জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শতাধিক বছরের পুরনো বিজ্ঞান অনুষদের ভবনগুলো মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ঝুঁকি নিয়েই বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থীরা তাদের ক্লাস চালিয়ে যাচ্ছেন।
ভবনের প্রতিটি রুমের বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। ক্লাস করার সময় শিক্ষার্থীদের ওপর ধসে পড়ছে পলেস্তারা । এছাড়া নষ্ট হচ্ছে ভবনের চার তলায় প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ল্যাবরেটরির প্রায় অর্ধ কোটি টাকার রাসায়নিক দ্রব্য ও যন্ত্রপাতি।
বিভাগের প্রায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী অনেক দিন ধরেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছেন ও পরীক্ষা দিচ্ছেন। এর প্রতিকার চেয়ে গত কয়েক বছরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে তিনবার চিঠি দিয়েছেন তারা। কিন্তু কোনো ধরনের সাড়া দেয়নি কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের মাঝে বাড়ছে ক্ষোভ।
জবি সূত্রে জানা গেছে, আলোচিত রানা প্লাজা ধসের পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদালয়ে কোন কোন ভবন বেশি ঝুঁকিপূর্ণ তা নির্ণয়ের জন্য বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) কয়েকজন বিশেষজ্ঞকে দায়িত্ব দেন। তারা জরিপ চালিয়ে জরিপের প্রতিবেদনও জমা দেন। সেই প্রতিবেদনে চার থেকে পাঁচটি ভবনকে বেশি ঝূঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। তারপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ওই বছরের মে মাসে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোসহ অন্যান্য ভবন সংস্কারে উদ্যোগ নেন । কিন্তু নানা কারণে সেই উদ্যোগ ভেস্তে যায়।
প্রাণিবিদ্যা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রহিম বাংলানিউজকে বলেন, যে কোনো সময় ছাদ ধসে পড়তে পারে। ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও সেই রুমেই বসে ক্লাশ ও পরীক্ষা দিতে বাধ্য হচ্ছি।
ভবনের এমন অবস্থায় প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীদের মাঝে আতংক ও ভয় বিরাজ করছে বলে জানালেন একই বিভাগের ২য় বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী তমাল। তমাল বলেন, ক্লাস করার সময়ে ছাদের পলেস্তারা ধসে পড়তেই থাকে। তবুও আমাদের ক্লাস করতে হয়। সব সময় মনের ভিতরে একটা ভয় কাজ করে। কখন কি হবে আমরা জানি না।
এ বিষয়ে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের মত দুর্ঘটনার সম্ভাবনা অনেকাংশেই বেশি। এর প্রতিকার চেয়েও শিক্ষার্থীরা কোনো সাড়া পাচ্ছেন না।
তবে প্রধান প্রকৌশলী সুকুমার চন্দ্র সাহা বলেন, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ভবন সংস্কার কাজের জন্য টেন্ডার ও ওয়ার্ক অর্ডার প্রক্রিয়াধীন অবস্থায় আছে। সেটা হলেই কাজ শুরু হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সংস্কার কাজের জন্য বরাদ্দ নিয়ে আসা হয়েছে। আশা করা যায় কিছুদিনের মধ্যে এর কাজ শুরু করা যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০১৫
আরআর/এমআইকে/আরআই