ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

যৌন কেলেঙ্কারি ও অর্থ আত্মসাত

ঢাবির সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ফের তদন্ত কমিটি গঠন

সাখাওয়াত আমিন, ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৫
ঢাবির সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ফের তদন্ত কমিটি গঠন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: যৌন কেলেঙ্কারি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে বাধ্যতামূলক ছুটিতে আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক এটিএম ফখরুদ্দীন। এ অভিযোগের তদন্তে গঠিত কমিটি যে প্রতিবেদন দিয়েছে তাতে মোটেই সন্তুষ্ট নন ঢাবি কর্তৃপক্ষ।

ফলে আবারও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই কমিটিকে তার ব্যাপারে বিস্তারিতভাবে খোঁজ খবরও নিতে বলা হয়েছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সহিদ আখতার হুসাইনকে।

তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, “ওই শিক্ষকের কার্যকলাপ অনুসন্ধানে একটি অনুসন্ধান (ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং) কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর আরও বিস্তারিতভাবে তার সম্পর্কে খোঁজ নিতে বলা হয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্যকে (প্রশাসন) প্রধান করে নতুন একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। ”

গত ২০ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় এমন সিদ্ধান্ত হয় বলে বাংলানিউজকে জানান একজন সিন্ডিকেট সদস্য।

সেই শিক্ষকের ব্যাপারে বিস্তারিত খোঁজ নেয়ার জন্য যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে সে কমিটি এখনও কাজ শুরু করেনি। কমিটির মধ্যে কতজনকে রাখা হয়েছে তাও জানেন না বলে জানিয়েছেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সহিদ আখতার হুসাইন।

বুধবার (২৮ অক্টোবর) বিকেলে তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, “আমি বিদেশে থাকায় গত সিন্ডিকেট সভায় উপস্থিত থাকতে পারিনি। তবে শুনেছি যে ‍‌আমাকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ”

কমিটির কাজ সম্পর্কে এখনও অবগত নন জানিয়ে তিনি বলেন, “সিন্ডিকেট থেকে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক চিঠি আমি পাইনি। চিঠি পেলে বিস্তারিত বলা যাবে। ”
 
জানা যায়, ২০১২ সালের অক্টোবরে বিশ্ববিদ্যালযের এক ছাত্রীকে নিয়ে উধাও হন অধ্যাপক এটিএম ফখরুদ্দিন। তখন তাকে সেই অভিযোগে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে এ বিষয়ে পাঁচ সদস্যের একটি তথ্য অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়। সে কমিটি গত সিন্ডিকেট সভায় প্রতিবেদন ‍জমা দেন। কমিটির প্রতিবেদনে সন্তুষ্ট না হওয়ার ঢাবি কর্তৃপক্ষ আবারও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। আর সেই কমিটিকে বিস্তারিতভাবে খোঁজ খবর নিয়ে তার ব্যাপারে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

এদিকে চলতি বছরের ৯ এপ্রিল ওই শিক্ষককে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করার দাবি জানিয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন করে তারই বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

সেই সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, বিভিন্ন অনিয়মের পাশাপাশি অধ্যাপক ফখরুদ্দীন বিভাগের একাধিক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার নাম করে তিন থেকে চার লাখ করে টাকা হাতিয়ে নেন। কিন্তু সেই টাকা তিনি আর ফেরত দেননি।

সংবাদ সম্মেলনের আগের দিন অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনে তাকে স্থায়ীভাবে অপসারণের দাবিতে বিভাগের সামনে বিক্ষোভ করে বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনার পর ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক ড. এএম আমজাদ উপস্থিত থেকে ওই শিক্ষকের কক্ষ (৪০২২) সিলগালা করে দেন।

তবে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত অধ্যাপক ফখরুদ্দিন বরাবরই দাবি করে আসছেন যে, তার বিরুদ্ধে বিভাগের সরকার দলীয় শিক্ষকরা ষড়যন্ত্র করছে। যদিও ২০১২ এক ছাত্রীর সঙ্গে কলাভবনে নিজ কক্ষে (৪০২২) ‘কথা বলার’ অপরাধে নিজের ছেলেমেয়েই তাকে ওই ছাত্রীসহ নাজেহাল করেন। পরে ওই ছাত্রীকে নিয়েই উধাও হওয়ার অভিযোগও ওঠে তার বিরুদ্ধে। তারপর তাকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠায় ঢাবি কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৫
এসএ/এমআইকে/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।