দেখায় না তারা কখনো সামনে এগিয়ে যেতে পারে না। তাই আমাদের সংস্কৃতির চর্চা করতে হবে।
ভারতীয় হাইকমিশনার আরো বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এ দেশের যুবশক্তি কয়েক বছরের মধ্যে বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। বাংলাদেশ ও ভারতের উন্নয়নের জন্য দুই দেশের বন্ধন আরো দৃঢ় করতে হবে।
‘মিলি মৈত্রী বন্ধনে গড়ি সংস্কৃতির সেতু’ -এই স্লোগানকে সামনে রেখে বুধবার (২৮ অক্টোবর) শুরু হয়েছে আট দিনব্যাপী বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী নাট্যোৎসব।
সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ক্ষমতায় থাকলে বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশ হয়। অন্য দিতে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তি ক্ষমতায় থাকলে জঙ্গিবাদের উত্থান হয়। বর্তমানে উন্নয়ন হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, উন্নয়নের মধ্যে বসে থাকলে উন্নয়ন বোঝা যায় না।
আসাদুজ্জামান নূর আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশিদের রক্তের সঙ্গে ভারতীয়দের রক্ত একই স্রোতধারায় মিশে গেছে। এ রক্তের ঋণ ভোলা যাবে না। নাট্যোৎসব দুই দেশের মেলবন্ধনে ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানের কথা যেমন ভোলা যাবে না তেমনি যুদ্ধাপরাধীদের কথাও ভোলা যাবে না। তাদের ক্ষমা করা যাবে না। যুদ্ধাপরাধীদের মরদেহ এদেশের মাটিতে সমাহিত হওয়া উচিত নয়। কারণ তারা এদেশের নয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহম্মদ মিজানউদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য প্রফেসর চৌধুরী সারওয়ার জাহান, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, প্রখ্যাত কথা সাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন নাট্যকলা বিভাগের সভাপতি ড. শাহরিয়ার হোসেন। উৎসব কথন পাঠ করেন উৎসবের আহ্বায়ক আরিফ হায়দার।
এর আগে, বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় সঙ্গীতের সঙ্গে দুই দেশের জাতীয় পতাকা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা, অংশগ্রহণকারী আটটি নাট্যদলের পতাকা উত্তোলন করা হয়। এ সময় নৃত্য পরিবেশন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ ইসমাঈল হোসেন সিরাজী ভবনের সামনে নাট্যোৎসবের উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।
নাট্যোৎসবে মোট ১০টি দল অংশগ্রহন করছে। দলগুলো হলো সুন্দরম কলকাতা, নাট্যভূমি ত্রিপুরা, কালিন্দী ব্রাত্যজন কলকাতা, প্রাঙ্গণেমোর ঢাকা, দৃশ্যপট ঢাকা এবং নাট্যকলা বিভাগ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়। উৎসব চার নভেম্বর পর্যন্ত চলবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৫
এমজেড